Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

আত্মসমর্পণ নয়, কড়া বার্তা সূর্যের

পঞ্চায়েত ভোটে কঠিন লড়াই। সেই লড়াইয়ে যাঁরা ‘আত্মসমর্পণ’ করবেন, সংগঠনে তাঁদের কোনও জায়গা নেই বলে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। দল ছোট হয়ে গেলেও তাঁরা যে লড়াকু সৈনিক চান, সূর্যবাবুর কথায় ফের সেই বার্তা স্পষ্ট।

দু’জনে: রাজ্যে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ পঞ্চায়েত ভোটের দাবিতে বামেদের অবস্থান বিক্ষোভ। রয়েছেন সূর্যকান্ত মিশ্র এবং বিমান বসু। বৃহস্পতিবার ধর্মতলায় লেনিন মূর্তির পাদদেশে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

দু’জনে: রাজ্যে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ পঞ্চায়েত ভোটের দাবিতে বামেদের অবস্থান বিক্ষোভ। রয়েছেন সূর্যকান্ত মিশ্র এবং বিমান বসু। বৃহস্পতিবার ধর্মতলায় লেনিন মূর্তির পাদদেশে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

পঞ্চায়েত ভোটে কঠিন লড়াই। সেই লড়াইয়ে যাঁরা ‘আত্মসমর্পণ’ করবেন, সংগঠনে তাঁদের কোনও জায়গা নেই বলে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। দল ছোট হয়ে গেলেও তাঁরা যে লড়াকু সৈনিক চান, সূর্যবাবুর কথায় ফের সেই বার্তা স্পষ্ট।

মনোনয়ন-পর্ব থেকে টানা ‘সন্ত্রাসে’র প্রতিবাদে এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে ধর্মতলায় লেনিন মূর্তি চত্বরে দু’দিনের ধর্না-অবস্থানে বসেছে বামেরা। দুই বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, বাঁকুড়ার নানা ‘আক্রান্ত’ এলাকা থেকে বাম কর্মী-সমর্থকেরা এসেছিলেন প্রথম দিনের ধর্নায়। রাতভর ধর্নাস্থলেই থাকছেন সূর্যবাবু, বিমান বসুরা। ‘গণতন্ত্র রক্ষা’র এই কর্মসূচিতে ১৭ বাম দল থাকলেও এসইউসি অবশ্য নেই।

শাসক দলের মোকাবিলায় প্রতিরোধের বার্তা দেওয়ার পাশাপাশিই সিপিএম নেতারা চেষ্টা চালিয়েছেন কর্মী-সমর্থকদের চাঙ্গা করার। পঞ্চায়েত ভোটের আগে এখনও পর্যন্ত খুন হয়েছেন তৃণমূলের পাঁচ জন। সেই প্রসঙ্গ টেনেই সূর্যবাবুর মন্তব্য, ‘‘শাসক দল গিয়েছে রাষ্ট্রপতির কাছে সন্ত্রাস নিয়ে দরবার করতে। আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, সার্কাস হচ্ছে! কিন্তু আসলে ওরা ভয় পেয়েছে। তৃণমূল এখন নিজের ছায়াকেও বিশ্বাস করে না। দলের লোকজনের হাতেই তৃণমূলের কর্মী খুন হচ্ছেন।’’

আরামবাগে মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে হেনস্থার মুখে পড়েছিলেন গোঘাটের প্রাক্তন ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক বিশ্বনাথ কারক। তাঁর স্ত্রী-সহ মহিলাদের রাস্তায় পাকড়াও করে মুখে কালি মাখানো হয়েছিল। তাঁদের অভিযোগ এবং অভিজ্ঞতার কাহিনি ধর্না-মঞ্চে তুলে ধরেছেন বিশ্বনাথবাবু। আর সূর্যবাবু, বিমানবাবু, মনোজ ভট্টাচার্যেরা চেষ্টা করেছেন, কর্মী-সমর্থকদের লড়াইয়ের পথে রাখার। বোঝাতে চেয়েছেন, বাঁচার তাগিদে বিজেপিতে নাম লেখানোর ভাবনা ঠিক নয়।

সূর্যবাবুই বলেছেন, অনেক বারের প্রাক্তন সাংসদ বাসুদেব আচারিয়া, সেই ১৯৭৭ সাল থেকে টানা বিধায়ক নর্মদা রায় পর্যন্ত এ বার আক্রান্ত হয়েছেন। এ সব দেখে বাম মহলে অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, যারা নিজেরাই মার খাচ্ছে, তারা অন্যদের কী ভাবে বাঁচাবে? সূর্যবাবুর কথায়, ‘‘কেউ কেউ দোলাচলে পড়ছেন। ভাবছেন, আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য বিজেপিতে ঢুকে পড়ি! তাঁদের বলছি, এ ভাবে বাঁচতে পারবেন? মনে রাখবেন, মোদীর হাত কিন্তু দিদির মাথায়!’’ সিপিএম রাজ্য সম্পাদকের অভিযোগ, নরেন্দ্র মোদীর হাত মাথার উপরে আছে বলেই সারদা-নারদে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতারা জেলের বাইরে আছেন। বিজেপিতে নাম লিখিয়ে পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে না বলে তাঁর বক্তব্য। সেই সঙ্গেই তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘শেষ পর্যন্ত ময়দানে থাকতে হবে। যাঁরা আত্মসমর্পণ করবেন, সংগঠনে তাঁদের জায়গা থাকবে না। লড়াইকে কলুষিত করার অধিকার কারও নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE