দেবাশিস মণ্ডল নামে এই তৃণমূল কর্মীকে মারধর করা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
জেলা পরিষদে প্রার্থী হয়েছেন খোদ বিধায়ক। জিতলে তিনিই নাকি উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের পরবর্তী সভাধিনেত্রী। এলাকায় কানাঘুষো এমনই। কিন্তু বিধায়ক সম্ভবত ঝুঁকি নিতে চাইছিলেন না। যে জেলা পরিষদ আসন থেকে তিনি লড়ছেন, সেখানকার কংগ্রেস সমর্থিত বামফ্রন্ট প্রার্থীর উপর গত কয়েক দিন ধরে চাপ বাড়ছিল। মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিতে বলা হচ্ছিল বলে অভিযোগ। তাতেই হাতের বাইরে চলে গেল পরিস্থিতি। মঙ্গলবার রাতে ‘বিধায়কের দুই সাগরেদ’কে ঘিরে ফেললেন গ্রামবাসীরা। চলল বেধড়ক মারধর। উদ্ধার করতে গিয়ে আক্রান্ত হল পুলিশও।
স্বরূপনগর ব্লকের অন্তর্গত ১৩ নম্বর জেলা পরিষদ আসনে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক বীণা মণ্ডল। বিধায়কের বিরুদ্ধে সিপিএম প্রার্থী হিসেবে যিনি লড়ছেন, সেই সুপ্রিয়া মণ্ডল এবং তাঁর স্বামী সন্দীপ মণ্ডলকে গত কয়েক দিন ধরে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলে জানা গিয়েছে। অভিযোগ, মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের জন্য রবিবার থেকে চারঘাট অঞ্চলের দুই তৃণমূল কর্মী দেবাশিস মণ্ডল ও বিপ্লব হুমকি দিচ্ছিলেন সিপিএম প্রার্থীকে। প্রত্যাহার করলে টাকা এবং চাকরি মিলবে, প্রত্যাহার না করলে ফল অত্যন্ত খারাপ হবে— এমনই হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলে সিপিএমের দাবি।
মঙ্গলবার রাতে ফের ওই দুই তৃণমূল কর্মী সুপ্রিয়া মণ্ডলের বাড়িতে যান। খবর পাওয়া মাত্রই এলাকার লোকজন সুপ্রিয়া মণ্ডলের বাড়ি ঘিরে ফেলে ওই দুই তৃণমূল কর্মীকে আটক করেন। তার পর শুরু হয় মারধর।
খবর পেয়ে চারঘাট ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার তাপস ঘোষের নেতৃত্বে পুলিশকর্মীরা ওই দু’জনকে উদ্ধার করতে যান। কিন্তু এলাকাবাসীর বাধার মুখে পড়ে তাঁদের ফিরে যেতে হয় বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। পরে স্বরূপনগর থানা থেকে বড়সড় বাহিনী গিয়ে দেবাশিস ও বিপ্লবকে উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন: বিজেপি বাড়ছে গ্রামে, তাই নাকি জল বন্ধ!
আরও পড়ুন: ঝুলেই রইল পঞ্চায়েত, কাল সকালে ফের শুনানি
এ দিনের ঘটনা প্রসঙ্গে সিপিএমের এরিয়া কমিটির সম্পাদক দেবাশিস দত্ত বলেন, “ওই দুই তৃণমূল কর্মী বলছিলেন যে, তাঁরা বিধায়ক বীণা মণ্ডলের দেওর। রবিবার তাঁরা সুপ্রিয়া মণ্ডলের বাড়িতে এসে হুমকি দিয়ে যান। মঙ্গলবার ফের আসেন। কিন্তু এ বার হাতেনাতে ধরা পড়ে যান।”
দুই তৃণমূল কর্মীকে আটকে চলছে মারধর। ছবি: সংগৃহীত
কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি ক্ষীরোদ ঘোষ বলেন, “এখানে যিনি সিপিএমের প্রার্থী, তাঁকে আমরাও সমর্থন করছি। এই আসন থেকে জেতা যে সহজ হবে না, বিধায়ক সে কথা বুঝতে পেরেই লোক দিয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দিচ্ছিলেন। কিন্তু এলাকার মানুষ প্রতিরোধ গড়ে তোলায় সেই ছক ভেস্তে গিয়েছে।”
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চারঘাট এলাকা বেশ থমথমে। পরিস্থিতি যে উত্তপ্ত, মঙ্গলবার রাতে স্বরূপনগর থানা সূত্রেও সে খবর স্বীকার করে নেওয়া হয়। কিন্তু অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে থানার তরফে কিছু জানানো হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy