অভিযোগপত্র হাতে প্রশান্ত সরকার। —নিজস্ব চিত্র।
প্রথমে বাড়িতে চড়াও হয়ে ভাঙচুর, পরে ঘরে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়ায় ঘরছাড়া হয়েছে এক সিপিএম পরিবার, সোমবার জেলাশাসকের কাছে এমনই অভিযোগ জানাল সিপিএম।
সিপিএমের অভিযোগ, খণ্ডঘোষের কুলে গ্রামে প্রশান্ত সরকার নামে তাদের এক কর্মীর বাড়িতে শনিবার ভাঙচুর চালায় তৃণমূল। প্রশান্তবাবু বিষয়টি জানিয়ে খণ্ডঘোষ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তবে পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি। এরপরেই রবিবার ফের তৃণমূলের লোকেরা তাঁর বাড়িতে গিয়ে আগুল লাগিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় বলে প্রশান্তবাবুর দাবি। এরপরেই সপরিবারে ঘর ছাড়তে বাধ্য হন তিনি।
জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, “ওই অভিযোগটি সম্পর্কে পুলিশের কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরেই বলতে পারব পুলিশ কেন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।”
সিপিএমের খণ্ডঘোষ জোনাল কমিটির সম্পাদক দেশবন্ধু হাজরা জেলাশাসকের কাছে পেশ করা লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, সিপিএম কর্মীরা যাতে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ওই খণ্ডঘোষ বিধানসভা এলাকায় প্রচার করতে না পারে, তাই তৃণমূলের তরফে নানা জায়গায় হামলা চালানো হচ্ছে। শনিবার প্রশান্তবাবুর বাড়িতে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। তিনি খণ্ডঘোষ থানায় রবিবার এ ব্যাপারে অভিযোগ জানান। পুলিশ অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করলেও, এখনও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এতে উৎসাহিত হয়ে ওই অভিযুক্তেরা রবিবার দুপুর ১২টা নাগাদ ফের প্রশান্তবাবুর বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেয় যে, তিনি যদি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা তুলে না নেন, তাহলে তাঁর বাড়ি পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে দেওয়া হবে। এরপরেই প্রশান্তবাবু সপরিবারে গ্রাম ছাড়তে বাধ্য হন। জেলাশাসককে লেখা চিঠিতে জগবন্ধুবাবুর দাবি, “আমাদের কর্মী যাতে নির্ভয়ে গ্রামে ফিরতে পারেন এবং অভিযুক্তদের যাতে সাজা হয় তার ব্যবস্থা করুন।”
তবে তৃণমূলের খণ্ডঘোষ ব্লকের সভাপতি অলোক মাজি অভিযোগ কার্যত উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “ঘটনাটি সম্পর্কে আমাকে থানা থেকে ফোন করা হয়েছিল। খোঁজ নিয়ে দেখেছি, তেমন কোনও ঘটনাই ঘটেনি।” তাহলে কেন ওই সিপিএম কর্মীকে গ্রামছাড়া হতে হল তা নিয়ে অবশ্য মন্তব্য করতে চাননি তিনি।
জেলা নির্বাচনী বিধিরক্ষা দফতরের আধিকারিক উৎপল বিশ্বাস বলেন, “সিপিএমের গ্রামছাড়া কর্মীদের একটি তালিকা কিছুদিন আগেই হাতে পেয়েছি। তার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আমরা সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখেই ব্যবস্থা নিচ্ছি। এই অভিযোগও খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” খণ্ডঘোষ থানার ওসি বক্তিয়ার হোসেন বলেন, “শনিবারই পুলিশ ওই বাড়িতে গিয়ে তদন্ত করেছে। ওই ভদ্রলোককে বাড়ির বাইরে থেকে কিছু লোক হুমকি দিয়েছে। উনি আপাতত বাড়িতে নেই। ঘটনাটি নতুন করে দেখা হচ্ছে। তাই আপাতত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy