Advertisement
E-Paper

মুকুলের ভূমিকা ‘বড়’ কিছু নয়, বোঝাচ্ছে বিজেপি

মুকুল-সহ গোটা দল এবং রাজ্যবাসীর কাছে এই বার্তা দেওয়াই এখন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উদ্দেশ্য। যে কারণে এখনই মুকুলকে জাতীয় নেতার পদমর্যাদা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৫৬

দলে নেওয়ার পর এখন মুকুল রায়কে কী ভাবে ‘হজম’ করা হবে, সেটা নিয়েই চিন্তিত বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ শুক্রবারই বুঝিয়ে দিয়েছেন, মুকুল এত দিন আঞ্চলিক দল তৃণমূলের সর্বভারতীয় নেতা ছিলেন। এ বার তিনি সর্বভারতীয় দল বিজেপি-র আঞ্চলিক নেতা হলেন। মুকুল-সহ গোটা দল এবং রাজ্যবাসীর কাছে এই বার্তা দেওয়াই এখন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উদ্দেশ্য। যে কারণে এখনই মুকুলকে জাতীয় নেতার পদমর্যাদা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। এমনকী, শনিবার দিলীপবাবু আরও এক ধাপ এগিয়ে বলেছেন, “বিজেপিতে আসতে হলে কেউ মুকুল রায়ের হাত ধরবেন কেন? আমার হাত ধরেই সকলে বিজেপিতে আসবেন।”

বস্তুত, দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ভালই জানেন, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একদা ঘনিষ্ঠ এবং তৃণমূলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মুকুলের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সঙ্গে রাজ্য বিজেপি-র দীর্ঘ দিনের নেতাদের ‘ক্ষমতা’ ও ‘দক্ষতা’র টক্কর হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা। তৃণমূলে আদি ও নব-র যে লড়াই মুকুল উস্কে দিতে চেয়েছিলেন, এ বার বিজেপি-তে তিনি নিজেই সেই লড়াইয়ের মুখোমুখি হবেন, এমনটাও দলের মধ্যে অনেকেরই ধারণা।

আরও পড়ুন: গা ছাড়া কেন, নেতাদের প্রশ্ন করলেন অভিষেক

ফলে কেউ যাতে মুকুলকে এখনই ‘কেউকেটা’ না ভাবেন, সে জন্য বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব শুরু থেকেই সতর্ক। তাঁরা বোঝাতে চাইছেন, তৃণমূলত্যাগী এই ‘নবাগত’ নেতাকে কাজ করতে হবে রাজ্য সভাপতি দিলীপবাবু, কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহদের অধীনেই। না হলে দলে ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে, যা বাঞ্ছনীয় নয়। মুকুল নিয়ে দিলীপবাবুর বক্তব্যের পিছনে সেটাই কৌশল।

মুকুলও অবশ্য পরিস্থিতি বিবেচনা করে ধীরে চলার পথ বেছেছেন। আগামী ১০ তারিখ বিজেপি-র সভা রয়েছে ধর্মতলায়। আত্মপ্রকাশের মঞ্চ হিসাবে আপাতত ওই সভাকেই পাখির চোখ করেছেন তিনি। তবে কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্তের পরামর্শে আজ, রবিবার রাজনাথ সিংহ, নিতিন গডকড়ীর মতো বর্ষীয়ান নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে পুরনো সম্পর্ক ঝালিয়ে নিতে চান মুকুল। সোমবার কলকাতায় ফিরে দলের সদর দফতরে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। তবে তা সৌজন্যমূলক। তাঁর বাসনা, আগামী ১০ নভেম্বরের সভায় নেতা হিসাবে কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে দল যেন তাঁকে আনুষ্ঠানিক ভাবে পরিচয় করিয়ে দেয়। শেষ পর্যন্ত তাঁর সেই আকাঙ্ক্ষা কতটা এবং কী ভাবে পূর্ণ হবে, এখনও তা স্পষ্ট নয়। এরই মধ্যে এ দিন খড়গপুরে দিলীপবাবু বলে রেখেছেন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য খিচুড়ি তৈরি রয়েছে। মুকুল রায় সেখানে শুধু ঘি হিসাবে কাজ করবেন।”

দিল্লিতে তাঁর বাড়িতে মুকুল এ দিন তাঁর ঘনিষ্ঠ কর্মী-সমর্থকদের জন্য ভুরিভোজের ব্যবস্থা রেখেছিলেন। ভিড়ের অধিকাংশই কাঁচরাপাড়ার। মেনু ছিল রীতিমতো আমিষ। নেহাত খিচুড়ি নয়। দৃশ্যত ফুরফুরে মেজাজে ভিড়ের মধ্যে চেনা মুখ দেখলেই তিনি অনুরোধ করছিলেন খেয়ে যেতে। মুকুলের আমন্ত্রণে আজ তাঁর বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ করতে যান স্বপনবাবু। বিকেলে দিল্লির বিজেপি সভাপতি মনোজ তিওয়ারিকে নিয়ে মুকুলের বাংলোতে যান কৈলাস।

Dilip Ghosh Mukul Roy BJP TMC দিলীপ ঘোষ বিজেপি মুকুল রায়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy