Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Kailash Vijayvargiya

ভোটে বিপর্যয়, কৈলাসকে রাজ্যে দলের পর্যবেক্ষকের পদ থেকে সরানোর ভাবনা শুরু বিজেপি-তে

লোকসভা ভোটে বিজেপি যেমন চমকপ্রদ ফল করেছিল, তেমনই আবার তার পর থেকে লাগাতার অন্য দল ভাঙিয়ে সংগঠন শক্তিশালী করার পথে এগিয়েছিল তারা।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২১ ০৫:২০
Share: Save:

বাংলায় ক্ষমতা দখলের ঘোষিত লক্ষ্যের ধারেকাছে পৌঁছনো যায়নি। বিরোধী দল হিসেবে বিধায়ক-সংখ্যা ৩ থেকে বেড়ে ৭৭ হলেও দু’বছর আগের লোকসভা নির্বাচনের তুলনায় দলের ফল খারাপ। এমতাবস্থায় বাংলায় দলের পর্যবেক্ষক বদলের ভাবনা শুরু হয়েছে বিজেপিতে। বর্তমান দায়িত্ব থেকে মধ্যপ্রদেশের কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের অব্যাহতি প্রায় পাকা বলেই দলের একাংশের দাবি। দলীয় সূত্রের ইঙ্গিত, নতুন পর্যবেক্ষক হিসেবে রাজস্থানের নেতা ও রাজ্যসভার সাংসদ ভূপেন্দ্র যাদবকে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। বিজেপির তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে অবশ্য এই রদবদলের ভাবনার কথা স্বীকার করা হচ্ছে না।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ঘনিষ্ঠ ভূপেন্দ্র সম্প্রতি এ রাজ্যে বিরোধী দলনেতা নির্বাচনের সময়ে পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব নিয়ে এসেছিলেন। তার আগে থেকেই তিনি বাংলা বিজেপির কাজকর্মের খোঁজখবর রাখেন। বিধানসভা ভোটের পরে বাংলায় পাঠানো হয়েছিল বিজেপির অন্যতম কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক, পঞ্জাবের তরুণ চুঘকেও। পরবর্তী পর্যবেক্ষক হিসেবে তাঁর নামও জল্পনায় আছে।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য বলেছেন, দলে এই বিষয়ে এখনও কোনও আলোচনা হয়নি। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও কিছু জানাননি। যদিও বিজেপির একটি সূত্রের মতে, বাংলায় হতাশজনক প্রদর্শনের পরে কিছু সাংগঠনিক রদবদল স্বাভাবিক। ওই সূ্ত্রের ব্যাখ্যা, দলের সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে তরুণ নবীনতম। পরের লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে বিজেপিকে যখন নতুন করে লড়াই শুরু করতে হবে, সেই সময়ে সংগঠনে তুলনামূলক ভাবে কম গুরুত্বপূর্ণ কাউকে রাজ্যের দায়িত্ব দিলে ভুল বার্তা যেতে পারে। সেই যুক্তিতে ভূপেন্দ্রকে নিয়ে আসার পক্ষে যুক্তিই ভারী।

কয়েক বছর ধরেই বাংলার দায়িত্বে আছেন কৈলাস। লোকসভা ভোটে বিজেপি যেমন চমকপ্রদ ফল করেছিল, তেমনই আবার তার পর থেকে লাগাতার অন্য দল ভাঙিয়ে সংগঠন শক্তিশালী করার পথে এগিয়েছিল তারা। এই তত্ত্বে বিশ্বাসী ছিলেন কৈলাসও। বাছ-বিচার না করে তৃণমূল থেকে নেতাদের নিয়ে আসা এবং প্রার্থী করে দেওয়ার ফল যে ভাল হয়নি, সেই বিষয়ে বিজেপির অন্দরে এখন অনেকেই সরব। এমনকি, দল ভাঙানোর এই কৌশলের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে সঙ্ঘের মুখপত্রেও। এ সবের জেরে পর্যবেক্ষক কৈলাসের কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। একই রকম ভাবে প্রশ্ন উঠেছে সহ-পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেননকে নিয়েও।

ভোটে বিপর্যয়ের পরে কৈলাস, দিলীপ ঘোষ, শিবপ্রকাশ ও অরবিন্দ— এই চতুষ্টয়কেই ‘কেডিএসএ’ বলে নিশানা করে তোপ দেগেছিলেন তথাগত রায়। আদি-বিজেপির সেই অসন্তোষই ধীরে ধীরে দলে দানা বাঁধছে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও তা টের পাচ্ছেন।

তবে রাজ্য বিজেপির এক নেতার বক্তব্য, ‘‘ভোট-পরবর্তী সন্ত্রাস এবং কোভিড পরিস্থিতির কারণে নির্বাচন সংক্রান্ত বিশ্লেষণের আলোচনা এখনও দলে হয়নি। আলোচনার আগে কোনও সিদ্ধান্তই ঠিক হয় না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Kailash Vijayvargiya
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE