Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
roopa ganguly

Roopa Ganguly: আমি রাজ্য বিজেপি-র কেউ নই, দিলীপদের ‘বদমাইশি’ চলছে, দলের বিরুদ্ধেও বড় অভিযোগ রূপার

পুরভোট নিয়ে গোড়া থেকেই বিদ্রোহী রূপা। তবে রবিবারে বিস্ফোরক মন্তব্য নিয়ে রাজ্য বিজেপি-র কোনও নেতাই মন্তব্য করতে চাননি।

রাজ্য নেতৃত্বকে তোপ রূপার।

রাজ্য নেতৃত্বকে তোপ রূপার। ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২১ ১৬:১৪
Share: Save:

কলকাতা পুরভোটের আগে থেকেই বিজেপি-র অস্বস্তি বাড়িয়েছেন দলের সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। সেই অস্বস্তি কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিলেন কলকাতায় ভোটের দিনে। রবিবার ভোট দিতে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমকে রূপা জানান তিনি রাজ্য বিজেপি-র কেউ নন। একই সঙ্গে বাংলার বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে প্রার্থী কেনার অভিযোগ তুললেন টিভি ধারাবাহিক মহাভারতের দ্রৌপদী চরিত্রাভিনেত্রী। তিনি বলেন, ‘‘কলকাতা পুরসভা নির্বাচনে টাকা নিয়ে প্রার্থী করেছে। আমি ১০০ শতাংশ নিশ্চিত। আমার কাছে প্রমাণ আছে। কিছু জায়গায় তো কিনেছেই।’’

এটুকুতেই থামেননি রূপা। নাম করেই প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও তাঁর অনুগামীদের নিন্দা করেন। বলেন, ‘‘আমাদের রাজ্য সভাপতি নতুন এসেছেন, তিনি অনেক কিছুই চিনে, বুঝে উঠতে পারেননি। দিলীপবাবুর পুরো টিমটা রয়েছে। তারা যদি এখনও বদমাইশি না থামান, তা হলে তো মুশকিল।’’ দলের রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘বেকার কোনও কমিটির মেম্বার হওয়ার কারণ নেই। কমিটিতে একটা কথা বলার জন্য, শিঙাড়া খাওয়ার জন্য আগ্রহী নই। ও রকম ভাবে ডেকে একটা বৈঠকে বসিয়ে রেখে, সিদ্ধান্ত চারটে লোক নেবে।’’ তিনি জানান, রাজ্য বিজেপি-র কোনও পদে আমি নেই। দলবিরোধী কাজের অভিযোগ উঠলে যেখানে জবাব দেওয়ার সেখানেই দেব। রূপার এ হেন বিদ্রোহ নিয়ে রাজ্য বিজেপি-র কোনও নেতাই মন্তব্য করতে চাননি। রাজ্যের মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমি এই ব্যাপারে কিছু বলব না।’’

২০১৫ সালের পুরভোটের আগে আগেই অভিনেত্রী রূপা রাজনীতিতে যোগ দেন। বিজেপি নেত্রী হিসেবে গত পুরভোটে কলকাতার রাস্তায় দেখা গিয়েছিল তাঁকে। তবে এ বার রূপা অন্য রূপে। আগেই বিদ্রোহ ঘোষণা করেন তিনি। বিজেপি প্রার্থিতালিকা প্রকাশ করতেই তার বিরোধিতা করেন রূপা। ৮৬ নম্বর ওয়ার্ডে ২০১৫ সালে বিজেপি-র টিকিটে জয়ী তিস্তা দাস বিশ্বাস এক পথদুর্ঘটনায় মারা যান। এর পরে রূপার দাবি ছিল, তিস্তার স্বামী গৌরব বিশ্বাসকে প্রার্থী করা হোক ওই ওয়ার্ডে। কিন্তু শেষবেলায় দেখা যায়, রাসবিহারী বিধানসভা এলাকার ওই ওয়ার্ড থেকে বিজেপি প্রার্থী করেছে রাজর্ষি লাহিড়ীকে। এর পরেই ক্ষোভ তৈরি হয় বিজেপি-র অন্দরে। শেষে নির্দল প্রার্থী হিসেবে ওই ওয়ার্ডে মনোনয়ন জমা দিয়ে দেন গৌরব। গৌরবের পিছনে ঘোষিত ভাবে দাঁড়ান দলেরই সাংসদ রূপা।

গৌরব মনোনয়ন জমা দেওয়ার পরে রূপাকে নিয়ে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব বৈঠকে বসেন। তখন সংসদে অধিবেশন চলছিল। ভার্চুয়াল বৈঠকে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়াও ছিলেন কলকাতা পুরভোটের দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজ্য নেতারা। বৈঠকে যোগ দেওয়া এক নেতার কথায় জানা যায়, রূপা ওই বৈঠক ছেড়ে আচমকাই বেরিয়ে যান। সেই সঙ্গে ‘ভাটের বৈঠকে ডাকেন কেন’ মন্তব্যও করেন তিনি। এর পরেও দলের অস্বস্তি বাড়িয়ে একাধিক পোস্ট করেন ফেসবুকে। লেখেন, ‘আজ আমার বিশ্বাস সত্যিতে পরিণত হল যে, তিস্তার মৃত্যু নিছক দুর্ঘটনা নয়, বরং খুন। দুঃখিত রাজ্য বিজেপি। আমি আমার ক্ষুদ্র সামর্থ নিয়ে গৌরবের পাশেই থাকব।’ একই সঙ্গে বিজেপি-র প্রার্থিতালিকা তৈরির ক্ষেত্রে টাকা-পয়সার খেলা হয়েছে বলেও অভিযোগ তোলেন।

এর পরে অস্বস্তিতে পড়া রাজ্য বিজেপি নেতারা মুখ খোলেননি। তবে শোনা গিয়েছিল, শীর্ষ নেতৃত্ব রূপাকে সতর্ক করেন। তবে সেই সতর্কতাতে যে বিশেষ কাজ হয়নি তা বুঝিয়ে দিলেন অভিনেত্রী-রাজনীতিক। তিনি যে বিজেপি-র প্রার্থীকে সমর্থন করছেন না তা উল্লেখ করে রূপা বলেন, ‘‘বিজেপির প্রার্থীর পক্ষে নই আমি। আজও। তিস্তা মনে করত আমাকে এই রংটা মানায়, আজ ওর দেওয়া একটা শাড়ি পরে এসেছি। তিস্তাকে আমি ভালবাসি। আমরা রাজনীতি করতে এসেছি, মানুষকে ছেড়ে নয়। মানুষের জন্য রাজনীতি করতে এসেছি। যে এত দিন ধরে খেটেছে, আমি তাঁর সঙ্গেই থাকব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

roopa ganguly BJP Dilip Ghosh KMC Poll
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE