Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

অস্ত্র নিয়ে দ্বিমত বিজেপির মধ্যেই

উত্তরপ্রদেশে গেরুয়া ঝড় তোলার পর এখন বাংলাতেও একই স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে সঙ্ঘ পরিবার। এ রাজ্যে সশস্ত্র রামনবমী পালনে তাদের এত উৎসাহ সে কারণেই।

চন্দননগরের বাগবাজারে তাপস ঘোষের তোলা ছবি।

চন্দননগরের বাগবাজারে তাপস ঘোষের তোলা ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৫৫
Share: Save:

উত্তরপ্রদেশে গেরুয়া ঝড় তোলার পর এখন বাংলাতেও একই স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে সঙ্ঘ পরিবার। এ রাজ্যে সশস্ত্র রামনবমী পালনে তাদের এত উৎসাহ সে কারণেই। এবং তাতে বিপুল সাড়া পাওয়ার পর রাজ্য বিজেপি-র ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী যখন উগ্র হিন্দুত্বকেই আগামী পাথেয় হিসাবে দেখছেন, তখন মতান্তর ও আপত্তির স্বর উঠতে শুরু করেছে দলের মধ্যে থেকেই।

বিজেপির একাংশ নেতার মতে, সাড়ে তিন বছর আগেও রাজ্য রাজনীতিতে তাদের তেমন শক্তি ছিল না। সেই দুর্দিনে ঝুঁকি নিয়ে লড়াই করে অনেক নেতা-কর্মী দলকে প্রাসঙ্গিক করে তুলেছেন। আর এখন তৈরি দল হাতে পেয়ে গ্রাস করতে চাইছেন উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। যাঁদের কর্মসূচিটাই ধর্মীয়। জোর করে তা রাজনীতির মঞ্চ থেকে করা হচ্ছে। এত অস্ত্রের ঝনঝনানি দেখে শান্তি প্রিয় বাঙালির মধ্যে উল্টো প্রতিক্রিয়া হবে না তো!

রামনবমীর সাফল্য নিয়ে সোমবার কেশব ভবনে আরএসএস-বিজেপি বৈঠক হয়। বিজেপি নেতারা দাবি করেন, শুধু দক্ষিণবঙ্গেই ১৫ লক্ষ মানুষ রাস্তায় নেমে রামনবমী পালন করেছেন। অস্ত্র হাতে মিছিল করায় পুলিশ শতাধিক এফআইআর করেছে। শুনে আরএসএস নেতাদের পরামর্শ, এ বার এফআইআরের প্রতিবাদে প্রচার করতে হবে,—সরকার বৈষম্য করছে। মহরমের মিছিলে অস্ত্র থাকলেও এফআইআর হয় না। রামনবমীতে কেন হবে?

বস্তুত উগ্র হিন্দুত্বের রাজনীতিতে হাওয়া দিতে আজ, মঙ্গলবার রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে ‘ধর্মসভা’ করবে বিশ্ব হিন্দু পরিষদও। সেখানে দেবেন বিজেপি কর্মীরাও। কিন্তু বাস্তব হল এ সব নিয়ে বিজেপি-র মধ্যেই বিরোধিতা দানা বাঁধছে। দলের একাংশের মতে, উগ্র ধর্মীয় চর্চা রাজনৈতিক দলের কাজ নয়। এ রাজ্যের সংস্কৃতির সঙ্গে তা মানানসইও নয়। তা ছাড়া, রামনবমীর উৎসব শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও অস্ত্র নিয়ে আস্ফালন চালিয়ে যাওয়া ঠিক হচ্ছে না। বাংলার অনেকেই হিংসা ও গোষ্ঠী সংঘর্ষের আশঙ্কায় ভয় পাচ্ছেন। দলের এক রাজ্য নেতার কথায়, ‘‘এতে অন্য অংশকে প্ররোচনা দেওয়া হয়। হিন্দু ধর্ম এটা শেখায় না। বরং সহিষ্ণুতা শেখায়।’’ বস্তুত, এই মনোভাব থেকে দলের প্রথম সারির অনেক নেতাই তলোয়ার হাতে রাস্তায় নামেননি। রেল প্রতিমন্ত্রী রাজেন গোহান রবিবার প্রকাশ্যেই বলেছিলেন, অস্ত্র নিয়ে মিছিল করা ঠিক নয়। আর এক কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী রাও ইন্দ্রজিৎ সিংহও বলেছেন, আইন ভেঙে অস্ত্র নিয়ে মিছিল ঠিক নয়।

অস্ত্র নিয়ে গেরুয়া শিবিরের উচ্ছ্বাস ভাল চোখে দেখছে না সরকারও। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের নেতারা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করুন। কিন্তু অস্ত্র হাতে ঘুরে বেড়ালে প্রশাসন তার কাজ করবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Rally Arm
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE