Advertisement
E-Paper

হামলার আশঙ্কা, পথনাটকে প্রচার বাছাই এলাকায়

পরমাণু চুক্তি ব্যাপারটা কী। কেন্দ্রে ইউপিএ সরকার থেকে কেন সমর্থন তুলে নিল বামফ্রন্ট। কেনই বা শিল্প প্রয়োজন। গত লোকসভা ভোটের আগে মেঠো রাস্তার পাশে, পাড়ার মোড়ের আটচালায় গানে-নাটকে উঠে আসত এ সব বিষয়। পথনাটক, গণসঙ্গীত, কবিগানে নিজেদের দাবি-দাওয়া, আশ্বাস, অবস্থান জানিয়ে ভোটের প্রচার চালাত বামফ্রন্ট। পাঁচ বছর পরে সে সব দৃশ্যের আর তেমন দেখা নেই বর্ধমান জেলার বহু এলাকাতেই।

বিপ্লব ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৪ ০০:৫৬

পরমাণু চুক্তি ব্যাপারটা কী। কেন্দ্রে ইউপিএ সরকার থেকে কেন সমর্থন তুলে নিল বামফ্রন্ট। কেনই বা শিল্প প্রয়োজন।

গত লোকসভা ভোটের আগে মেঠো রাস্তার পাশে, পাড়ার মোড়ের আটচালায় গানে-নাটকে উঠে আসত এ সব বিষয়। পথনাটক, গণসঙ্গীত, কবিগানে নিজেদের দাবি-দাওয়া, আশ্বাস, অবস্থান জানিয়ে ভোটের প্রচার চালাত বামফ্রন্ট। পাঁচ বছর পরে সে সব দৃশ্যের আর তেমন দেখা নেই বর্ধমান জেলার বহু এলাকাতেই। এ ভাবে প্রচার চালাতে গেলে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনার কারণেই ওই সব এলাকায় গান-নাটক বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে ‘পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সঙ্ঘ’।

বামেদের নির্বাচনী প্রচারে বরাবরই বড় ভূমিকা নিয়ে এসেছে এই সব পথনাটক, লোকগান। রাজ্যে ক্ষমতায় থাকাকালীন তাদের সরকারের সাফল্য, নানা বিষয় নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে মতামতএ সব উঠে আসত এই ধরনের প্রচারে। কিন্তু ২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতার হাতবদলের পর থেকেই তাতে ভাটা পড়ে। ওই সঙ্ঘের অভিযোগ, এর মূল কারণ, শাসকদলের সন্ত্রাস। সঙ্ঘের সদস্য পরেশচন্দ্র মণ্ডলের কথায়, “শুধু ভোটের প্রচার নয়, যে কোনও বিষয় নিয়ে প্রতিবাদমূলক কিছু করতে গেলেই শাসকদলের কোপে পড়তে হচ্ছে। পঞ্চায়েত ভোটের আগেও সে ভাবে প্রচার করা যায়নি।”

পরেশচন্দ্রবাবু অভিযোগ করেন, গত বছর দুয়েকে একের পর এক তাঁদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আদিবাসী লোকো শিল্পী সঙ্ঘের প্রাক্তন জেলা সম্পাদক কমল গায়েন খুন হয়ে গিয়েছেন। দুর্গাপুরের গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সঙ্ঘের ইস্পাত শাখার সম্পাদক কবিরঞ্জন দাশগুপ্ত আক্রান্ত হয়েছেন। এ ছাড়াও হুমকি, মারধরের মুখে পড়েছেন বেশ কয়েক জন শিল্পী। সব ক্ষেত্রে পুলিশে অভিযোগ না জানানো হলেও শিল্পীরা ঝুঁকি নিতে চাইছেন না বলে দাবি পরেশচন্দ্রবাবুর।

এই পরিস্থিতিতে তারা প্রচারের কৌশল পাল্টে ফেলেছে বলে গণসংগঠনগুলি সূত্রে জানা গিয়েছে। পরেশচন্দ্রবাবু জানান, আগে বিভিন্ন এলাকায় এক-একটি দল বেরিয়ে পড়ত প্রচারে। সারা দিন ধরে বিভিন্ন পথনাটক, গণসঙ্গীতের অনুষ্ঠান করা হত। কিন্তু এ বার যে সব এলাকা তাঁরা নিরাপদ নয় বলে মনে করছেন, সেখানে আলাদা ভাবে কোনও দল বেরোচ্ছে না। এ সব অনুষ্ঠানই হচ্ছে, তবে তা প্রার্থীর প্রচার উপলক্ষে আয়োজিত কোনও ছোট জনসভা বা রোড-শোয়ের সময়ে। কেতুগ্রামের বেশ কিছুটা অংশ, মঙ্গলকোট বড় অংশ, রায়নার মতো এলাকায় এ বার এই পন্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী ও লোকো শিল্পী সঙ্ঘের বর্ধমান জেলা সম্পাদক শের আলি অবশ্য বলেন, “আমরা কিছু এলাকায় আলাদা করে প্রচারে নেমেছি। নাটক, গান-সহ বিভিন্ন দল নিয়ে সেই প্রচার চলছে।” তাঁর দাবি, শাসকদলের সন্ত্রাস উপেক্ষা করেও আদিবাসী শিল্পীরা এগিয়ে আসছেন। কুলটি, বার্নপুর, পূর্বস্থলী, কাঁকসা, রানিগঞ্জের মতো এলাকায় এ ভাবে প্রচার চলছে বলেও জানান তিনি।

শাসকদলের বিরুদ্ধে এই গণসংগঠনগুলির সন্ত্রাসের অভিযোগ অবশ্য মানতে চাননি তৃণমূলের বর্ধমান জেলা (গ্রামীণ) সভাপতি স্বপন দেবনাথ। তাঁর পাল্টা মন্তব্য, “এই ধরনের অভিযোগই বামফ্রন্টের একটি নাটক। ওদের পাশে এখন মানুষ নেই। তাই এ সব মিথ্যে অভিযোগ করে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।”

election campaign biplab bhattacharya
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy