Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

প্রার্থীকে না পেয়ে গুলি আত্মীয়দের

মুর্শিদাবাদের বারবাকপুরের দৌলতপুর গ্রামের কংগ্রেস প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা ঘোষের আত্মীয়েরা জানান, ‘‘বৌমা তো এ বাড়িতে নেই।’’ শুনে, শুক্রবার রাতে হামলা করতে আসা দুষ্কৃতীরা হাঁটা লাগিয়েছিল ওই গ্রামেই প্রিয়াঙ্কার বাপের বাড়ির দিকে।

হাহাকার: কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরীকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়লেন পঞ্চায়েতের প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা ঘোষ এবং তাঁর শাশুড়ি। শনিবার মুর্শিদাবাদের দৌলতাবাদে। নিজস্ব চিত্র

হাহাকার: কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরীকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়লেন পঞ্চায়েতের প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা ঘোষ এবং তাঁর শাশুড়ি। শনিবার মুর্শিদাবাদের দৌলতাবাদে। নিজস্ব চিত্র

সামসুদ্দিন বিশ্বাস
দৌলতাবাদ শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:১২
Share: Save:

কড়া নেড়ে তারা জানতে চেয়েছিল, ‘‘প্রার্থী কোথায়?’’ রাতবিরেতে গলায় আওয়াজেই মালুম হয়েছিল ‘বিপদ আসছে!’

তাই, মুর্শিদাবাদের বারবাকপুরের দৌলতপুর গ্রামের কংগ্রেস প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা ঘোষের আত্মীয়েরা জানান, ‘‘বৌমা তো এ বাড়িতে নেই।’’ শুনে, শুক্রবার রাতে হামলা করতে আসা দুষ্কৃতীরা হাঁটা লাগিয়েছিল ওই গ্রামেই প্রিয়াঙ্কার বাপের বাড়ির দিকে।

প্রিয়াঙ্কার শ্বশুর সঞ্জীব আর দেওর চিরঞ্জিত জনা পনেরো সশস্ত্র দুষ্কৃতীর পিছু নিয়েছিলেন। তাতেই চটে গিয়ে ওঁদের দিকে সটান গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। গুরুতর জখম সঞ্জীব ও চিরঞ্জিতকে প্রথমে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় শনিবার তাঁদের এনআরএসে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। প্রিয়াঙ্কার স্বামী প্রসেনজিৎ জানান, দুষ্কৃতীদের অনেককেই চিনতে পেরেছেন তিনি, সবাই তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী।

পুলিশ ওই ঘটনায় পাঁচ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। কংগ্রেসের অভিযোগ ঘটনায় পড়শি পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রার্থীর স্বামীও জড়িত। শুক্রবার রাতেই বসন্তপুর গ্রাম থেকে ওই তৃণমূল প্রার্থীর স্বামী ইমদাদুল শেখকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। শনিবার তাঁকে বহরমপুরে সিজেএম আদালতে তোলা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা, বেআইনি অস্ত্র রাখা, বাড়িতে আক্রমণ-সহ একাধিক ধারায় মামলা করেছে পুলিশ।

যদিও জেলা তৃণমূলের সভাপতি সুব্রত সাহা বলেন, ‘‘দৌলতাবাদে যা ঘটেছে তার সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্কে নেই। আমরা পুলিশকে নিরপেক্ষ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।”

প্রিয়াঙ্কা অবশ্য অভিযোগ করেন, শাসকদলের লোকেরাই তাঁর বাড়িতে হামলা চালায়। তাঁর শ্বশুরবাড়ি থেকে বাপের বাড়ির দূরত্ব মেরেকেটে ৫০ মিটার। শুক্রবার তিনি বাপের বাড়ি ছিলেন। প্রিয়াঙ্কার দাবি, “জনা তিরিশেক লোক মুখে কাপড় বেঁধে শ্বশুরবাড়িতে আমার খোঁজে আসে। আমার শ্বশুর ও দেওর খেতে বসেছিলেন। দুষ্কৃতীরা বোমাবাজি শুরু করে। আমার শ্বশুর ও দেওর তখন প্রাণ বাঁচাতে আমার বাপের বাড়ির দিকে আসছিলেন। তখনই ওরা গুলি চালায়।’’ প্রিয়াঙ্কা অবশ্য মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।

হামলার খবর পেয়ে শনিবার সকালে আহতদের বাড়ি যান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘ডাকিনী-যোগিনীদের সাম্রাজ্য চলছে। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি, প্রত্যেক সন্ত্রাসের পিছনে পুলিশ সুপার-জেলাশাসকের সক্রিয় মদত আছে।” তবে, এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার এবং জেলাশাসক পি উলাগানাথন কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE