Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

দিলীপ-রাহুল কোন্দল থামাতে নির্দেশ দিল্লির

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে যত আক্রমণাত্মক হচ্ছেন, ততই তৃণমূল নেত্রীকে পাল্টা চাপের মুখে রেখে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় স্তরে নিজেদের সংগঠিত করতে চাইছে বিজেপি। তার জন্য কোন্দল থামিয়ে রাজ্য নেতাদের একজোট হয়ে লড়ার পরামর্শ দিচ্ছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৭ ০৪:১২
Share: Save:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে যত আক্রমণাত্মক হচ্ছেন, ততই তৃণমূল নেত্রীকে পাল্টা চাপের মুখে রেখে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় স্তরে নিজেদের সংগঠিত করতে চাইছে বিজেপি। তার জন্য কোন্দল থামিয়ে রাজ্য নেতাদের একজোট হয়ে লড়ার পরামর্শ দিচ্ছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব।

বিজেপির কর্মসমিতির বৈঠকের শুরুতেই যে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে, তাতে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের বিরুদ্ধে হামলা চালানো ও সাম্প্রদায়িক উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। কৌশলগত ভাবেই এই প্রস্তাব পেশ করানো হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে দিয়ে। প্রস্তাবটি সমর্থন করানো হয় রাজ্যের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল সিংহকে দিয়ে। বিজেপি নেতাদের মতে, যে ভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের নেতারা সিবিআইয়ের জালে ধরা পড়ছেন, সেই পরিস্থিতি একদিকে রাজ্য বিজেপির শক্তি বাড়ানোর সুযোগ করে দিচ্ছে। তেমনই জাতীয় স্তরেও মমতা যে ভাবে রাহুল গাঁধীদের সঙ্গে জোট বেঁধে মোদী-বিরোধী আন্দোলন করছেন, তা ভোঁতা করে দেওয়ারও সুযোগ এসেছে।

কিন্তু যে হেতু মমতা-রাহুলরা সিবিআইয়ের অপব্যবহারের অভিযোগ আনছেন মোদীর বিরুদ্ধে, তাই সরাসরি বিজেপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা এ নিয়ে বিতর্ক এড়িয়ে যাওয়ার কৌশল নেবেন। কিন্তু তৃণমূল নেতাদের দুর্নীতি নিয়ে প্রচার করবেন সকলেই। পাশাপাশি, বিজেপির উপর হামলার অভিযোগকেও প্রচারে নিয়ে আসবে দল। কিন্তু বিজেপি নেতারা জানেন, এই কাজটি করার জন্য প্রথমে পশ্চিমবঙ্গের দলের নেতাদের একজোট হতে হবে। আর সেটি এখনও হয়নি।

গত কাল পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের কার্যকলাপের নালিশ জানাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে দেখা করেন রাহুল সিংহরা। কিন্তু রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে বাদ দিয়েই বেলা দেড়টায় নর্থ ব্লকে পৌঁছে যান তাঁরা। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ দিল্লি আসেন গত কাল বিকেলে। তাঁর ঘনিষ্ঠ শিবিরের মতে, তৃণমূলের কর্মীরা যখন বিজেপি অফিসে হামলা করল, তখনই রাজনৈতিক ভাবে বাড়তি হাতিয়ার জুটে গেল বিজেপির হাতে। কিন্তু রাহুল সিংহ এর মধ্যেই আধাসামরিক বাহিনী ডেকে উল্টে মমতার হাতেই অস্ত্র তুলে দিলেন। রাহুল অবশ্য এ কথা অস্বীকার করে বলেছেন, তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আধা সামরিক বাহিনী পরিস্থিতি বুঝে বড় বাহিনী নিয়ে আসে। কিন্তু দিলীপ ঘোষ শিবিরের বক্তব্য, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অনুমোদন ছাড়া কী করেই বা বাড়তি বাহিনী আসতে পারে?

দুই নেতার বিবাদের মধ্যে কাল রাতেই রাজনাথ সিংহ ও সিদ্ধার্থনাথ সিংহের বৈঠক হয়। এর পর দুই নেতাকে একজোটে কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে, দিলীপ ঘোষকে সভাপতি পদ থেকে সরানো হচ্ছে না। আজ দলের জাতীয় সচিব হিসেবে কর্মসমিতির বৈঠকে রাজনাথ সিংহের পেশ করা রাজনৈতিক প্রস্তাবটি সমর্থন করার ভার রাহুলকে দিয়ে তাঁর গুরুত্বও বাড়ানো হয়েছে।

রাজনৈতিক প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ‘‘তৃণমূল জমানাতে স্বাভাবিক রাজনৈতিক কাজ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। কেরলের মতোই পশ্চিমবঙ্গে কর্মীদের উপর আক্রমণ বাড়ছে। তৃণমূলের রাজনৈতিক অসহিষ্ণুতা যে চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে, তা বোঝা গিয়েছে সাম্প্রতিক হামলায়।’’ বিজেপি নেতা প্রকাশ জাভড়েকর বলেন, ‘‘নোট বাতিল নিয়ে মমতা প্রধানমন্ত্রীর বিরোধিতা করছেন। কিন্তু ওই সিদ্ধান্তের পর সব নির্বাচনে আমরা জিতেছি। পশ্চিমবঙ্গেও উপনির্বাচনে দ্বিতীয় স্থানে পৌঁছেছি। কিন্তু যে ১৪ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি করে গরিবদের টাকা লুঠ করেছেন মমতা, তিনি কোন মুখে বিরোধিতা করেন?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rahul Sinha Dilip Ghosh BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE