দিঘার জগন্নাথধাম উদ্বোধনে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের উপস্থিতি নিয়ে প্রাক্তন স্বামী, বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তাঁকে আক্রমণ করেছিলেন সুজাতা মণ্ডল। এ বার সেই সূত্র ধরে প্রাক্তন স্ত্রীকে আইনি নোটিস পাঠানোর হুঁশিয়ারি দিলেন বিজেপি সাংসদ। প্রাক্তন স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতিরও অভিযোগ তুলেছেন সৌমিত্র। যদিও তাতে মোটেই পাত্তা দিচ্ছেন না তৃণমূল নেত্রী সুজাতা। বরং প্রাক্তন স্বামীকে ‘মানসিক ভাবে অসুস্থ’ বলে আরও ঝাঁজালো আক্রমণ শানালেন তিনি। এমনকি, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের সাহায্যে বিজেপি সাংসদকে চিকিৎসা করিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সুজাতা।
বিষ্ণুপুরের তিন বারের সাংসদ সৌমিত্রের সঙ্গে বছর খানেক আগে আইনি বিচ্ছেদ হয়েছে সুজাতার। তার পরেও প্রাক্তন ওই দম্পতি একে অপরের বিরুদ্ধে আক্রমণ জারি রেখেছেন। এ বার তাঁদের ‘গন্ডগোল’ দিলীপের জগন্নাথ মন্দিরে যাওয়া নিয়ে। রবিবার বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে সৌমিত্র বলেন, ‘‘বাঁকুড়া জেলা পরিষদের মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ সুজাতা মণ্ডল আমার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে উল্টোপাল্টা কথা বলেছেন। সে জন্য আমি তাঁকে আইনি নোটিস পাঠাচ্ছি।’’ একটি ফাইল দেখিয়ে বিজেপি সাংসদ আরও বলেন, ‘‘সুজাতা মণ্ডল কলকাতার শ্যামবাজার এভি স্কুলে শিক্ষিকা হিসাবে চাকরি করেন। গত ৬ বছরে তিনি একদিনের জন্যও স্কুলে হাজির থাকেননি। কলকাতার এক স্কুল পরিদর্শকের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে স্কুলে না গিয়ে প্রতি মাসের বেতন তুলে যাচ্ছেন। নির্বাচনের প্রচার করার সময় এমনকি মনোনয়নের দিনেও তিনি বেতন নিয়েছেন। দুর্নীতিগ্রস্ত শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের কাছে আমার প্রশ্ন, ৬ বছর ধরে স্কুলে না গিয়ে উনি কী ভাবে বেতন পাচ্ছেন? এই বিষয়ে আমরা হাই কোর্টে মামলা করব।’’
এখানেই শেষ নয়, সুজাতার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ করেছেন সৌমিত্র। তিনি বলেন, ‘‘আমার কাছে প্রমাণ আছে যে বাঁকুড়া জেলা পরিষদের মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ হিসাবে সুজাতা সরকারি প্রকল্পে বরাদ্দের ৭০ শতাংশ কাটমানি হিসাবে নিচ্ছেন। চাকরি করার নামেও তিনি টাকা নিয়েছেন। আজ (রবিবার) সকালেও আমার কাছে একটি ছেলে এসে অভিযোগ জানিয়ে গিয়েছে। সুজাতা গত এক বছরে তিন বার বিদেশ গিয়েছেন। এত টাকা তিনি কোথায় পেলেন? ওঁর এবং ওঁর বাবার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং ডাকঘরের অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা করে দেখার জন্য আমি আয়কর দফতরকেও চিঠি দেব।’’
আরও পড়ুন:
ওই অভিযোগ প্রসঙ্গে সুজাতার প্রশ্ন, কবে আইনি নোটিস হাতে পাবেন তিনি? কারণ, তিনি তৈরি। তাঁর কথায়, ‘‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলি আনছেন, প্রমাণ করতে পারবেন তো? প্রমাণ করতে না পারলে বুঝবেন, কত ধানে কত চাল হয়।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমার বাবা একটি ব্যাঙ্কের আধিকারিক ছিলেন। আমার বোন শিক্ষিকা। আমি সম্ভ্রান্ত, অভিজাত এবং উচ্চশিক্ষিত পরিবার থেকে উঠে এসেছি। সাংসদের মতো আপাদমস্তক ঋণে ডুবে থাকা অত্যন্ত নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে আসিনি । সাংসদের মতো কোনওমতে থার্ড ডিভিশনে উচ্চ মাধ্যমিক পাশও করিনি। সাংসদ আইন জানেন না, তাই এমন আলটপকা মন্তব্য করছেন। উনি মানসিক ভাবে অসুস্থ। সুস্থতা কামনা করছি। আর প্রয়োজন হলে মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে বিনা পয়সায় চিকিৎসা করিয়ে নিন উনি। দরকারে তৃণমূলের আইনজীবীদের আইনি সহয়তা নিতে পারেন।’’