চলছে সেতু মেরামতির কাজ। নিজস্ব চিত্র।
খন্দে ভরা রেল সেতু দিয়ে যাতায়াত ও তার জেরে যানজট নিত্য সমস্যা পানাগড়ের। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত সেই ফাঁসেই কার্যত থমকে রইল জাতীয় সড়ক। পানাগড় ছাড়িয়ে দু’দিকে বেশ কয়েক কিলোমিটার জুড়ে যানজট হয়। আটকে পড়ে বহু লরি, ট্রাক, গাড়ি। পরে শুক্রবার সকালে কাঁকসা ও বুদবুদ থানার সহযোগিতায় জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ওই সেতু মেরামতির কাজ শুরু করেন। বিকেলের পরে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়।
কেন্দ্রীয় সরকারের স্বর্ণ চতুষ্টয় জাতীয় সড়ক প্রকল্পে কলকাতা থেকে দিল্লিগামী ২ নম্বর জাতীয় সড়ক চার লেন করা হয় ২০০১ সালে। কিন্তু দোকান, বাজার, বাড়ি ভাঙা পড়বে বলে বাসিন্দারা আপত্তি তোলেন। ফলে পানাগড়ের ভিতরে প্রায় সওয়া তিন কিমি রাস্তা চার লেনের করা যায়নি। এর জেরে দার্জিংলিং মোড় থেকে পানাগড় বাজার পেরিয়ে রেল সেতু পর্যন্ত রাস্তা কার্যত গলার ফাঁস হয়ে রয়ে যায়। দিনভর যানজট লেগেই থাকে। সম্প্রতি রেল সেতু বেহাল হয়ে সমস্যা আরও বাড়ে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, দৈনিক শয়ে শয়ে যানবাহন ওই রেল সেতু দিয়ে যাতায়াত করে। যানবাহনের চাপে সেতুর কংক্রিটের মেঝে ক্ষয়ে গিয়ে লোহার রড বেরিয়ে গিয়েছে একাধিক জায়গায়। খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। এমনিতেই ওই সেতুর উপর দিয়ে তুলনামূলক ধীর গতিতে যানবাহন চলাচল করে। তার উপর সেতুর আরও বেহাল হওয়ায় যানবাহনের গতি আরও শ্লথ হয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত থেকেই ওই সেতুর উপর যানজট শুরু হয়। শুক্রবার প্রায় সারাদিন যানজট বজায় ছিল। পানাগড়ের বাসিন্দা সুকুমার সিংহ বলেন, “এমনিতেই জাতীয় সড়ক পারাপার আমাদের কাছে বিভীষিকা। এ দিন তা আরও জটিল হয়ে যায়।” কলকাতাগামী একটি বাসের যাত্রী কাশীনাথ দাস বলেন, “পানাগড় পেরোতে বেশি সময় লাগবে এটা ধরেই আমরা বাসে উঠি। কিন্তু রেল সেতুর বেহাল দশার জন্য এ দিন প্রচুর সময় লেগে যায়। উপায় না থাকায় বাসেই বসে থাকতে হয়।” প্রায় ১৬ ঘণ্টা যানজট চলায় সমস্যায় পড়েন আরও বহু যাত্রী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিস্থিতি বেগতিক দেখে শুক্রবার জরুরি ভিত্তিতে সেতু মেরামতির সিদ্ধান্ত নেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। অথচ সেতুর উপর যাতায়াত বন্ধ করে মেরামতি করা যাবে না। তাহলে জাতীয় সড়ক স্তব্ধ হয়ে যাবে। পরিস্থিতি সামলাতে কাঁকসা ও বুদবুদ থানার পুলিশ আসরে নামে। যানবাহনের গতি যথাসম্ভব নিয়ন্ত্রণ করে মেরামতির কাজ করার ব্যবস্থা করে দেয় পুলিশ। জরুরি ভিত্তিতে মেরামতির কাজ সেরে ফেলেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। বিকেলের দিকে পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়। সংস্থার এক আধিকারিক বলেন, “যানবাহনের ভিড় এড়িয়ে সেতুর উপরের রাস্তা মেরামতি বেশ কঠিন। যত দিন না বাইপাস তৈরি করা যাবে ততদিন পরিস্থিতি বদলাবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy