Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Panchayat Poll 2018

৮ বার প্রার্থী বাহাদুর

ঝালদা ১ ব্লকের নওয়াডি পঞ্চায়েতের বিসরিয়া গ্রামের বাহাদুরের পরিবার কংগ্রেসের সমর্থক। পুরুলিয়ার জগন্নাথ কিশোর কলেজে কলাবিভাগে পড়ার সময় বাহাদুর ছাত্র পরিষদ করতেন।

বাহাদুর মাহাতো।

বাহাদুর মাহাতো।

প্রশান্ত পাল
ঝালদা শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৮ ০৩:২৪
Share: Save:

চার দশক ধরে পঞ্চায়েত ভোটে লড়ছেন। বামফ্রন্ট আমলে একটি বার ছাড়া তাঁকে নোয়ানো যায়নি। তৃণমূলের রাজত্বে এ পর্যন্ত তিনি অপরাজিত। রাজ্যের অনেক প্রান্তেই যেখানে কংগ্রেসের শক্তিক্ষয় চোখে পড়ে, সেখানে ব্যতিক্রম পুরুলিয়ার ঝালদা ১ ব্লক কংগ্রেস সভাপতি বাহাদুর মাহাতো। এক টানা পঁচিশ বছর ধরে পঞ্চায়েত ভোটে জেতায় ২০০৯ সালে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক পুরস্কৃত করেছে তাঁকে। ৬৫ বছর পার করা বাহাদুর এ নিয়ে অষ্টম বারের জন্য ভোটের ময়দানে।

ঝালদা ১ ব্লকের নওয়াডি পঞ্চায়েতের বিসরিয়া গ্রামের বাহাদুরের পরিবার কংগ্রেসের সমর্থক। পুরুলিয়ার জগন্নাথ কিশোর কলেজে কলাবিভাগে পড়ার সময় বাহাদুর ছাত্র পরিষদ করতেন। কলেজ শেষ করে নিজের প্রত্যন্ত গ্রামে তিনি বিনা পয়সায় গৃহ শিক্ষকতা করতে শুরু করেন। গরিব মানুষকে বিনামূল্যে ওষুধও জোগাড় করে দিতেন। সেই পরিচিতির সুবাদে প্রথম বার যখন পঞ্চায়েত ভোট হতে যাচ্ছে, তখন এলাকাবাসীর একাংশ তাঁকে ভোটে লড়ার জন্য চেপে ধরেন।

বাহাদুরের স্মৃতি এখনও তাজা। বলেন, ‘‘কাঁচা বয়স বলে কংগ্রেস নেতৃত্ব প্রথমে ভরসা করেননি। প্রথম বার নির্দল প্রার্থী হয়ে পঞ্চায়েত সমিতির আসনে জেতার পরে, কংগ্রেস দলে টেনে নেয়।’’

সেই শুরু। ১৯৮৩ সালে বামফ্রন্ট পঞ্চায়েত সমিতি দখল করে। সে বার জিতে বাহাদুর বিরোধী দলনেতা। ১৯৮৮ সালে কংগ্রেস পঞ্চায়েত সমিতি দখল করে। বাহাদুর ফব প্রার্থীর কাছে হারলেও, উপনির্বাচনে জিতে হন সভাপতি। ১৯৯৩ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত এই পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষমতার রাশ বার বার বদলেছে। কিন্তু বাহাদুর অপরাজিত থেকেছেন। ২০১৩-য় জিতে বাহাদুর জেলা পরিষদের বিরোধী দলনেতা হন।

গতবার ঝালদা ১ পঞ্চায়েত সমিতি কংগ্রেস দখল করলেও, পরে অনেকে দলবদল করায় তা তৃণমূলের হাতে যায়। এ বার সেই পঞ্চায়েত সমিতিতেই বাহাদুর প্রার্থী। তাঁর কথায়, ‘‘বামফ্রন্ট বা তৃণমূল দলে টানতে চেয়েছে। কংগ্রেস ছাড়িনি। শাসকের কাছ থেকে এলাকার কাজ আদায় করেছি।’’ পুরুলিয়ার জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতো বলেন, ‘‘সাদামাঠা জীবনযাপন আর সততাই বাহাদুরদাকে ঝালদার মানুষের কাছে জনপ্রিয় করে রেখেছে।’’ পক্ষান্তরে, ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক নরহরি মাহাতোর মন্তব্য, ‘‘উনি খুব ভাল মানুষ।’’ জেলা পরিষদের বিদায়ী সভাধিপতি তথা তৃণমূল নেতা সৃষ্টিধর মাহাতো বলছেন, ‘‘জেলা পরিষদ পরিচালনায় যখনই পরামর্শ চেয়েছি, খালি হাতে ফেরাননি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE