নয়া সদস্য: সুন্দরবনের পুকুরে বিপন্ন প্রজাতির সেই কচ্ছপ। —নিজস্ব চিত্র।
এক সময় ওরা নির্ঝঞ্ঝাটে ঘুরে বেড়াত সুন্দরবনের বুকে। কিন্তু নির্বিচার চোরাশিকার আর মাছধরা ট্রলারের প্রপেলারের উপদ্রবে ক্রমশ বিপন্ন হয়ে পড়েছে বাটাগুর কচ্ছপেরা। শুধু এ রাজ্যে নয়, গোটা দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতেই বিপন্ন তারা।
আন্তর্জাতিক পরিবেশ গবেষণা সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার বা আইইউসিএন-এর লাল তালিকায় ঠাঁই পাওয়া সেই বাটাগুর কচ্ছপের একটি দল ফিরে আসতে চলেছে সুন্দরবনের জলে। তবে তাদের জন্ম অকৃত্রিম প্রাকৃতিক পরিবেশে হয়নি, হয়েছে বন দফতরের পুকুরে।
রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) রবিকান্ত সিংহ জানান, সজনেখালিতে বন দফতরের অফিস-চত্বরেই প্রজনন ঘটানো হচ্ছে বিপন্ন প্রজাতির বাটাগুর কচ্ছপের। তাদের একটি দলকে শীঘ্রই সুন্দরবনের নদী ও খাঁড়িতে ছাড়া হবে। কয়েকটির শরীরে ট্রান্সমিটার বসানো থাকবে, যাতে তাদের গতিবিধি বোঝা যায়। প্রচুর নদী ও খাঁড়ির মধ্যে বাটাগুরেরা কোন কোন এলাকাকে বেছে নিচ্ছে, ট্রান্সমিটারের তথ্যে তা বোঝা যাবে।
প্রাণিবিশেষজ্ঞেরা বলছেন, বাটাগুর কচ্ছপ (বিজ্ঞানসম্মত নাম বাটাগুর বাস্কা)-এর বাস মূলত নদীর মোহনার কাছে বা জোয়ারের জলে পুষ্ট নদীতে এবং তার পাড়ে। ভারত, বাংলাদেশ, কম্বো়ডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়ায় এখনও তাদের দেখা মেলে। কিন্তু মায়ানমার, সিঙ্গাপুর, তাইল্যান্ড, ভিয়েতনামে তারা কার্যত অবলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। মূলত সুস্বাদু মাংসের জন্য ওই কচ্ছপ ধরে চোরাশিকারিরা। হা়ড় ও পিঠের শক্ত আবরণও চোরাবাজারে বিক্রি হয়।
বন দফতরের খবর, বাটাগুর নিয়ে এই প্রকল্প শুরু হয়েছিল বছর তিনেক আগে। চামটার কাছে একটি খাঁড়িতে জালের ঘেরাটোপে পরীক্ষামূলক ভাবে ছাড়া হয়েছিল তাদের কয়েকটিকে। সেখানে বাটাগুরেরা দিব্যি মানিয়ে নিয়েছে। তার পরেই বন দফতর সজনেখালিতে বিস্তৃত ভাবে প্রকল্প চালু করা হয়। এক বনকর্তা বলেন, ‘‘এ বার বাটাগুরদের কোন খাঁড়িতে ছাড়া হবে, সেটা গোপন রাখা হচ্ছে। ওই খাঁড়ি ছাড়িয়ে আশপাশের কোন এলাকায় তারা বাসা বাঁধছে, সেটা খুঁটিয়ে দেখা হবে। পরের বার সেই সব এলাকাতেই ছা়ড়া হবে অন্য বাটাগুর কচ্ছপদের।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy