মনোনয়ন-পর্বে বিরোধীদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিস্তর। তার মধ্যেও যাঁরা মনোনয়ন দিতে পেরেছেন, তাঁদের প্রত্যাহার করানোর জন্য হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। পঞ্চায়েত ভোটকে ঘিরে বাংলায় গণতন্ত্রকে হত্যা করা হচ্ছে, এই অভিযোগ সামনে রেখে কাল, শুক্রবার সকালে ৬ ঘণ্টার প্রতীকী সাধারণ ধর্মঘট ডাকল বামফ্রন্ট ও সহযোগী দলগুলি। ধর্মঘটকে পূর্ণ নৈতিক সমর্থন জানিয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস। যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধীদের আহ্বান উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, ‘‘কোনও বন্ধ হবে না!’’
সকাল ৬টা থেকে বেলা ১২টা— এ আবার কেমন ধর্মঘট? বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু শুক্রবার বলেন, ‘‘সচরাচর এমন ধর্মঘট হয় না। কিন্তু চৈত্র সংক্রান্তি, পয়লা বৈশাখ, এগুলোর বিশেষ গুরুত্ব আছে বাংলার জীবনে। কমিশন ঠুঁটো জগন্নাথ, প্রশাসন শাসক দলের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। এই রকম সময়ে মানুষের যাতে বেশি অসুবিধা না হয়, তার জন্য ৬ ঘণ্টার জন্য ধর্মঘট ডাকা হয়েছে।’’ বিমানবাবুদের যুক্তি, ১৬ তারিখ মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনের আগেই তাঁরা এই ধর্মঘট-অস্ত্র প্রয়োগ করতে চান।
প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাজ্য জু়ড়ে অরাজকতার পরিস্থিতি। অন্যান্য বিরোধী দলের সঙ্গে কংগ্রেসের নেতা-বিধায়কেরাও আক্রান্ত। এমতাবস্থায় বামেদের ধর্মঘটে তাদের পূর্ণ নৈতিক সমর্থন থাকছে। আক্রান্ত বিধায়ক ফিরোজা বেগম, সফিউজ্জামান শেখদের নিয়ে আজ, বৃহস্পতিবার বিকালে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর কাছে অভিযোগ জানাতে যাবেন অধীর চৌধুরী, আব্দুল মান্নান, প্রদীপ ভট্টাচার্য-সহ কংগ্রেস নেতৃত্ব। প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে অনুপম ঘোষ ও ঋজু ঘোষাল প্রশ্ন তুলছেন, রাজকোষের টাকা খরচ করে পুরসভা ও পঞ্চায়েতে ভোটের নামে এই প্রহসনের কি দরকার? স্থানীয় ভোট তুলে দিয়ে শুধু বিধানসভা ও লোকসভায় ভোট হোক!
আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত ভোটের গতিপ্রকৃতি কোন পথে যাবে, হাইকোর্টে আজ নজর সব পক্ষের
হুগলির গোঘাট থেকে মগরা, পূর্ব বর্ধমানের মেমারি, বাঁকুড়ার রানিবাঁধ-সহ নানা এলাকা থেকে এ দিন মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য বাড়িতে হামলা, মারধরের অভিযোগ এসেছে। কোথাও আক্রান্ত বাম, কোথাও বিজেপি বা কংগ্রেস। মেমারিতে প্রয়াত নেতা বিনয় কোঙারের মেয়ের বাড়়িতে শাসক দলের দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়েছে বলে সিপিএমের অভিযোগ। এমনকী, যে বীরভূমে মহম্মদবাজার, নলহাটি, রাজনগর ও ময়ূরেশ্বরের দু’টি ব্লকের হাতেগোনা কিছু আসনে ভোট হবে, সেখানেও মনোনয়ন তোলার জন্য মেরে হাত ভেঙে দেওয়া থেকে শুরু করে ধর্ষণের হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে বলে বাম ও বিজেপি নেতাদের অভিযোগ। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ যে কারণে বলেছেন, ‘‘সব দেখে-শুনে রাজ্যবাসীর মনে তৃণমূল সরকার সম্পর্কে একটা ছি-ছি মনোভাব তৈরি হয়েছে। তাই এখন সাংবাদিক-চিত্র সাংবাদিকদের উপরে চড়াও হওয়া শুরু হয়েছে!’’
আদালতে মামলার দিকে নজর রেখে রাজ্য নির্বাচন কমিশন অবশ্য স্ক্রুটিনি সংক্রান্ত কোনও তথ্য প্রকাশ করেনি। কমিশনের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছে মহিলা কংগ্রেস ও বামেরা। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা বামফ্রন্টের ধিক্কার মিছিল থেকে কর্মী-সমর্থকদের জাদুঘরের সামনেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy