শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। ফাইল চিত্র।
সরাসরি না হলেও রাজ্য ভাগের যুক্তি এ বার বিধানসভায় তুলল বিজেপি। পুরনো জেলা আইন বাতিল করার জন্য বুধবার বিল পাশ হয়েছে বিধানসভায়। সেই আলোচনায় অংশগ্রহণ করেই শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ সওয়াল করেছেন, ছোট ছোট জেলা করলে যদি প্রশাসনিক কাজে সুবিধা হয়, তা হলে একই যুক্তি রাজ্য ভাগের ক্ষেত্রেও খাটে! বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ইতিপূর্বে কলকাতায় এসে একাধিক বার সতর্ক করে গিয়েছেন, রাজ্য ভাগের প্রসঙ্গে দলের জনপ্রতিনিধিরা যেন মন্তব্য থেকে বিরত থাকেন। তার পরেও শঙ্করের এমন বক্তব্যের জন্য বিজেপিকে পাল্টা খোঁচা দিয়েছেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।
সেই ১৮৬৪ সালের ‘বেঙ্গল ডিস্ট্রিক্ট্স অ্যাক্ট’ বাতিল করার লক্ষ্যে এ দি যে বিল এসেছে, তার আলোচনায় শঙ্কর বলেন, ‘‘যুক্তি, আবেগ ও রাজনীতির উপরে দাঁড়িয়ে আমরা যে কোনও সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকি। যদি প্রশাসনিক অগ্রাধিকার, অর্থনৈতিক বরাদ্দ, এবং সুশাসনের যুক্তিতে জেলা ভাগ করা হয়, তা হলে তো রাজ্য ভাগের ক্ষেত্রেও একই যুক্তি খাটে!’’ সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘সময়ের দাবি মেনে এবং যুক্তিগ্রাহ্যতার উপরে জেলা ভাগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক।’’
বিজেপি বিধায়কের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে আইন দফতরের মন্ত্রী চন্দ্রিমা তাঁর জবাবি ভাষণে বলেন, ‘‘আপনাদের দলের সভাপতি এক কথা বলেন আর আপনারা আর এক রকম বলেন! আগে নিজেদের অবস্থান ঠিক করুন! তার পরে এই নিয়ে (রাজ্য ভাগ) কথা বলবেন।’’ উত্তরবঙ্গের ‘বঞ্চনা’র প্রসঙ্গে মন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘আগে উত্তরবঙ্গ কী ছিল আর এখন কী হয়েছে? আগে কোনও মুখ্যমন্ত্রী কত বার উত্তরবঙ্গে যেতেন? এখন মুখ্যমন্ত্রী কত বার যান? উত্তরবঙ্গের সার্বিক উন্নয়নে যে বিভিন্ন কাজ হচ্ছে, সকলেই দেখতে পাচ্ছেন।’’
জেলায় জেলায় নানা অবসরে বিজেপির একাধিক বিধায়ক সাম্প্রতিক কালে পৃথক রাজ্যের দাবির কথা তুলেছেন। দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ তখন বলেছিলেন, ‘‘খবরে আসার জন্য কেউ কেউ এ সব বলেন।’’ দলের শীর্ষ নেতৃত্বের অনুমোদন না থাকা সত্ত্বেও বিধানসভায় শঙ্কর কেন এমন বললেন? বিধায়কের যুক্তি, “আমি এক বারও রাজ্য ভাগের দাবি জানাইনি। শুধু বলেছি উত্তরবঙ্গের বঞ্চনার কথা বলতে গেলে আমায় কটূক্তি, বিদ্রুপ শুনতে হয়।” রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের ব্যাখ্যা, ‘‘আমরা নীতিগত ভাবে ছোট রাজ্যের পক্ষে। উত্তরবঙ্গের প্রতি বঞ্চনা দীর্ঘ দিনের। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের ভৌগলিক সীমানা অক্ষুণ্ণ রেখেই সার্বিক উন্নয়ন আমরা চাই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy