Advertisement
E-Paper

সমাজবাড়ি পরিদর্শনে রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের সদস্যরা

সংস্কারের অভাবে জীর্ণ সমাজবাড়ি ঘুরে গেলেন হেরিটেজ কমিশনের প্রতিনিধি দল। ব্যক্তিগত মালিকানায় থাকা কালনা শহরের ওই বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরেই টানাপড়েন চলছিল। কয়েকজন শরিক বাড়ি কিছু অংশ বিক্রির উদ্যোগও করেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৪ ০৩:১৪
চলছে পরিদর্শন। ছবি: মধুমিতা মজুমদার।

চলছে পরিদর্শন। ছবি: মধুমিতা মজুমদার।

সংস্কারের অভাবে জীর্ণ সমাজবাড়ি ঘুরে গেলেন হেরিটেজ কমিশনের প্রতিনিধি দল।

ব্যক্তিগত মালিকানায় থাকা কালনা শহরের ওই বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরেই টানাপড়েন চলছিল। কয়েকজন শরিক বাড়ি কিছু অংশ বিক্রির উদ্যোগও করেন। তার প্রতিবাদে নামে স্থানীয় মানুষ। সমাজবাড়ি রক্ষার জন্য বিভিন্ন দফতরে চিঠি দেন তারা। মার্চ মাস নাগাদ কালনার মহকুমাশাসক সব্যসাচী ঘোষও চিঠি পাঠান রাজ্য হেরিটেজ কমিশনে। তারপরেই মঙ্গলবার হেরিটেজ কমিশনের দুই সদস্য কালনায় আসেন।

১৮৩৩ সালে বর্ধমানের রাজা মহতাব চাঁদ এক একর ৪৩ শতক জমির উপর সমাজবাড়িটি নির্মাণ করেন। পশ্চিম ভারতীয় রীতি অনুযায়ী মৃতের চিতাভষ্মের উপর যে মন্দির তৈরি হয় তাকেই সমাজবাড়ি বলে। কালনার সমাজবাড়িতেও তেজচাঁদ ও তাঁর স্ত্রী কমলকুমারীর স্মৃতিতে দুটি মন্দির রয়েছে। প্রথমটি বিরল সতেরো চূড়া মন্দিরের রীতিতে তৈরি। আর দ্বিতীয়টি নবরত্ন। ১৯৬৬ সালের গোড়াতে বর্ধমান রাজ এস্টেট থেকে কালনার সমাজবাড়ি দেখভালের দায়িত্ব পান নবদ্বীপের বাসিন্দা অবনী বিশ্বাস। পরে তাঁদের হাতেই পুরোপুরি ভাবে বাড়ির মালিকানা চলে যায়।

এ দিন রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের দুই সদস্য প্রদীপকুমার সিংহ ও বাসুদেব মালিকের সঙ্গে সমাজবাড়ি পরিদর্শনে যান মহকুমাশাসক এবং কালনা মহকুমা ইতিহাস ও পুরাচর্চা কেন্দ্রের সদস্যরা। ঘন্টাখানেক ধরে স্মৃতি মন্দিরদুটির নানা অংশ ঘুরে দেখে দলটি। দেখা যায়, মন্দির প্রাঙ্গন আগাছায় ভরে গিয়েছে, চূড়ার একাধিক জায়গা দিয়ে বেরিয়েছে গাছ। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় মন্দির গাত্রের অনেক কারুকাজই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। বেশ কিছু জায়গায় চুনসুড়কি খসে পড়ছে। প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা মন্দিরের নানা অংশের ছবি তোলেন। সতেরো চূড়ার মন্দিরটিই নজর কাড়ে বেশি। বাসুদেববাবু জানান, ওই ধাঁচের স্থাপত্য বিরল। সমাজবাড়িতে বসবাসকারী বিশ্বাস পরিবারের কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে কথাও তাঁরা।

মৃত্যুঞ্জয় মুখোপাধ্যায়, সমীর তরফদারেরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের কাছে তাঁরা বাড়িটি ন্যায্য দামে কিনে নেওয়ার আবেদন করছেন। কিন্তু প্রস্তাবের সদুত্তর মেলেনি। দেনা মেটাতে বাড়ির কিছু অংশ বিক্রির জন্য ইতিমধ্যে বায়না নেওয়া হয়েছে বলেও তাঁরা জানান। তাঁদের দাবি, সরকারি ভাবে মন্দির দুটি সংস্কার করা হলে তাঁদের আপত্তি নেই। কিন্তু বাকি জমিতে কিছু করতে গেলে ন্যায্য দাম দিতে হবে।

প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা তাঁদের জানান, হেরিটেজ কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী সংস্কার করা হলে মন্দির থেকে ১০০ মিটারের মধ্যে কোনও কিছু করা যাবে না। কমিশন জমি কিনবে না, বরং ব্যাক্তি মালিকানাধীন জমির উপর মন্দিরের প্রাচীন শৈলী মেনে কাজ করবে। পরে মন্দিরের দেখাশোনার দায়িত্ব নিতে স্থানীয় প্রশাসনকে।

সমাজবাড়ি থেকে বেরিয়ে ওই দুই সদস্য মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে যান। সেখানে বাড়ির মালিকের অনুমতি-সহ সমাজবাড়ি সংস্কারের বিষয়ে একটি চিঠি দ্রুত হেরিটেজ কমিশনে পাঠানোর পরামর্শ দেন তাঁরা। কমিশনের কারিগরি দিক দেখভালের দায়িত্বে থাকা প্রদীপবাবু বলেন, “এ ধরনের মন্দির যে কোনও এলাকার সম্পদ। আমরা ফিরে এ ব্যাপারে বিস্তারিত রিপোর্ট কমিশনের চেয়ারম্যানকে দেব। তারপরেই সিদ্ধান্ত হবে।”

samajbari visit state heritage commission kalna
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy