—ফাইল চিত্র।
কাজ চলছে জোরকদমে।
এতটাই যে, নতুন করে আর কোনও রকম বাধাবিপত্তি না-এলে ডিসেম্বরের শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশনের সাবস্টেশনের সঙ্গে ভাঙড়ের হাইটেনশন লাইনের বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়ার কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে বিদ্যুৎ সূত্রের খবর। প্রাথমিক ভাবে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রক এবং রাজ্য প্রশাসনকে এটা জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। সংযোগের পরে ২০১৯ থেকেই ওই গ্রিড লাইন দিয়ে রাজ্যে বিদ্যুৎ আনতে আর কোনও সমস্যা থাকবে না। ইংরেজি নতুন বছরে বঙ্গবাসীর কাছে যা অত্যন্ত সুখবর হবে বলে আশা বিদ্যুৎকর্তাদের।
বিদ্যুৎ সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্ষোভ-বিক্ষোভ, আন্দোলনের জেরে ভাঙড় সাবস্টেশন ঠিক সময়ে চালু করা যায়নি। ফলে সাবস্টেশনের কিছু যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। গ্রিডের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ারেরা সেগুলি দ্রুত বদলে ফেলছেন। এই কাজে অতিরিক্ত ২৫-৩০ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা মিলিয়ে সাতটি টাওয়ারে ১০ কিলোমিটারের মতো হাইটেনশন লাইন টানার কাজ এখনও বাকি। সেটা শেষ হয়ে গেলেই জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে ভাঙড় সাবস্টেশনের সরাসরি বিদ্যুৎ-সংযোগ স্থাপিত হবে।
রাজ্যে পাওয়ার গ্রিডের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্তা জানাচ্ছেন, ভাঙড় সাবস্টেশনের খারাপ যন্ত্রাংশ পরিবর্তন এবং পরীক্ষার কাজ দ্রুত চলছে। চাষের জমিতে ধান, জল থাকায় লাইন টানতে কিছু সময় লাগছে। তবে ডিসেম্বরের শেষে যাবতীয় কাজ শেষ করে ফেলার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করছেন তাঁরা।
বিহারের পূর্ণিয়া থেকে হাইটেনশন লাইন টেনে আনা হচ্ছে ফরাক্কায়। সেখান থেকে মুর্শিদাবাদের গোকর্ণ হয়ে ভাঙড়ের সাবস্টেশন পর্যন্ত আসছে ওই লাইন। এই প্রকল্পে খরচ হচ্ছে প্রায় ১,১০০ কোটি টাকা। তার মধ্যে ভাঙড় সাবস্টেশনের জন্য ৩০০ কোটি টাকা আগেই খরচ হয়ে গিয়েছে। ওই সাবস্টেশন চালু হলে উপকৃত হবেন রাজারহাট, নিউ টাউন, সল্টলেক, কলকাতা এবং দুই ২৪ পরগনার কয়েক লক্ষ বিদ্যুৎগ্রাহক। রাজ্যের লাইনে বিদ্যুৎ সংবহনের ক্ষমতাও বাড়বে প্রায় ৩০০০ মেগাওয়াট। এর ফলে ভবিষ্যতে রাজ্যে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়লে তা সামাল দিতে কোনও সমস্যা হবে না। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলি থেকে সস্তার জলবিদ্যুৎও এই গ্রিডের মাধ্যমে আরও বেশি করে পশ্চিমবঙ্গে আনা যাবে। অন্য রাজ্যকে উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ বিক্রি করাও সহজ হবে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের আপত্তি-আন্দোলনের জেরে ২০১৭ সালের শুরুর দিকে ভাঙড় গ্রিডের কাজ দফায় দফায় বন্ধ হয়ে যায়। আন্দোলনকারীদের অন্যতম অভিযোগ ছিল জমির দাম এবং পরিবেশ-দূষণ নিয়ে। গত বছর জানুয়ারিতে আন্দোলনকারীদের প্রবল বিক্ষোভে গুলি চালানোর মতো ঘটনাও ঘটে। তাতে দু’জনের মৃত্যু হয়। তার পরেই কার্যত বন্ধ হয়ে যায় ভাঙড় সাবস্টেশনের সঙ্গে পাওয়ার গ্রিডের লাইনের সংযোগ স্থাপনের কাজ। শেষে রাজ্য সরকারের মধ্যস্থতায় এ বছরের মাঝামাঝি স্থানীয় গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে চুক্তি হয়। গ্রিডের কাজ ফের শুরু হয় অগস্টে। সেই কাজ এ বার শেষের পথে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy