Advertisement
E-Paper

জলপাইগুড়িতে ঘিরে ধরে মার বিজেপির দুই জনপ্রতিনিধিকে! মাথা ফাটল সাংসদ খগেন মুর্মুর, আক্রান্ত বিধায়ক শঙ্কর ঘোষও

সোমবার সকালে দুর্যোগকবলিত নাগরাকাটায় গিয়েছিলেন মালদহ উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু এবং শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। সেখানেই বিক্ষোভের মুখে পড়েন দু’জনে। লাঠি, জুতো নিয়ে তাঁদের উপর চড়াও হন কয়েকশো মানুষ।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২৫ ১৩:২৩
(বাঁ দিকে) গাড়ি লক্ষ্য করে ছোড়া পাথর তুলে দেখাচ্ছেন শঙ্কর। মাথা ফেটে রক্ত ঝরছে খগেনের (ডান দিকে)

(বাঁ দিকে) গাড়ি লক্ষ্য করে ছোড়া পাথর তুলে দেখাচ্ছেন শঙ্কর। মাথা ফেটে রক্ত ঝরছে খগেনের (ডান দিকে) ছবি: সংগৃহীত।

বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি পরিদর্শনে গিয়ে আক্রান্ত হলেন বিজেপির দুই জনপ্রতিনিধি! পাথরের ঘায়ে মাথা ফাটল এক জনের। হেনস্থা করা হল অপর জনকেও। ইতিমধ্যেই তৃণমূলের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। ‘পরিকল্পিত ভাবে’ বিজেপি সাংসদ ও বিধায়ককে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

সোমবার সকালে দুর্যোগকবলিত নাগরাকাটায় একাধিক এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন মালদহ উত্তরের সাংসদ খগেন মুর্মু এবং শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। বামনডাঙায় ঢোকার আগে বিক্ষোভের মুখে পড়েন দু’জনে। লাঠি, জুতো নিয়ে তাঁদের উপর চড়াও হন কয়েকশো মানুষ। নদী থেকে পাথর তুলে তাঁদের গাড়ি লক্ষ করে ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। তাতেই মাথা ফেটে যায় খগেনের। গলগল করে রক্ত ঝরতে থাকে। ধাক্কা দেওয়া হয় শঙ্করকেও। আপাতত দুই নেতাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে এখনও এলাকায় জড়ো হয়ে রয়েছেন কয়েকশো মানুষ। কেন্দ্রীয় বাহিনীও এলাকায় মোতায়েন রয়েছে। তাতেও উত্তেজনা কমছে না বলে স্থানীয় সূত্রে খবর।

বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পরিদর্শন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে সোমবার সকাল থেকেই মাঠে নেমে পড়েছিলেন বিজেপির নেতা, কর্মী ও সমর্থকেরা। সকালে শিলিগুড়ি পৌঁছোন বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে বাগডোগরা বিমানবন্দরে আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্তা, জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায়, মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিধায়ক আনন্দময় বর্মণ, ফালাকাটার বিধায়ক দীপক বর্মণ প্রমুখ। ছিলেন খগেন, শঙ্করেরাও। এর পর একে একে বিভিন্ন এলাকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে শুরু করে বিজেপির প্রতিনিধিদল। বিপত্তি বাধে বামনডাঙায় ঢোকার মুখে। এক সময়ে শমীকের সঙ্গে বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা এগিয়ে যান। শঙ্কর ও খগেন তখনও সেখানে ছিলেন। আচমকা কয়েকশো মানুষ জড়ো হয়ে তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে দেন। লাঠি, জুতো ইত্যাদি নিয়ে বিজেপির দুই জনপ্রতিনিধির উপর চড়াও হন বিক্ষোভকারীরা। ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দেওয়া হয়। ধাক্কা দেওয়া হয় শঙ্করকে। কোনওমতে দু’জনে গাড়িতে উঠলে গাড়ি লক্ষ করেও পাথর ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। তাতেই মাথা ফেটে গলগল করে রক্ত ঝরতে থাকে মালদহ উত্তরের সাংসদের।

ঘটনার পরেই এক ভিডিয়োবার্তায় শঙ্কর বলেন, ‘‘আমাদের গাড়ির সমস্ত কাচ ভেঙে চুরমার করে দেওয়া হয়েছে। খগেনদা রক্তাক্ত হয়ে পড়ে আছেন। গাড়ির কোনও কাচ বাকি নেই। আপাতত খগেনদাকে নিয়ে দ্রুত হাসপাতালে যাচ্ছি।’’ বিধায়কের পোস্ট করা ওই ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, রক্তাক্ত অবস্থায় গাড়ির মধ্যে বসে রয়েছেন খগেন। রক্তে তাঁর পাঞ্জাবি ভিজে গিয়েছে। গাড়ির প্রায় সমস্ত কাচও ভেঙে গিয়েছে। শঙ্কর আরও বলেন, ‘‘আমরা ত্রাণ দেওয়ার কাজে সাহায্য করতে গিয়েছিলাম। শমীকদারা বোটে করে নদীর ও পারের মানুষদের সঙ্গে দেখা করতে যান। আমরা এ পারেই ছিলাম। তখন কিছু লোক ‘দিদি’র কথা বলে আমাদের ঘিরে ধরে। প্রথমে গালিগালাজ, পরে পিছন থেকে মারধর শুরু করে। মাথা সিটের নীচে ঢুকিয়ে দিয়ে কোনওমতে বেঁচেছি।’’ এই মুহূর্তে প্রাথমিক চিকিৎসার পর শিলিগুড়ির আর একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে খগেনকে।

গোটা ঘটনায় তৃণমূলের দিকে আঙুল তুলেছে বিজেপি। ঘটনার পরেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু দাবি করেছেন, এই ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গুন্ডারা’। পরিকল্পিত ভাবে বিজেপি সাংসদ ও বিধায়ককে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি তাঁর।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy