E-Paper

জল নিয়ে গবেষণায় বিদেশি স্বীকৃতি বাঙালি বিজ্ঞানীর

জল সংক্রান্ত এমনই নানাবিধ গবেষণার স্বীকৃতিস্বরূপ জিয়োলজিক্যাল সোসাইটি অব আমেরিকার ‘জর্জ বার্ক ম্যাক্সে ডিস্টিংগুইশড সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন অভিজিৎ। এশিয়ার বাসিন্দাদের মধ্যে এই বাঙালি বিজ্ঞানীই প্রথম এই পুরস্কার পেয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:২৯
ভূবিজ্ঞানের অধ্যাপক অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেছেন,ভূগর্ভের জল না বাঁচালে আগামী কয়েক দশকে গঙ্গার পঞ্চত্বপ্রাপ্তি ঠেকানো মুশকিল।

ভূবিজ্ঞানের অধ্যাপক অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেছেন,ভূগর্ভের জল না বাঁচালে আগামী কয়েক দশকে গঙ্গার পঞ্চত্বপ্রাপ্তি ঠেকানো মুশকিল। —ফাইল চিত্র।

শুকনো মরসুমে প্রায়ই গঙ্গার জলস্তর নেমে যেতে দেখা যায়। বহুজায়গায় কার্যত নদীগর্ভের পলি বেরিয়ে আসে। এই শুষ্কতার পিছনে যে গঙ্গা তীরবর্তী এলাকায় নির্বিচারে ভূগর্ভের জল উত্তোলনই দায়ী, সে কথা উঠে এসেছিল খড়্গপুর আইআইটি-র ভূবিজ্ঞানের অধ্যাপক অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়ের গবেষণায়। তিনি বলেছেন,ভূগর্ভের জল না বাঁচালে আগামী কয়েক দশকে গঙ্গার পঞ্চত্বপ্রাপ্তি ঠেকানো মুশকিল। গবেষণায় এ-ও উঠে এসেছে যে, গঙ্গা তীরবর্তী এলাকায় এই পরিস্থিতি তৈরি হলেও বিদর্ভ, গুজরাতের মতো কিছুএলাকায় উপযুক্ত পদক্ষেপের ফলে ভূগর্ভের জলের ভান্ডার বাড়ছে! এই আকালেও যা আশার আলো দেখায়।

জল সংক্রান্ত এমনই নানাবিধ গবেষণার স্বীকৃতিস্বরূপ জিয়োলজিক্যাল সোসাইটি অব আমেরিকার ‘জর্জ বার্ক ম্যাক্সে ডিস্টিংগুইশড সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন অভিজিৎ। এশিয়ার বাসিন্দাদের মধ্যে এই বাঙালি বিজ্ঞানীই প্রথম এই পুরস্কার পেয়েছেন। আন্তর্জাতিক স্তরে হাইড্রোজিয়োলজি শাখায় প্রথম সারির পুরস্কার হিসাবেই গণ্য হয় জর্জ বার্ক ম্যাক্সে ডিস্টিংগুইশড সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড। প্রসঙ্গত, খড়্গপুর আইআইটি-র ভূতত্ত্ব এবং ভূ-পদার্থবিদ্যা বিভাগের এইঅধ্যাপক ২০২০ সালে দেশের বিজ্ঞান গবেষণার সর্বোচ্চ স্বীকৃতি ‘শান্তিস্বরূপ ভাটনাগর পুরস্কার’ও পেয়েছিলেন।

অভিজিৎ বলছেন, পশ্চিমবঙ্গ-সহ গোটা উপমহাদেশেই জলের সঙ্কট বড় বিষয়। তার উপরে রয়েছে আর্সেনিক, ফ্লুয়োরাইডের মতো বিষাক্ত রাসায়নিকের দূষণ। সম্প্রতি এই তালিকায় জুড়েছে ইউরেনিয়াম দূষণও। এ ছাড়াও, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নির্বিচারে ভূগর্ভের জল উত্তোলনের জেরেও জলের ভান্ডার ক্রমশ কমছে।তাতে জনজীবন যেমন ব্যাহত হচ্ছে, তেমনই সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়ছে দেশের নদীগুলির উপরেও। এই ভূবিজ্ঞানীর ব্যাখ্যা, নদী যেমনতার উৎস থেকে জল বয়ে নিয়ে আসে, তেমনই নদীর নিরবচ্ছিন্ন জলধারার উৎস হিসাবে ভূগর্ভের জলের গুরুত্ব আছে। গঙ্গার উপরে গবেষণায় দেখা গিয়েছে, তীরবর্তী এলাকায় নির্বিচারে জল তোলার ফলে ভূগর্ভের জলের ভান্ডার তো কমছেই, উপরন্তু নদীর বয়ে আনা জলও ভূগর্ভে চলেযাচ্ছে। তার ফলে নদী শুকিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি ইসরোর সঙ্গে একটি যৌথ গবেষণায় দেখা গিয়েছে, দেশের অন্যান্য নদীর ক্ষেত্রেও একই প্রভাব পড়ছে।

এই প্রসঙ্গেই বিদর্ভ, অন্ধ্র, গুজরাতের কিছু এলাকায় ভূগর্ভের জলের ভান্ডার বৃদ্ধি পেয়েছে। অভিজিতের মতে, ১০০দিনের কাজের প্রকল্পে বিভিন্ন এলাকায় পুকুর খোঁড়ার ফলে জল সঞ্চিত হয়ে ভূগর্ভের জলের ভান্ডার বৃদ্ধি হয়েছে। তাই ঠিক মতো পরিকল্পনা করে এগোলে ভূগর্ভের জলের ভান্ডার ভরিয়ে তোলা সম্ভব।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

water IIT Research Bengali Scientists

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy