বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা আভাস দিয়েছিলেন সোমবার সন্ধ্যাতেই। বুধবার বেলা ১২টা ৩৫ মিনিট নাগাদ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশও চলে এল কলকাতায়। রাজ্যসভার সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যকেই রাজ্য সভাপতি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিতে বললেন দিল্লির নেতৃত্ব। সুকান্তের পরে শমীকই হতে চলেছেন বিজেপির পরবর্তী রাজ্য সভাপতি। অপেক্ষা শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণার।
বুধবার দুপুরে বিজেপির সল্টলেক দফতরে গিয়ে রাজ্য সভাপতি পদের জন্য মনোনয়ন জমা দিয়েছেন শমীক। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দলের বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গিয়েছে। আর কোনও মনোনয়ন জমা পড়েনি। ফলে তাঁর মনোনয়ন বাতিল না-হলে, বা তিনি নিজে মনোনয়ন প্রত্যাহার না-করলে শমীক বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সুকান্ত মজুমদারের উত্তরসূরি হবেন। শমীকই যে বিজেপির পরবর্তী রাজ্য সভাপতি হতে যাচ্ছেন, তা সোমবার রাতেই জানিয়ে দিয়েছিল আনন্দবাজার ডট কম। গত সোমবার সকালে দিল্লিতে গিয়েছিলেন শমীক। ওই দিন দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকে যোগ দেন তিনি। ওই দিন সন্ধ্যাতেই বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি নড্ডার বাড়িতে তাঁর আমন্ত্রণ ছিল।
বুধবার দুপুরে সল্টলেকে বিজেপির দফতরে মনোনয়ন জমা দিলেন শমীক ভট্টাচার্য। সঙ্গে রয়েছেন সুকান্ত মজুমদার এবং শুভেন্দু অধিকারীও। —নিজস্ব চিত্র।
‘অপারেশন সিঁদুর’ সম্পর্কে ভারতের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে যে প্রতিনিধিদলগুলি বিদেশে গিয়েছিল, সেই প্রতিনিধিদলগুলির বিজেপি নেতানেত্রীদের নিজেদের বাসভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন নড্ডা। ঘটনাচক্রে, আমন্ত্রিতের তালিকায় যেমন শমীক ছিলেন, তেমনই পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সভাপতি নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদও ছিলেন।বিজেপি সূত্রে খবর, সোমবার সন্ধ্যায় নড্ডা নিজের বাসভবনের সেই কর্মসূচিতেই শমীককে আসন্ন দায়িত্বের আভাস দিয়ে দেন। এর পরে বুধবার বেলা সাড়ে ১২টার কিছু পরে দিল্লি থেকে শমীকের কাছে আনুষ্ঠানিক ভাবে ফোনও আসে। ওই ফোনেই তাঁকে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে বলা হয় বলে সূত্রের খবর।
বস্তুত, গত সোমবার একগুচ্ছ কর্মসূচি নিয়েই দিল্লির উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন শমীক। প্রথমে শোনা যাচ্ছিল, আগামী ৪ জুলাই (শুক্রবার) দিল্লি থেকে ফিরতে পারেন তিনি। তবে দলীয় সূত্রে খবর, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বুধবার সকালেই তাঁকে কলকাতায় ফিরে আসতে বলা হয়। সেই মতো বুধবার সকাল ৯টা ৪০ মিনিটের উড়ানে কলকাতায় পৌঁছোন তিনি। বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুনীল বনসলও কলকাতায় আসেন তাঁর সঙ্গে। দুপুরে মনোনয়ন জমা দেন। বুধবার সন্ধ্যার পরে রবিশঙ্করও কলকাতায় পৌঁছে যেতে পারেন।
আরও পড়ুন:
গত শনিবার রাতে বঙ্গ বিজেপির নেতৃত্বের সঙ্গে ‘বুথ সশক্তিকরণ অভিযান’ সংক্রান্ত একটি ভার্চুয়াল বৈঠকে বসেছিলেন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনসল। সেই বৈঠক চলাকালীনই বনসল বঙ্গ বিজেপির পরবর্তী মেয়াদের সভাপতি নির্বাচনের নির্ঘণ্ট রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়ে দিয়েছিলেন।
এর পরে মঙ্গলবার রাজ্য বিজেপির সভাপতি নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। বিজ্ঞপ্তি অনুসারে বুধবার মনোনয়নপত্র জমা নেওয়ার পরে সে দিনই তা ‘স্ক্রুটিনি’ করা হবে। কেউ মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে চাইলে তা-ও সেই দিনই করে নিতে হবে। বুধবারই চূড়ান্ত প্রার্থিতালিকা প্রকাশ করে দেবে বিজেপি। বিজ্ঞপ্তি অনুসারে বৃহস্পতিবার রাজ্য সভাপতি নির্বাচন হওয়ার কথা। তবে দ্বিতীয় কোনও মনোনয়ন জমা না পড়লে আজই চূড়ান্ত হয়ে যেতে পারে বিজেপির পরবর্তী রাজ্য সভাপতির নাম।