Advertisement
E-Paper

বীরভূমের হৃদয়-নিমাইকে বহিষ্কারই করল বিজেপি

লোকসভা ভোটের পরে ‘মিস্‌ড কল’ দিয়ে বিজেপি-র সদস্য হয়েছিলেন বীরভূমের পাড়ুইয়ের হৃদয় ঘোষ এবং নিমাই দাস। বিধানসভা ভোটের আগে তাঁদের লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল!

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৫ ০৩:১২

লোকসভা ভোটের পরে ‘মিস্‌ড কল’ দিয়ে বিজেপি-র সদস্য হয়েছিলেন বীরভূমের পাড়ুইয়ের হৃদয় ঘোষ এবং নিমাই দাস। বিধানসভা ভোটের আগে তাঁদের লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল!

সাগর ঘোষ হত্যার সিবিআই তদন্তের দাবি থেকে সরে এসে তৃণমূলে ফেরায় তাঁর পুত্র হৃদয় এবং নিমাই দাসকে ৬ বছরের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিজেপি। সোমবার দলের রাজ্য নেতৃত্বের বৈঠকে দু’জনকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ মঙ্গলবার জানান। রাহুলবাবুর কথায়, ‘‘শুনেছি, বিধায়ক হওয়ার স্বপ্ন এবং আরও নানা উপঢৌকনের প্রলোভন ওদের দেখানো হয়েছে। সামান্য লাভের জন্য যারা তৃণমূলের দালালি করে, বিজেপি-তে তাদের ঠাঁই নেই, এই বার্তা দিতেই ওদের বহিষ্কার করা হল! চিঠিও চলে গিয়েছে ওই দু’জনের কাছে।’’ সাগর-হত্যার সিবিআই তদন্তের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে যে মামলা চলছে, তা থেকে হৃদয়বাবু সরে এলেও মামলা চলবে বলে জানান রাহুলবাবু। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি-ও ওই মামলার অংশীদার। হৃদয়বাবু চাইলেই মামলা বন্ধ হবে না। আমরা বিচারপতির কাছে জানিয়েও দিয়েছি, এটা একটা পরিবারের বিষয় নয়। রাজ্যবাসী ওই হত্যার রহস্য জানতে চায়।’’


সাত্তোরের নির্যাতিতার সঙ্গে বিজেপি নেতারা। (ডান দিক থেকে) কৈলাস বিজয়বর্গীয়, সিদ্ধার্থনাথ সিংহ, জয় বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাহুল সিংহ।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার আনন্দবাজার পত্রিকায় সিবিআই তদন্তের দাবিতে মামলাকারী হিসাবে হৃদয়বাবুর পরিবর্তে ভুলবশত সাগরবাবু লেখা হয়েছিল। সাগর-হত্যায় অতীতে তৃণমূলের অনুব্রত মণ্ডলের দিকে হৃদয়বাবুরা বার বার আঙুল তুলেছেন। হৃদয়বাবু মামলা থেকে সরে দাঁড়ানোয় অনুব্রতের পক্ষে বিষয়টি স্বস্তিকর হয়েছিল। কিন্তু বিজেপি-র মামলা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে আবার তাঁর অস্বস্তি ফিরে এল বলে মনে করছে বিরোধীরা।

রাহুলবাবুর ঘোষণার কথা জেনে হৃদয়বাবু এ দিন বলেন, “রাজ্য সভাপতি জানেন না, আমাদের দলের প্রাথমিক সদস্যপদটুকুও নেই। তা ছাড়া, আমরা বিজেপি ছেড়ে চলে এসেছি। বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়া লোককে ‘গেট আউট’ বলাটা অর্থহীন!” আরও এক ধাপ এগিয়ে নিমাইবাবুর আক্রমণ, “আমরা সমর্থক মাত্র। জেলায় দুধকুমার মণ্ডলকে বহিষ্কারের পরে পুরভোটে মানুষ ওদের বহিষ্কার করেছে। আর সাধারণ সমর্থকদের বহিষ্কার করা হলে ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটে মানুষ ওদের বাংলা থেকেই বহিষ্কার করবে!” খুন-সহ নানা অভিযোগে ৮টি মামলা রয়েছে নিমাইবাবুর বিরুদ্ধে। পাড়ুইয়ে বিজেপি-র সংগঠন বাড়াতে সক্রিয় ভূমিকা ছিল তাঁরই।

নিমাইবাবুদের মতোই ‘হৃদয় পরিবর্তনে’র ইঙ্গিত দিয়েছিলেন সাত্তোরের সেই নির্যাতিতাও। বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ কলকাতায় আসার আগের রাতেই এ দিন একটি হোটেলে দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের সঙ্গে নির্যাতিতাকে কথা বলাতে নিয়ে গিয়েছিলেন জয় বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অন্য প্রতিনিধিরাও সেখানে ছিলেন। আলোচনা শেষে জয় বলেন, ‘‘কৈলাসজি বলে দিয়েছেন, মামলা বা রাজনৈতিক কোনও ব্যাপারে তিনি কী সহায়তা চাইছেন, সেই ব্যাপারে রাহুলদা, অমলেন্দু চট্টোপাধ্যায় এবং আমাকে ওই নির্যাতিতার সঙ্গে সমন্বয় রাখতে হবে।’’ বৈঠকের পরে নির্যাতিতা বলেছেন, তাঁর মামলার শেষ দেখেই তিনি ছাড়বেন। তা হলে কি আর তৃণমূলে যাচ্ছেন না? তাঁর ধোঁয়াশাপূর্ণ জবাব, ‘‘আমাকে ছেড়ে দিন। আর কিছু জিজ্ঞাসা করবেন না!’’

— নিজস্ব চিত্র।

hriday ghosh nimai das parui murder case bjp expels bjp hriday ghosh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy