Advertisement
০৬ মে ২০২৪

সাত বছরেও জল সমস্যা মেটেনি, ক্ষোভ কুলটিতে

প্রতি বার ভোটের মুখে সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দেন নেতারা। কিন্তু ভোট পেরোলে আবার এক অবস্থা। সাত বছর ধরে জলের সঙ্কটের কোনও সুরাহা হয়নি। এ বার তাই প্রতিবাদের রাস্তা নিয়েছেন এলাকাবাসী। এলাকায় ভোটের প্রচার করতে দেওয়া হবে না কোনও দলকেই, সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কুলটি পুরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের মসজিদ পাড়ার বাসিন্দারা।

শুধু মসজিদপাড়া নয়, জলের সমস্যায় ভোগেন কুলটির নানা এলাকার মানুষ। —নিজস্ব চিত্র।

শুধু মসজিদপাড়া নয়, জলের সমস্যায় ভোগেন কুলটির নানা এলাকার মানুষ। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কুলটি শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৪ ০০:২০
Share: Save:

প্রতি বার ভোটের মুখে সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দেন নেতারা। কিন্তু ভোট পেরোলে আবার এক অবস্থা। সাত বছর ধরে জলের সঙ্কটের কোনও সুরাহা হয়নি। এ বার তাই প্রতিবাদের রাস্তা নিয়েছেন এলাকাবাসী। এলাকায় ভোটের প্রচার করতে দেওয়া হবে না কোনও দলকেই, সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কুলটি পুরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের মসজিদ পাড়ার বাসিন্দারা।

ওই পাড়ায় বাস প্রায় দু’শো পরিবারের। ভোটার রয়েছে আটশোর কাছাকাছি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৪ সালে কুলটি পুরসভার তরফে এখানে পিভিসি পাইপলাইন বসিয়ে জল সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বছর তিনেকের মধ্যে সেই পাইপ ফেটে যায়। ফলে, আবার তীব্র পানীয় জলের সঙ্কট শুরু হয়। বাসিন্দারা পাইপ মেরামতি করে জল সরবরাহ স্বাভাবিক করার দাবি তোলেন। পুরসভার তরফে ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে সেখানে লোহার পাইপলাইন বসানোর জন্য প্রায় সাড়ে চার লক্ষ টাকার একটি দরপত্র ডাকা হয়। কয়েকটি ঠিকাদার সংস্থা সেই কাজ করার জন্য আবেদনপত্রও জমা করেন বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু, ইতিমধ্যে ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ায় পাইপলাইন বসানোর কাজ থমকে যায়। পুরসভার তরফে জানানো হয়, ভোট পেরিয়ে গেলেই কাজ শুরু হবে। কিন্তু লোকসভা ভোট হওয়ার পরেই কুলটি পুরসভার ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়। পুরভোট হওয়ার পরেই কাজ হবে বলে এ বার আশ্বাস দেওয়া হয়। কিন্তু, সেই কাজ এখনও হয়নি।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, দিন-দিন পানীয় জলের সঙ্কট বাড়ছে। প্রতি বছর গরমে বেশ খানিকটা দূর থেকে জল আনতে হয়। তাঁদের দাবি, এলাকার সব কটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের কাছেই এই সমস্যার হাল ফেরাতে বহু বার তদ্বির করা হয়েছে। কিন্তু কেউ কথা কানে তোলেননি। এই অবস্থায় এ বারের লোকসভা ভোটে কোনও দলকেই এলাকায় প্রচার করতে দেবেন না বলে ঠিক করেছেন, জানান তাঁরা। তাঁদের সাফ কথা, এলাকায় জলের সমস্যার সমাধান করলে প্রচার করতে দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে বাসিন্দারা পোস্টার, ফেস্টুন নিয়ে বেশ কয়েক বার বিক্ষোভও দেখিয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আসিফ ইকবাল বলেন, “আমাদের অনেক দূর থেকে জল বয়ে আনতে হয়। আমরা জোটবদ্ধ হয়ে জানিয়ে দিয়েছি, জলের ব্যবস্থা না করে এখানে যেন কেউ ভোট চাইতে না আসেন।” আর এক বাসিন্দা মনোজ যাদবের কথায়, “প্রতি বার ভোটের আগে প্রার্থীরা আসেন, জলের ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়ে চলে যান। কিন্তু কিছুই হয় না। এ বার জলের ব্যবস্থা না করা হলে কাউকে প্রচার করতে দেব না।”

এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিপিএমের দেবানন্দ প্রসাদ দাবি করেন, তাঁরা এখানে পাইপলাইন পাতার জন্য ২০১২ সাল থেকে লাগাতার স্মারকলিপি দিয়ে আসছেন। কিন্তু কোনও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। পুরসভার বিরোধী নেতা সিপিএমের প্রিয়ব্রত সরকারের অভিযোগ, “এই ওয়ার্ডটি থেকে আমরা জিতেছি বলেই পুর কর্তৃপক্ষ এখানে পাইপলাইন বসানোর কাজ করলেন না।” যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পুরপ্রধান তথা তৃণমূল বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, কারিগরি ত্রুটির জন্য এই কাজ করতে দেরি হয়েছে। কিন্তু তা বাতিল হয়নি। তিনি বলেন, “আমি ওই এলাকার বাসিন্দাদের কথা দিয়েছি, সেখানে জলের পাইপলাইন বসানো হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

water crisis kulti
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE