E-Paper

তৃণমূল-বামকে একাসনে রেখে ফের নিশানা বিজেপির

বিহারের গয়া এবং এ রাজ্যে দমদমের সমাবেশ থেকে অনুপ্রবেশ-প্রশ্নে তৃণমূল, কংগ্রেস, বামেদের বিরুদ্ধে ‘তোষণের রাজনীতি’র অভিযোগ তুলেছেন মোদী। দুর্নীতিতে অভিযুক্ত মন্ত্রীদের পদ থেকে সরানোর লক্ষ্যে ১৩০তম সংবিধান সংশোধনী বিল নিয়েও তীব্র কটাক্ষ করেছেন মোদী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০২৫ ০৮:০৫

—প্রতীকী চিত্র।

গত লোকসভা ভোটের আগে বিরোধীদের ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চের সব দলকে এক বন্ধনীতে রেখে আক্রমণ করতেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এ বার বিহার ও পশ্চিমবঙ্গে এসে অনুপ্রবেশ, ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর), সংবিধানের ১৩০তম সংশোধনী বিল-সহ বিভিন্ন বিষয়ে ফের ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চের শরিকদের ফের তোপ দেগেছেন তিনি। তারই সুর ধরে রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস এবং সিপিএমকে এক বন্ধনীতে রেখে আক্রমণের স্বর চড়াচ্ছে বিজেপি। বাংলায় তৃণমূল-বিরোধী ভোটের ভাগ বাম বা কংগ্রেসের বাক্স থেকে নিজেদের দিকে টেনে আনা তাদের লক্ষ্য। বিজেপিকে পাল্টা এক যোগে বিঁধছে তৃণমূল, কংগ্রেস ও সিপিএম।

তারই পাশাপাশি বিজেপি সূত্রে খবর, মোদীর পরে দেবীপক্ষের আগেই রাজ্যে ফের সভা করতে পারেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের পুজো এবং পূর্বাঞ্চলীয় সংস্কৃতি কেন্দ্রের পুজো উদ্বোধনও করতে পারেন তিনি।

বিহারের গয়া এবং এ রাজ্যে দমদমের সমাবেশ থেকে অনুপ্রবেশ-প্রশ্নে তৃণমূল, কংগ্রেস, বামেদের বিরুদ্ধে ‘তোষণের রাজনীতি’র অভিযোগ তুলেছেন মোদী। দুর্নীতিতে অভিযুক্ত মন্ত্রীদের পদ থেকে সরানোর লক্ষ্যে ১৩০তম সংবিধান সংশোধনী বিল নিয়েও তীব্র কটাক্ষ করেছেন মোদী। তাঁর লব্জে পরিচিত ‘ইন্ডি’ শব্দটিও শোনা গিয়েছে। রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের ব্যাখ্যা, এসআইআর ও নতুন বিল নিয়ে সংসদের বাদল অধিবেশনে বিরোধীদের এককাট্টা অবস্থানের পরে রাজ্যে অ-বিজেপি সব দলের ‘আঁতাঁত’কে ভোটের রসদ করতেই এমন কৌশলে ফের শাণ দিতে চাইছেন বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের দাবি, “নিজেদের অস্তিত্ব বাঁচাতে সিপিএমের এম এ বেবি তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েনের হাত ধরেছেন। অভূতপূর্ব দৃশ্য দেখে প্রধানমন্ত্রী নিজেকে সামলাতে পারেননি। আমরা তো বলছি, হাত যখন ধরছেন, তা হলে সরাসরি একসঙ্গে মিছিল করুন। কলকাতার রাস্তায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মহম্মদ সেলিম পাশাপাশি হাঁটুন!’’

রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য অবশ্য বলেছেন, “একটা বিল এনেছে, হঠাৎ কাউকে পছন্দ না-হলে গ্রেফতার করে ৩০ দিন ছাড়া হবে না। উদ্দেশ্য সাধু হলে, ২০০০ সালের আগে থেকে কার্যকর করুন! সেটা হলে আজকে কেন্দ্রে যাঁরা মন্ত্রী, তাঁদের মন্ত্রিত্ব ছাড়তে হবে। বিলটির মাধ্যমে আসলে বিচার-ব্যবস্থাকে নিষ্ক্রিয় করতে চায় বিজেপি।” সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর মতে, ‘‘অজিত পওয়ারের মতো অনেককে বিজেপি ওয়াশিং মেশিনে সাফ করে নিয়েছে! আর তৃণমূলের মদন মিত্র, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের মতো দুর্নীতির অভিযোগে জেলে গিয়েও কিছু দিন মন্ত্রী থেকেছেন। দুর্নীতি নিয়ে কথা বলা ওই দু’দলের সাজে না! দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়তে হলে মোদীর সরকারের কেন্দ্রীয় সংস্থা সারদা বা নারদ-কাণ্ডে তদন্ত সম্পূর্ণ করতো, সংসদে এথিক্স কমিটির বৈঠক ডাকতো।’’

এই প্রশ্নে বিজেপিকে বিঁধে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধীর চৌধুরীরও সংযোজন, “কেন্দ্র আগে সিবিআই, ইডি-কে স্বাধীনতা দিক। প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের বিরুদ্ধে কোনও সিবিআই-ইডি আধিকারিকের, বাংলার মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে রাজ্যের পুলিশের পদক্ষেপ করার সাহস হবে? এটা করতে পারত লোকপাল ও লোকায়ুক্ত। আজ তার অস্তিত্ব নেই।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

BJP TMC CPM PM Narendra Modi

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy