Advertisement
০৪ জুন ২০২৪

ঘাসফুলের ক্যাম্প ফাঁকা, ভিড় আদিবাসী মঞ্চে

বাঁশপাহাড়ির মতো জঙ্গলমহলের কিছু এলাকায় তাঁর দলকে প্রার্থী দিতে দেওয়া হয়নি। তিনি স্বীকার করে নিয়েছিলেন, সংরক্ষণের ফলে কয়েক জায়গায় তৃণমূল উপযুক্ত তফসিলি জাতি, জনজাতির প্রার্থী খুঁজে পায়নি।

আদিবসী মঞ্চের বুথ ক্যাম্পে ভিড় (বাঁ দিকে)। তৃণমূলের ফাঁকা বুথ ক্যাম্প। বেলপাহাড়ির ধবাকাচায়। নিজস্ব চিত্র

আদিবসী মঞ্চের বুথ ক্যাম্পে ভিড় (বাঁ দিকে)। তৃণমূলের ফাঁকা বুথ ক্যাম্প। বেলপাহাড়ির ধবাকাচায়। নিজস্ব চিত্র

কিংশুক গুপ্ত
বেলপাহাড়ি শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৮ ০৬:৫৫
Share: Save:

পঞ্চায়েত ভোটের কয়েকদিন আগে খোদ মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে জানিয়েছিলেন, বাঁশপাহাড়ির মতো জঙ্গলমহলের কিছু এলাকায় তাঁর দলকে প্রার্থী দিতে দেওয়া হয়নি। তিনি স্বীকার করে নিয়েছিলেন, সংরক্ষণের ফলে কয়েক জায়গায় তৃণমূল উপযুক্ত তফসিলি জাতি, জনজাতির প্রার্থী খুঁজে পায়নি।

সোমবার সকালে বাঁশপাহাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের কাঁকড়াঝোর, আমলাশোল, চাকাডোবাতে দেখা গেল, খাঁ-খাঁ করছে তৃণমূলের বুথ ক্যাম্প। অথচ কিছুটা দূরে আদিবাসী সমন্বয় মঞ্চের নির্দল প্রার্থীর ক্যাম্পে বুথ স্লিপ নেওয়ার জন্য ভোটারদের ভিড়। শিমূলপাল ও ভুলাভেদা-সহ বেলপাহাড়ি ব্লকের একদা মাওবাদী প্রভাবিত এলাকা জুড়েই ছিল এক ছবি। বিজেপির বুথ ক্যাম্পও ছিল। তবে এলাকায় কার্যত ভোট নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় ছিলেন আদিম আদিবাসী সমন্বয় মঞ্চের নির্দল প্রার্থীদের লোক। প্রতিটি বুথের অদূরে আদিবাসী সমাজের বুথ ক্যাম্প ছিল। সেখানে উড়েছে সাঁওতাল, মুন্ডা ও ভূমিজ আদিবাসী সমাজের আলাদা পতাকা। প্রতিটি ক্যাম্পে ‘সমাজে’র নিয়ম মেনে পোঁতা ছিল শালগাছের ডাল।

আমলাশোলে অনাহারের কথা স্বীকার করে যিনি হই চই ফেলে দিয়েছিলেন সেই প্রাক্তন সিপিএম পঞ্চায়েত সদস্য কৈলাস মুড়াকেও পাওয়া গেল আদিবাসী মঞ্চের বুথ ক্যাম্পে। তিনি বলেন, ‘‘সমাজের নির্দল প্রার্থীদের জেতানোর জন্য সকলে মিলে চেষ্টা করছি।”

ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া শিমূলপাল পঞ্চায়েতের ধবাকাচা প্রাথমিক বিদ্যালয় বুথের কাছে তৃণমূলের প্রায় ফাঁকা বুথ ক্যাম্পে বসেছিলেন গুটিকয় দলীয় কর্মী। সেখানেই পাওয়া গেল গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রার্থী পরেশচন্দ্র হেমব্রমকে। তাঁর নালিশ, “সব আদিবাসী জনগোষ্ঠী একজোট হয়ে সামাজিক ফতোয়া দিয়েছে। সমাজের ভয়ে ভোটাররা নির্দল প্রার্থীর বুথ ক্যাম্পে যাচ্ছেন। আমাদের ভোটাররা চাপের মুখে ওই ক্যাম্পে গেলেও ভোটটা আমাদেরই দেবেন।” তাঁর অভিযোগ, ‘‘প্রাক্তন জনগণের কমিটি ও প্রাক্তন মাওবাদীদের লোকজন মিলে আদিবাসী সমাজকে হাতিয়ার করে গ্রামে গ্রামে ভোটারদের ভয় দেখিয়ে নির্দল প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য কার্যত বাধ্য করছে।” যদিও আদিবাসী সমাজের বুথ ক্যাম্পের কর্মী সুনীল হাঁসদা, নকুল সিংহ বললেন, ‘‘পাঁচ বছরে উন্নয়নের নামে পঞ্চায়েতে যে দুর্নীতি ও লুট হয়েছে, তাতে মানুষ বীতশ্রদ্ধ।’’ আদিবাসী সমন্বয় মঞ্চের নেতা ধর্মাল মান্ডির দাবি, “ব্যালট বাক্স বদলে না দেওয়া হলে বেলপাহাড়ি থেকেই বদলের সূচনা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE