Advertisement
E-Paper

প্রতীক কেন অন্য হাতে, দেখছে তৃণমূল

তৃণমূলের প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়ায় কিছু ‘ফাঁক’ ছিল বলেই কি আলাদা শক্তি হিসাবে ধরা পড়েছে নির্দলদের জয়? পঞ্চায়েত ভোটের ফল বিশ্লেষণে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে শাসকদল। নেতৃত্বের একাংশের ব্যাখ্যা, দল নয়। অনেক জায়গায় দলের প্রতীকে দাঁড়ানো প্রার্থী পছন্দ না হওয়ায় সেখানে নির্দল হিসাবে দাঁড়ানো দলেরই বিক্ষুব্ধরা জায়গা করে নিয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৮ ০৩:৫৪

তৃণমূলের প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়ায় কিছু ‘ফাঁক’ ছিল বলেই কি আলাদা শক্তি হিসাবে ধরা পড়েছে নির্দলদের জয়?

পঞ্চায়েত ভোটের ফল বিশ্লেষণে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে শাসকদল। নেতৃত্বের একাংশের ব্যাখ্যা, দল নয়। অনেক জায়গায় দলের প্রতীকে দাঁড়ানো প্রার্থী পছন্দ না হওয়ায় সেখানে নির্দল হিসাবে দাঁড়ানো দলেরই বিক্ষুব্ধরা জায়গা করে নিয়েছেন।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে দলীয় নেতৃত্ব দেখেছেন, মনোনয়নের দলীয় সিদ্ধান্ত না মানার ঘটনা ঘটেছে অনেক। নেতৃত্বের বাছাই করা প্রার্থীদের বদলে দলের প্রতীক চলে গিয়েছে অন্য হাতে। সেই কারণে বহু জায়গায় বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়ে দলের ফল খারাপ হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে হারতেও হয়েছে। দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কেন এই সব জায়গায় প্রতীক বিলি হয়নি, তা জানতে সাংগঠনিক স্তরে তদন্ত শুরু হয়েছে। এই অনিয়মের কারণেই আতসকাচের নীচে আছেন একাধিক জেলা সভাপতি ও প্রতীক বিলির দায়িত্বে থাকা একাধিক নেতা। দলের এক রাজ্য নেতার কথায়, ‘‘প্রতীক বিলিতে অনিয়ম হয়েছে। তাতে দায়িত্বপ্রাপ্তদের ভূমিকা দেখতে হবে। কোথাও গোষ্ঠী বা অন্য কোনও ব্যক্তিগত স্বার্থের বিনিময়ে প্রতীক বিলি হয়ে থাকলে দল পদক্ষেপ করবে।’’

দলের টিকিট প্রত্যাশী প্রায় ১৪ হাজার অতিরিক্ত মনোনয়ন জমা পড়ায় গোড়া থেকেই উদ্বেগে ছিল তৃণমূল। সর্বশক্তিতে নেমেও তা পুরোপুরি প্রত্যাহার করাতে পারেননি দলীয় নেতৃত্ব। মনোনয়নপর্বে এইরকম কিছু ‘অনিয়ম’ নজরে আসায় চিঠি দিয়ে নির্দিষ্ট দলীয় প্রার্থী ছাড়া অন্য দাবিদার প্রার্থীর প্রতীক বাতিল করার সিদ্ধান্তও হয়েছিল। কিন্তু দলের সেই নির্দেশও অনেক জেলা সভাপতি বা ভারপ্রাপ্ত নেতৃত্ব মানেননি বলে অভিযোগ। ফলে অনেক ক্ষেত্রে দলের মনোনীত প্রার্থীকে প্রতীক দেওয়া যায়নি। নির্দল হয়ে লড়ে তিনি প্রতীকধারী তৃণমূলকে হারিয়েছেন। এই ভাবে জয়ী নির্দলদের এখন আবার দলে ফেরানোর যে চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে, তার পিছনে এটাই দলের শীর্ষমহলের ব্যাখ্যা।

যদিও দলেরই একাংশ মনে করেন, আসলে ‘নির্দল কাঁটা’ নির্মূল করার জন্য বিক্ষুব্ধ তৃণমূলদের দলে ফেরাতে এই যুক্তি খাড়া করা হচ্ছে। কারণ বিক্ষুব্ধ তৃণমূল বলে যাঁদের চিহ্নিত করা হয়, তাঁদের একটি ব়ড় অংশ দলের পুরনো কর্মী। অর্থাৎ আদি তৃণমূল। তাঁদের মূলস্রোত থেকে আলাদা রাখলে যে সমস্যা হবে পঞ্চায়েত ভোটে তার ইঙ্গিত মিলেছে।

ঝাড়গ্রাম ও পুরুলিয়ার জঙ্গলমহলে কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি বিজেপি দখল করেছে। কিন্তু জেলা পরিষদগুলি রয়েছে তৃণমূলেরই হাতে। পুরুলিয়ায় জেলা পরিষদের ৩৮ আসনের মধ্যে তৃণমূল ২৫, বিজেপি ১০। ঝাড়গ্রামে জেলা পরিষদের ১৬ টি আসনের মধ্যে বিজেপি জিতেছে মাত্র তিনটিতে। বাকি ১৩ টিই তৃণমূল। এই অবস্থায় তৃণমূলের নীচুতলার সাংগঠনিক অবস্থা নিয়ে শীর্ষনেতারা উদ্বিগ্ন হলেও তাঁদের দাবি, স্থানীয় স্তরে নির্বাচনে রাজনীতির চেয়েও অন্যান্য বিষয় বহু ক্ষেত্রে বড় হয়। না-হলে জেলা পরিষদে তৃণমূলের এত ব্যাপক জয় হত না।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য আদিবাসী এলাকায় গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপির ফলের পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই দাবি করেছেন লোকসভায় তাঁরা রাজ্যে ৪২ আসনের মধ্যে কমপক্ষে ২২ এমনকি ৩২-৩৪ আসনও পেতে পারেন। শনিবার মেদিনীপুর শহরে তিনি বলেন, ‘‘শুধু ট্রেলার দেখিয়েছি। পুরো ফিল্ম লোকসভায় দেখাব।’’ তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ‘‘কিসের ভিত্তিতে উনি এ সব প্রলাপ বকছেন বুঝতে পারছি না। ভোট হলেই টের পাবেন, কত ধানে কত চাল!’’

West Bengal Panchayat Elections 2018 TMC Independent Candidate Candidate Selection Ticket তৃণমূল
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy