প্রতীকী ছবি।
রাজ্যজুড়ে ‘ভোট-পরবর্তী হিংসা’ চলছে বলে গণনার দিন বিকেল থেকেই সরব হয়েছে বিজেপি। এখন পরিস্থিতি অনেকটা ‘নিয়ন্ত্রণে’ বলে মনে করছেন দলের রাজ্য নেতারা। এ বার পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক করতে বৈঠকে ডাকছে গেরুয়া শিবির। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতার হেস্টিংসে দলের কার্যালয়ে সেই বৈঠকে রাজ্য নেতাদের সকলকেই ডাকা হয়েছে। শুধু কর্মীদের পাশে দাঁড়ানোই নয়, তাঁদের দলে ধরে রাখা নিয়েও চিন্তায় বিজেপি। জেলায় জেলায় পঞ্চায়েত থেকে জেলা পরিষদ স্তরে পদ্মের যে জনপ্রতিনিধিরা রয়েছেন, তাঁদের কী ভাবে দলে ধরে রাখা যায়, তা নিয়েও দলের অন্দরে আলোচনা হবে।
২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে খুব ভাল ফল করেনি বিজেপি। তবে গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপি-র টিকিটে জয় পেয়েছিলেন ৫,৭৭৯ জন সদস্য। পঞ্চায়েত সমিতিতে ৭৬৯ জন এবং ২২ জন জেলাপরিষদে জিতেছিলেন। গত তিন বছরে এই সংখ্যায় অবশ্য বদল হয়েছে। অনেকে দলবদল করেছেন। আবার অনেকে বিজেপি-তে যোগও দিয়েছেন। সেই হিসেব মতো এখন রাজ্যে শ'তিনেক পঞ্চায়েত দখলে রয়েছে বিজেপি-র। তবে এমন অনেক পঞ্চায়েত রয়েছে, যেখানে বিজেপি-র একজন সদস্য থাকলেও সংরক্ষণের হিসেবে প্রধান বা উপপ্রধান পদে রয়েছেন বিজেপি-র টিকিটে জয়ীরা। তবে দখলে থাকা পঞ্চায়েতের বেশিটাই রয়েছে উত্তরবঙ্গে।
রাজ্য বিজেপি-র আশা ছিল, নীলবাড়ির দখল পেলে অনেক নতুন পঞ্চায়েত দখল করা যাবে। অনেকেই দলবদলে বিজেপি-তে আসবেন এবং ত্রিস্তর-পঞ্চায়েতে দলের শক্তি বাড়বে। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পরে এখন বর্তমান শক্তি ধরে রাখা নিয়েই উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
গত মার্চ মাসেই তৃণমূল ভাঙিয়ে মালদহ জেলা পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতার দাবি করেছিল বিজেপি। ৮ মার্চ কলকাতায় এসে বিজেপি-তে যোগ দেন মালদহ জেলা পরিষদের সভাধিপতি-সহ ১৪ জন সদস্য। নেতৃত্ব দিয়েছিলে নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। এখন সেই সদস্যদের ধরে রাখা যাবে কি না, তা নিয়ে ঘোর চিন্তায় বিজেপি নেতৃত্ব।
শুক্রবার রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘গোটা বাংলায় তৃণমূল যে সন্ত্রাস চালাচ্ছে, তাতে কর্মীরা অনেকেই এখনও বাড়ি ফিরতে পারেননি। অনেকে ভিন রাজ্যেও আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁদের বাড়ি ফেরানোটাই এখন বড় কাজ। এ ছাড়া, যাঁরা মারা গিয়েছেন বা হাসপাতালে রয়েছেন তাঁদের পাশেও দাঁড়াতে হবে আমাদের। এটাই প্রাথমিক কাজ। ইতিমধ্যেই সব জেলায় দলের নেতারা গিয়েছেন। আমিও তিনটি জেলা ঘুরে কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এসেছি। সবাই মিলে বসে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে পরবর্তি কর্মসূচি ঠিক হবে।’’
আর পঞ্চায়েতের দখল ধরে রাখা নিয়ে দল যে চিন্তিত তা কার্যত মেনে নিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, "তৃণমূল ইতিমধ্যেই পঞ্চায়েত সদস্যদের ভাঙানোর চেষ্টা শুরু করে দিয়েছে। যে হেতু আগামী ২ বছরের মধ্যেই পঞ্চায়েত নির্বাচন তার জন্য ভয় দেখিয়ে, সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করে আমাদের জনপ্রতিনিধিদের উপরে চাপ তৈরি শুরু হয়ে গিয়েছে। নানা তবে ষড়যন্ত্রও চলছে। তবে আমরা সতর্ক আছি। যেটা ভাবছে সেটা অত সহজ হবে না।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy