E-Paper

পুলিশকে ‘কোপানো’র নিদান পদ্ম-বিধায়কের

আলিপুরদুয়ারেও বিজেপি বিধায়কদের একাংশকে সমাজমাধ্যমে সওয়াল করতে শোনা গিয়েছে পুলিশের বিরুদ্ধে। সেখানে এক সংখ্যালঘুকে প্রকাশ্যে ওঠবস করিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে এক বিজেপিকে নেতাকে ধরেছে পুলিশ।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ০৫:৫৬

— প্রতীকী চিত্র।

পহেলগামে জঙ্গি হানা নিয়ে এ রাজ্যে সমাজমাধ্যমে কিছু ‘পোস্ট’ যারা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে পুলিশের সক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বনগাঁ দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদার। সেই সূত্রে ‘পুলিশকে কুপিয়ে কাটার’ নিদানও দেন তিনি। আলিপুরদুয়ারেও বিজেপি বিধায়কদের একাংশকে সমাজমাধ্যমে সওয়াল করতে শোনা গিয়েছে পুলিশের বিরুদ্ধে। সেখানে এক সংখ্যালঘুকে প্রকাশ্যে ওঠবস করিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে এক বিজেপিকে নেতাকে ধরেছে পুলিশ।

রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য অবশ্য বলেন, “দল হিংসা সমর্থন করে না। এই সময় অনেক বেশি দায়িত্বশীল মন্তব্য করা উচিত। তবে পুলিশ পশ্চিমবঙ্গে বিভাজনের রাজনীতির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তাদেরও উচিত এর বাইরে বেরিয়ে আসা।”

গাইঘাটার ঘোঁজবাজারে দলীয় পথসভায় রবিবার স্বপন বলেন, “পোস্টে জঙ্গি হানার প্রতিবাদ করলে, মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে। টাকার জন্য তৃণমূল নেতারা ভারতীয় সনাতনী সংস্কৃতি নষ্ট করছেন। পুলিশ তাকিয়ে দেখছে। সনাতনীদের বলব, হাতে অস্ত্র তুলে নিতে। ধরতে এলে, পুলিশকে টেবিলের তলায় কুপিয়ে কুপিয়ে কাটুন।” বিধায়কের হুঁশিয়ারি, “যারা জেহাদিদের মতো কাজকর্ম করছে, তাদের পিছনে যদি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও থাকেন, তা হলে তাঁকেও ভারতে থাকতে দেব না।” মুর্শিদাবাদের সাম্প্রতিক গোলমালের প্রসঙ্গ টেনে সভায় তাঁর দাবি, “রাজ্যে সন্ত্রাস ছড়ানোর ‘মূল চক্রী’ ফিরহাদ হাকিম। খুব দ্রুত তিনি এনআইএ-র জালে ফাঁসতে চলেছেন।” বিধায়কের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক মন্তব্যের অভিযোগে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন একটি পঞ্চায়েতের তৃণমূলের উপপ্রধান। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। ওই বক্তব্যের ‘ফুটেজ’ সংগ্রহ করে তা দেখার আশ্বাসও দিয়েছে।

ফিরহাদ সম্পর্কে অভিযোগ ‘সর্বৈব মিথ্যে’ বলে উড়িয়ে রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী তথা তৃণমূলের মুখপাত্র স্নেহাশিস চক্রবর্তীর প্রতিক্রিয়া, “ধর্মীয় মেরুকরণের উদ্দেশ্যে বিজেপি ঘৃণা ছড়ানোর রাজনীতি করছে। আইনি শাস্তি দেওয়া উচিত।”

সমাজমাধ্যমে ‘আপত্তিকর’ পোস্ট করার অভিযোগে আলিপুরদুয়ারের বারবিশার এক যুবককে কান ধরে ওঠবস করানো ও হুমকির অভিযোগে রবিবার রাতে ধরা হয় বিজেপি নেতা বিপ্লব দাসকে। তিনি গ্রেফতার হতেই বারবিশা পুলিশ ফাঁড়িতে পৌঁছন কুমারগ্রামের বিধায়ক মনোজকুমার ওরাওঁ-সহ দলের অনেক জেলা নেতা। মনোজ বলেন, “বিপ্লব পুলিশের কাছে ভুল স্বীকার করে মুচলেকা দিয়েছিলেন। কিন্তু সংখ্যালঘু তোষণের লক্ষ্যে আটটা মামলায় অভিযুক্ত করে পুলিশ বিপ্লবকে গ্রেফতার করেছে, যার মধ্যে দু’টি জামিন অযোগ্য।” সোমবার আদালত বিপ্লবকে ৮ মে পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। জেলার পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, “কেউ আইন হাতে তুলে নিলে, কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে।”

স্থানীয় এক যুবকের বিরুদ্ধে ভারতীয় সেনার বিরুদ্ধে এবং পাকিস্তানের পক্ষে সমাজমাধ্যমে ‘পোস্ট’ করার অভিযোগ এ দিন বিজেপি নদিয়ার শান্তিপুর থানাতেও বিক্ষোভ দেখায়। ওই যুবককে আটক করেছে পুলিশ। তাঁর মোবাইল পরীক্ষা করা হচ্ছে। তবে পরিবারের দাবি, যুবক স্নায়ুরোগে আক্রান্ত। ঠিক মতো মোবাইল ব্যবহার করতে পারেন না। তাঁর নাবালক সন্তানদের কাছেই সেটি বেশি থাকে। তারা হয়তো ভুলবশত ‘পোস্ট’ করেছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Pahalgam Incident Pahalgam Terror Attack BJP

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy