Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
BJP

BJP: পদ্মের বৈঠকে সরব লকেট চাপে, প্রকাশ্যে নিন্দা দিলীপের, সুকান্ত বললেন, সব কথা লেখা আছে

শনিবার সাংগঠনিক বৈঠকে লকেট ‘আত্মবিশ্লেষণ’ চেয়ে সরব হন বলে বিজেপি সূত্রে জানা যায়। এর পরে আরও অনেকে রাজ্য নেতৃত্বের সমালোচনা শুরু করেন।

লকেট বলছেন, ‘‘অন্দরের কথা অন্দরেই বলব।’’

লকেট বলছেন, ‘‘অন্দরের কথা অন্দরেই বলব।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২২ ১৫:৩৯
Share: Save:

দলের সাংগঠনিক বৈঠকে রাজ্য নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিজেপি-র অন্দরে চাপে দলের সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। নিজে রাজ্যের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক হয়েও লকেট কি পুরভোটের সময়ে নিজের দায়িত্ব পালন করেছেন— এমন প্রশ্ন উঠেছে গেরুয়া শিবিরে। শনিবার জাতীয় গ্রন্থাগারে সাংগঠনিক বৈঠকে লকেট ‘আত্মবিশ্লেষণ’ চেয়ে সরব হন বলে বিজেপি সূত্রে জানা যায়। লকেটের দেখাদেখি আরও অনেকে রাজ্য নেতৃত্বের সমালোচনা শুরু করেন। আর তা প্রকাশ্যে আসার পরেই বিজেপি নেতাদের মুখে লকেটের সমালোচনা শুরু হয়েছে।

বাকিরা ঘনিষ্ঠদের মধ্যে সে আলোচনা করলেও প্রকাশ্যে লকেটের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তবে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার লকেটের বক্তব্য নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে বলেন, ‘‘দলীয় বৈঠকে লকেট চট্টোপাধ্যায় কী বলেছেন তার সবটাই লিপিবদ্ধ রয়েছে।’’ আর দিলীপের মন্তব্য শোনার পরে লকেটের বক্তব্য, ‘‘যা বলার দলের ভিতরেই বলব।’’

রুদ্ধদ্বার বৈঠকে লকেট যে নেতৃত্বের দিকে আঙুল তুলেছেন তা কী করে সংবাদমাধ্যমে জানাজানি হয়ে গেল তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বিজেপি শিবিরে। তবে মুখে স্বীকার না করলেও রাজ্যের শীর্ষ নেতারা লকেট যে সমালোচনায় সরব হয়েছিলেন তা অস্বীকার করতে পারছেন না। উত্তরাখণ্ডে বিধানসভা নির্বাচনে সহ-পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পাওয়ায় বেশ কয়েক মাস রাজ্যের বাইরেই ছিলেন লকেট। বাজটে অধিবেশনের সময়ে দিল্লি গেলেও বাংলায় সে ভাবে তাঁকে দেখা যায়নি।

২০২১ সালের ২২ ডিসেম্বর রাজ্য বিজেপি-র নতুন কমিটি ঘোষণা হয়। তাতে নতুন তিন সাধারণ সম্পাদক দায়িত্ব পেলেও পুরনোদের মধ্যে জায়গা পেয়ে যান পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোতির্ময় মাহাতো এবং হুগলির সাংসদ লকেট। বিজেপি-তে অভিযোগ, দায়িত্ব পেলেও লকেট কমিটি গঠনের পর থেকে রাজ্য স্তরের কোনও দলীয় বৈঠকেও অংশ নেননি। উত্তরাখণ্ডের ভোটপর্ব মেটার পরে সময় থাকলেও নিজের লোকসভা এলাকায় পুরভোটের প্রচারে অংশ নেননি। অন্য দিকে, উত্তরাখণ্ডে থাকার সময়েই বিদ্রোহী নেতা তথা সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে বৈঠক করেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠককে দল সে ভাবে গুরুত্ব না দিলেও এর পরে দিল্লিতে বরখাস্ত নেতা রীতেশ তিওয়ারির সঙ্গে তাঁর বৈঠকের কথা জানা যায়।

লকেটের বিরুদ্ধে তৈরি হওয়া এমন অভিযোগই যেন রবিবার ঝরে পড়েছে দিলীপের গলায়। তিনি আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘আত্মবিশ্লেষণ কেউ চাইতেই পারেন। আর সেটা করাও দরকার। বিজেপি সব সময়ে আত্মবিশ্লেষণ করে। তবে এই শব্দটার মধ্যেই ‘আত্ম’ শব্দটা রয়েছে। অর্থাৎ নিজের থেকে সমালোচনা শুরু করতে হবে। কিন্তু যাঁরা ময়দানেই ছিলেন না তাঁরা কী করে অন্যের কাছে আত্মবিশ্লেষণের দাবি তোলেন?’’ লকেটের নাম না বললেও দিলীপ বলেন, ‘‘হুগলি জেলায় দলের প্রবীণ নেত্রী কৃষ্ণা ভট্টাচার্য তৃণমূলের হাতে মার খেয়েছেন। অনেক কর্মী ঘর ছাড়া, সর্বত্র সন্ত্রাস চলছে। এ সব যখন হয়েছে তখন কর্মীদের পাশে কে ছিলেন?’’ দিলীপ এমন সোজাসাপ্টা আক্রমণাত্মক করলেও সংযত সুকান্ত। তিনি বলেন, ‘‘গোটাটাই দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। দলীয় বৈঠকের কথা তো বাইরে বলা যায় না। উনি কী বলেছেন সেটাই তো আমি বাইরে বলতে পারি না। তবে যা যা বলেছেন তার সবটাই লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।’’

লকেটের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে শনিবারের বৈঠকে। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, হুগলির প্রাক্তন জেলা সভাপতি সুবীর নাগ এ নিয়ে কথা বলতে চান। তবে বরাবর লকেট-বিরোধী হিসেবে পরিচিত সুবীরকে প্রসঙ্গ উত্থাপনের সঙ্গে সঙ্গেই থামিয়ে দেন বৈঠকে উপস্থিত কেন্দ্রীয় নেতা তথা রাজ্যের সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালবীয়। তিনি পরে এ নিয়ে কথা বলবেন বলে সুবীরকে আশ্বস্ত করে থামান। দলে যে তাঁকে নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে তা জানানো হলে লকেট বলেন, ‘‘আমি দলীয় বৈঠকের ভিতরে কী বলেছি সেটা নিয়ে যাঁরা প্রকাশ্যে সমালোচনা করছেন তাঁরাই আসলে শৃঙ্খলা মানছেন না। আমি তো বাইরে কিছু বলিনি। দলের ভিতরে বলেছি। এখন যা প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও দলের ভিতরে জবাব দেব। আর দিলীপদা তো সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি। তিনি জানেন, আমি কখন, কোথায়, কী দায়িত্বে ছিলাম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Locket chatterjee Dilip Ghosh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE