Advertisement
E-Paper

‘রাজনীতির লড়াই থাকলেও বাড়িতে আমরা শাশুড়ি-বৌমা!’

সাহেবগঞ্জ ২ পঞ্চায়েতের মান্দারবাটি গ্রামে ২০১৩ সালে তৃণমূল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছিল। যদিও পঞ্চায়েত ছিল সিপিএমের দখলে।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:১০
পাশাপাশি: মায়ারানি এবং ময়না পাল। —নিজস্ব চিত্র

পাশাপাশি: মায়ারানি এবং ময়না পাল। —নিজস্ব চিত্র

ভোটের ময়দানে দুই দলের অহি-নকুল সম্পর্ক। পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের মান্দারবাটি গ্রামে কিন্তু দিব্যি আছেন মায়ারানি ও ময়না পাল। পারিবারিক সম্পর্কে আঁচ না ফেলেই ভোটের লড়াইয়ে তৃণমূলের হয়ে প্রার্থী হয়েছেন ময়না। আর বিজেপি-র টিকিটে দাঁড়িয়েছেন তাঁর খুড়শাশুড়ি মায়ারানি।

সাহেবগঞ্জ ২ পঞ্চায়েতের মান্দারবাটি গ্রামে ২০১৩ সালে তৃণমূল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছিল। যদিও পঞ্চায়েত ছিল সিপিএমের দখলে। এ বার সিপিএম ওই গ্রামে প্রার্থী দিতে পারেনি। ওই আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হওয়ায় তৃণমূল এবং বিজেপির নজর ছিল পালবাড়ির দিকে। তৃণমূল সূত্রের খবর, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জন্য মনোনয়ন পর্বের শুরুতে ভাতার ব্লকে তৃণমূল যে বেশ কিছু আসনে প্রার্থীর নাম ঠিক করতে পারেনি, তার অন্যতম মান্দারবাটি। সেই ফাঁকে বিজেপি পাল বাড়ির ছোট ছেলে মাধবীমোহনের স্ত্রী মায়ারানিকে প্রার্থী করে। কোনও বাধা ছাড়া তিনি মনোনয়নও জমা দেন।

এর পরেই আসরে নামে তৃণমূল। মাধবীমোহনের বড়দা মদনমোহনের পূত্রবধূ ময়নাকে শেষ মুহূর্তে শাসক দলের হয়ে মনোনয়ন জমা দেওয়ানো হয়। ময়নার দাবি, “এই পঞ্চায়েতে সিপিএম কোনও উন্নয়ন করেনি। পঞ্চায়েতে অচলাবস্থা করে রেখেছিল। গ্রামের উন্নয়ন করার জন্যই তৃণমূলের হয়ে দাঁড়িয়েছি।” খুড়শাশুড়ির বিরুদ্ধে কী প্রচার করবেন? মায়ারানিকে জড়িয়ে ধরে ময়না বললেন, “এখানে বিজেপি কিছুই করতে পারবে না। আমরা শাশুড়ি-বৌমা হয়েই থাকব। এক সঙ্গে পুজো দেব।” মায়ারানি বলে ওঠেন, “গ্রামের মানুষ চেয়েছে বলে দাঁড়িয়েছি। বৌমা দাঁড়াবে জানতামই না। আমরাই আগে মনোনয়ন জমা দিয়েছি।”

এই লড়াইয়ের জেরে তা হলে কি আড়ি?

বাড়ির ধানের গোলার সামনে তৃণমূল এবং বিজেপি প্রার্থী এক সঙ্গে বলে উঠলেন, “রাজনীতির লড়াই থাকলেও বাড়ির ভিতরে আমরা কিন্তু শাশুড়ি-বৌমা!” তাঁরাই জানাচ্ছেন, প্রতি পূর্ণিমায় বাড়িতে নারায়ণ পুজো হয়। সবাই মিলে সেই পুজোয় যোগ দেন। বাড়ি লাগোয়া বারোয়ারিতলার একটি মন্দিরে শাশুড়ি-বউমা এক সঙ্গে পুজো দেন। এ ছাড়াও ভালমন্দ রান্না হলে এ-বাড়ি, ও-বাড়ি বাটি চালাচালি হয়।

সব মেনেও বাড়ির দুই মহিলা দুই আলাদা দলে লড়ায় কিঞ্চিৎ ক্ষুব্ধ পাল পরিবারের মেজ ছেলে মুরারীমোহন। বড় আর ছোট জন চাষবাস করলেও মুরারীমোহনের ব্যবসা। তাঁর কথায়, “দাদা-ভাই কত কিছুতেই আমার পরামর্শ নেয়। এ ক্ষেত্রে আমাকে পুরোপুরি অন্ধকারে রেখেছিল। আমি জানতে পারলে কিছুতেই বাড়ির দুজনকে আলাদা দলে দাঁড়াতে দিতাম না। এখন তো ধর্ম সঙ্কটে পড়লাম!”

West Bengal Panchayat Elections 2018 Panchayat Poll TMC BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy