Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Bidhan Chandra Roy

বাংলার ‘বিকাশপুরুষ’, বিজেপির নয়া বিধান

এর আগে মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী, সর্দার বল্লভভাই পটেলের মতো কংগ্রেস নেতাকে নিজেদের মতো করে জাতীয় স্তরে ব্যবহার করেছে কেন্দ্রে বিজেপির সরকার।

বিধানচন্দ্র রায়। ছবি সংগৃহীত

বিধানচন্দ্র রায়। ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০২০ ০৩:৩৩
Share: Save:

বিধানসভা ভোটের আগের বছরে হঠাৎ রাজনৈতিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল বিধানচন্দ্র রায়ের জন্ম ও মৃত্যুদিন! রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও প্রখ্যাত চিকিৎসক বিধানচন্দ্রকে ‘বিকাশপুরুষ’ হিসাবে তুলে ধরার পথ নিল বিজেপি। আবার কংগ্রেসের ডাকে সাড়া দিয়ে বিধান-স্মরণের রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে শামিল হল বামেরাও। ওয়েলিংটনে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে স্মরণ অনুষ্ঠানে উত্তর কলকাতার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের যাওয়া ছাড়া শাসক দল তৃণমূলকে অবশ্য সে ভাবে বিধান-উদযাপনে দেখা যায়নি। বিধানসভায় স্মরণ অনুষ্ঠানেও তৃণমূলের কোনও জনপ্রতিনিধি ছিলেন না। বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান ও বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী তা নিয়ে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে উষ্মাও প্রকাশ করেছেন।

এর আগে মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী, সর্দার বল্লভভাই পটেলের মতো কংগ্রেস নেতাকে নিজেদের মতো করে জাতীয় স্তরে ব্যবহার করেছে কেন্দ্রে বিজেপির সরকার। এ বার বিধানবাবুর জন্ম ও প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে ফেসবুকে তাঁকে শ্রদ্ধা জানান বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। পশ্চিমবঙ্গে বিধান রায়ের অবদান নিয়ে এ দিন সন্ধ্যায় শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় রিসার্চ ফাউন্ডেশনের অধিকর্তা অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়, সাংসদ জয়ন্ত রায়, চিকিৎসক ইন্দ্রনীল খান প্রমুখের সঙ্গে ফেসবুক লাইভে একটি আলোচনাচক্রেও অংশ নেন দিলীপবাবু।

বিজেপির রাজ্য সভাপতির বক্তব্য, ‘‘শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় যে দিন বিধানসভায় হিন্দু প্রধান রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ গড়ার পক্ষে প্রস্তাব পাশ করেছিলেন, বিধান রায় ওই প্রস্তাবকে সমর্থন করেছিলেন। রাজ্যের দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী হয়ে তিনি নিজেকে বিকাশপুরুষ হিসাবে প্রমাণ করেছেন। নেহরুর সঙ্গে তাঁর মতান্তর ছিল। শ্যামাপ্রসাদের মৃত্যুর তদন্ত চেয়েছিলেন তিনি। সত্যের পক্ষে ছিলেন। তিনি পশ্চিমবাংলার রূপকার। তাঁর মতো ব্যক্তিকে আজ এ রাজ্যে দরকার। তাই বিকাশপুরুষ হিসাবে তাঁকে আমরা সামনে রাখতে চাইছি।’’

গেরুয়া শিবিরের এমন উদ্যোগকে বিঁধেছে কংগ্রেস ও তৃণমূল। বিরোধী দলনেতা, কংগ্রেসের মান্নানের বক্তব্য, ‘‘বাংলায় স্মরণ করার মতো কোনও ব্যক্তিত্ব বিজেপির কাছে নেই। এখন ভোটের আগে তাই বিধান রায়ের কথা মনে হয়েছে! বিধানচন্দ্রের অবদান এখন জানা গেল, এমন তো নয়!’’ একই সুরে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘‘বিজেপির যত হিন্দুত্ব আইকন, তার কোনওটাই বাংলায় কাজ করে না। এখন দিলীপবাবুরা বিধান রায়কে স্মরণ করছেন। কিন্তু যে দল কংগ্রেসের তৈরি সব কিছুকেই ভেঙে ফেলছে, তাদের এই উদ্যোগ বিশ্বাসযোগ্য হবে না।’’ রাজনীতির পথে তৃণমূল যে কংগ্রেসেরই উত্তরসূরি, তা-ও উল্লেখ করেছেন সৌগতবাবু।

সুদীপবাবু আবার বামেদের কটাক্ষ করেছেন, ‘‘বিলম্বে বোধোদয়! এত দিন পরে ওঁদের বিধান রায়কে স্মরণ করার কথা মনে হল! এক সময়ে ওঁরা তো নেতাজিকেও মানতেন না, পরে ভুল স্বীকার করে মানতে হয়েছিল।’’ সুজনবাবু পাল্টা বলেছেন, কংগ্রেসের নেতা বিধানচন্দ্রের জন্মদিন রাজনৈতিক ভাবে তাঁদের পালনের প্রশ্ন ওঠে না। কিন্তু প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর অবদান তাঁরা বরাবর স্বীকার করেছেন এবং মহাকরণের বাইরে বিধান-মূর্তিও প্রতিষ্ঠা করেছে জ্যোতি বসুর সরকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bidhan Chandra Roy BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE