Advertisement
E-Paper

বিনয়ের কাজ কোথায়, প্রচার গুরুঙ্গপন্থীদের

গুরুঙ্গপন্থীরা বলছেন, প্রথমত, দার্জিলিং, কার্শিয়াং পুরসভা ‘দখল’ বলে দাবি করেও কেন দু’জায়গার পরিষেবায় গতি আনতে পারছেন না বিনয়-অনীত? দ্বিতীয়ত, পাহাড়ের গ্রামে গ্রামে সফরও করতে যাচ্ছেন না তাঁরা। তারই বা কারণ কী?

কিশোর সাহা

শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৪৮
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রশনের (জিটিএ) কেয়ারটেকার বোর্ড গঠনের পরে এক মাস কেটে গিয়েছে। এই সময়ে বিনয় তামাঙ্গ-অনীত থাপা জুটির নেতৃত্বে থাকা বোর্ড কী কাজ করেছে, সেই প্রশ্ন তুলে চুপিসাড়ে পাহাড়ে প্রচারে নেমেছেন বিমল গুরুঙ্গ অনুগামীরা। যে কথা জানতে পেরে সোমবারই তড়িঘড়ি অফিসারদের নিয়ে বৈঠক করেন বিনয়-অনীত। চলতি সপ্তাহেই তাঁরা পাহাড়ের নানা এলাকা পরিদর্শনে যাবেন এবং জনসভাও করবেন, জানানো হয়েছে বিনয়ের ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে।

গুরুঙ্গপন্থীরা বলছেন, প্রথমত, দার্জিলিং, কার্শিয়াং পুরসভা ‘দখল’ বলে দাবি করেও কেন দু’জায়গার পরিষেবায় গতি আনতে পারছেন না বিনয়-অনীত? দ্বিতীয়ত, পাহাড়ের গ্রামে গ্রামে সফরও করতে যাচ্ছেন না তাঁরা। তারই বা কারণ কী? তৃতীয়ত, কালিম্পঙে এক বার ঘুরে এসেছেন দু’জনই। কিন্তু সেখানকার পরিষেবা নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও উচ্চবাচ্য নেই তাঁদের। তা হলে কি সুবাস ঘিসিঙ্গ, বিমল গুরুঙ্গের মতো দার্জিলিঙে বসেই তাঁরা কালিম্পং শাসন করতে চান?

এই চাপের মুখে কেয়ারটেকার বোর্ডের চেয়ারম্যান বিনয় তামাঙ্গ ও ভাইস চেয়ারম্যান অনীত থাপা এ দিনই অফিসারদের নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানে পুরসভার কাজকর্মে গতি আনতে নবান্নের সহযোগিতা চেয়ে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। চলতি সপ্তাহ থেকে পাহাড় পরিদর্শনেরও
কর্মসূচি নিচ্ছেন তাঁরা। এ দিন দার্জিলিঙে বিনয় বলেন, ‘‘অপপ্রচারে পাহাড়বাসী কান দেবেন না। দার্জিলিং ও কার্শিয়াং, দুই পুরসভার চেয়ারম্যান জেলে রয়েছেন। ফলে, সেই শূন্যস্থান পূরণ করতে সরকারি ভাবে একটা প্রক্রিয়া জরুরি। তাই রাজ্যকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে।’’ সেই সঙ্গে বিনয়-অনীত জুটি জানান, শীঘ্রই কালিম্পং-সহ জিটিএ-র প্রতিটি নির্বাচনী ক্ষেত্রে সফর করা হবে। জনসভা করে উন্নয়নের রূপরেখা জানিয়ে স্থানীয়দের মতামতের ভিত্তিতে কাজের তালিকাও তৈরি করা হবে।

গত ২০ সেপ্টেম্বর বিনয়কে মাথায় রেখে কেয়ারটেকার বোর্ড গঠন করে রাজ্য। ২৪ সেপ্টেম্বর লালকুঠিতে বিনয় প্রথম বৈঠক করেন। তার পর থেকে এক বার কালিম্পং সফর ছাড়া পাহাড়ের অন্যত্র বিশেষ যাননি দু’জনের কেউই। সেই সুযোগে গুরুঙ্গ শিবির বিনয়-অনীতের প্রশাসনিক দক্ষতা নিয়ে তলে তলে প্রচারে নেমে পড়েছে। গোপন ডেরায় বসে গুরুঙ্গই যে ওই প্রচারে নামার নির্দেশ দিয়েছেন, বলে অনুমান করছে বিনয়-অনীত শিবির।

গুরুঙ্গ-বিরোধী হলেও জিএনএলএফ, গোর্খা লিগ, সিপিআরএমের অনেকেই এখন একই সুরে কেয়ারটেকার বোর্ডের সদিচ্ছা নিয়ে সর্বত্র সমালোচনা শুরু করেছেন। ‘নতুন ঠিকাদার-রাজ’ কায়েমের আশঙ্কাও ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই পাহাড়ের তৃণমূল নেতারা বিনয়-অনীতের বিরুদ্ধে গোপন প্রচারের বিষয়টি দলীয় নেতৃত্বের নজরে এনেছেন। তাঁরাও চাইছেন, কেয়ারটেকার বোর্ড নিয়মিত পাহাড়ের আনাচে-কানাচে ঘুরে দৈনন্দিন সমস্যার সমাধানে নজর রাখুক। না হলে গুরুঙ্গ শিবির ফের শক্তি বাড়িয়ে তাঁদের দলনেতাকে ফেরানোর ক্ষেত্র শক্তপোক্ত করে ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছে তৃণমূলও।

ফলে, প্রশাসনিক দক্ষতা দেখাতে এখন মরিয়া বিনয়-অনীত জুটি। অনীত বলেছেন, ‘‘আমরা জিটিএ-র ৪৫টি নির্বাচনী এলাকার সমস্যার সমাধানের জন্য কয়েক দফায় বৈঠক করেছি। কাজও শুরু করেছি। জঙ্গলে বসে মিথ্যে প্রচার করলে তা পাহাড়বাসী বিশ্বাস করবেন না। কারণ, যাঁরা এ সব বলছেন, তাঁরা অতীতে পাহাড়বাসীদের ঠকিয়েছেন।’’

Bimal Gurung Binay Tamang Darjeeling Morcha GJM বিনয় তামাঙ্গ বিমল গুরুঙ্গ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy