Advertisement
E-Paper

নয়ডায় ‘থানা’ খুলে প্রতারণা! নিয়োগ মামলায় নাম জড়ানো বীরভূমের সেই বিভাস গ্রেফতার, ধৃত তাঁর পুত্র-সহ আরও পাঁচ

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁর নাম জড়িয়েছিল। ইডি-সিবিআইয়ের ডাকে বেশ কয়েক বার হাজিরাও দিয়েছিলেন। বীরভূমের সেই বিভাস অধিকারী এ বার গ্রেফতার নয়ডায়।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০২৫ ১৯:৩০
বিভাস অধিকারী।

বিভাস অধিকারী। —ফাইল চিত্র।

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁর নাম জড়িয়েছিল। ইডি-সিবিআইয়ের ডাকে বেশ কয়েক বার হাজিরাও দিয়েছিলেন। বীরভূমের সেই বিভাস অধিকারী এ বার গ্রেফতার নয়ডায়। অভিযোগ, ভুয়ো অফিস খুলে প্রতারণাচক্র চালাচ্ছিলেন তিনি। সেই অফিসের নাম— ‘ইন্টারন্যাশনাল পুলিশ অ্যান্ড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন’!

শুধু বিভাসই নয়, তাঁর পুত্র অর্ঘ্য অধিকারীও গ্রেফতার হয়েছেন। এ ছাড়া গ্রেফতার আরও চার জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তাঁদের কাছ থেকে তিনটি মোবাইল ফোন, তিনটি পৃথক ব্যাঙ্কের চেকবই, ১৬টি রাবার স্ট্যাম্প, একটি স্ট্যাম্প প্যাড, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ন’টি আইডি কার্ড, তিনটি ভিজ়িটিং কার্ড, শংসাপত্র, লেটারহেড, একাধিক এটিএম কার্ড এবং ৪২,৩০০ টাকা নগদ অর্থ উদ্ধার হয়েছে।

প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় যুব তৃণমূলের প্রাক্তন নেতা কুন্তল ঘোষ (বর্তমানে জামিনে মুক্ত) গ্রেফতার হওয়ার পর বিভাসের নাম উঠে এসেছিল। বস্তুত, রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তৃণমূল বিধায়ক তথা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের গ্রেফতারির পর থেকে বিভাসের নাম পেয়েছিলেন তদন্তকারীরা। এক সময় বেসরকারি বিএড এবং ডিএলএড কলেজ সংগঠনের সভাপতি ছিলেন নলহাটির ওই বাসিন্দা। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিকের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলেও পরিচিত ছিলেন তিনি।

নয়ডায় গ্রেফতার বিভাস অধিকারী এবং তাঁর সঙ্গীরা।

নয়ডায় গ্রেফতার বিভাস অধিকারী এবং তাঁর সঙ্গীরা। ছবি: সংগৃহীত।

মানিকের গ্রেফতারির পর পরেই ইডি আধিকারিকেরা উত্তর কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিটে একটি ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়েছিলেন। সেই ফ্ল্যাটের সঙ্গে বিভাসের যোগ রয়েছে বলে দাবি করেছিল ইডি। তল্লাশি অভিযানের পর সেই ফ্ল্যাট সিলও করে দেওয়া হয়। তার আগে বীরভূমে বিভাসের বাড়ি এবং আশ্রমে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল সিবিআই। এক সময় নলহাটি-২ ব্লকে তৃণমূলের সভাপতি ছিলেন এককালে অনুব্রত মণ্ডলের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত বিভাস। গরু পাচার মামলায় অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পরেই তৃণমূল ছেড়ে দেন তিনি। তার পর ‘অল ইন্ডিয়া আর্য মহাসভা’ নামে একটি নতুন দলও তৈরি করেছিলেন।

গোপন সূত্রে খবর পেয়ে শনিবার রাতে নয়ডার সেক্টর ৭০-এ বিএস-১৩৬ নম্বর বাড়িতে হানা দিয়েছিল পুলিশ। সেখান থেকেই গ্রেফতার হন বিভাসেরা। পুলিশ জানিয়েছে, ওই বাড়িতেই ভুয়ো থানা তৈরি করে প্রতারণাচক্র চালাতেন ধৃতেরা। নিজেদের সরকারি আধিকারিক বলে পরিচয় দিতেন। সেই সঙ্গে ভুয়ো পরিচয়পত্র এবং নথি দেখিয়ে তোলাবাজির কারবার চালাতেন তাঁরা। কেন্দ্রের বিভিন্ন মন্ত্রকের সঙ্গে সম্পর্কিত জাল নথিও মিলেছে তাঁদের কাছ থেকে। পাশাপাশিই ধৃতেরা দাবি করতেন, তাঁদের ব্রিটেনেও অফিস রয়েছে। ইন্টারপোল এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশনের সঙ্গেও যোগাযোগ রয়েছে তাঁদের। পুলিশের দাবি, এই নথি দেখিয়েই অভিযুক্তেরা মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করতেন।

নয়ডার ডিসিপি সেন্ট্রাল শক্তিমোহন অবস্তি বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগেই ওই ভুয়ো অফিস খুলেছিলেন অভিযুক্তেরা। দিন দশেক আগেই অফিসের বাইরে থানার মতো বোর্ড লাগানো হয়েছিল।’’

পুলিশ জানিয়েছে, বিভাস সম্প্রতি নয়ডাতেই থাকছিলেন। তাঁর ছেলে অর্ঘ্য আইন পাশ করেছেন। বাকি ধৃতেরা— বাবুলচন্দ্র মণ্ডল, পিন্টু পাল, সমাপদ মাল, আশিস কুমার সকলেই পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। তাঁদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, তথ্যপ্রযুক্তি আইনের একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। ধৃতদের আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। বিচারক বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

Bibhas Adhikari Anubrata Mondal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy