বন্ধুবান্ধব থেকে আত্মীয়-পরিজন সকলেই স্ত্রীর রূপের প্রশংসা করেন। তাতে বেজায় আপত্তি যুবকের। পরপুরুষের কুনজর পড়েছে, এই সন্দেহে ঘুমন্ত স্ত্রীর নাক চিবোলেন তিনি। এমনকি, শ্বাসরোধ করে স্ত্রীকে খুনের চেষ্টাও করেন বলেও অভিযোগ। নাক, বাঁ হাতের একটি আঙুল এবং বুকে ক্ষত নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন যুবতী। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার শান্তিপুর থানা এলাকায়। স্বামীর বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগ করেছেন তিনি। ৮ বছরের সন্তানকেও স্বামী মেরে ফেলতে পারেন বলে পুলিশের কাছে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বধূ। অভিযুক্তের খোঁজে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, নদিয়ার শান্তিপুর থানার গোপালপুর এলাকার বাসিন্দা বাপন শেখের সঙ্গে বছর নয়েক আগে বিয়ে হয় বীরপাড়ার এক যুবতীর। অভিযোগ, দাম্পত্য জীবনের শুরু থেকেই স্ত্রীকে মারধর করে আসছেন বাপন। স্ত্রীর উপর কেউ নজর দিচ্ছেন, এই সন্দেহে তাঁকে মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতন করতেন। প্রতিবেশীরা প্রায়শই স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া শুনেছেন। কিন্তু শনিবার রাতের ঘটনার পর স্তম্ভিত সকলে। অভিযোগ, গত শনিবার গভীর রাতে ঘুমন্ত স্ত্রীকে খুনের চেষ্টা করেন বাপন। প্রথমে তাঁর নাক কামড়ে একটা অংশ তুলে নেন। চিৎকারের চেষ্টা করলে স্ত্রীর গলা টিপে ধরেন এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে কামড় দেন।
ধস্তাধস্তি এবং যুবতীর চিৎকারে পরিবারের সদস্যেরা ছুটে গেলে অভিযুক্ত পালিয়ে যান। রক্তাক্ত অবস্থায় যুবতীকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। নাক, আঙুল এবং বুকে আঘাতের চিকিৎসা হয়েছে তাঁর। শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হওয়ার পরে স্বামীর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করেছেন মহিলা।
অভিযোগপত্রে আক্রান্ত জানান, ৮ বছর আগে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন বলে স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁর উপর অত্যাচার করতেন। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে অনেক দিন ধরে তিনি বাপের বাড়িতে আছেন। কিন্তু সেখানে তাঁর সঙ্গে স্বামীও থাকেন এবং তাঁর উপর অত্যাচার চলতে থাকে। তবে সংসার বাঁচানোর জন্য মুখ বুজে সমস্ত সহ্য করেন তিনি। কিন্তু গত ২ মে রাতে তাঁর ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা হয়েছে। অভিযোগপত্রে তিনি লেখেন, ‘‘আমার ঘুমিয়ে থাকার সুযোগ নিয়ে দু’হাত দিয়ে গলা টিপে ধরেছিল স্বামী। আমি বাঁচার তাগিদে ধাক্কা মারতে গেলে কামড় দিয়ে আমার নাক নিজের মুখে নিয়ে ও চিবোতে চিবোতে বলতে থাকে, ‘আজ তোকে মেরেই ফেলব।’’’ সর্বশক্তি দিয়ে স্বামীকে ঠেলে ফেলার চেষ্টা করলে তাঁর বাঁ হাতের মধ্যমা ও বুকে কামড় বসানো হয় বলে বধূর অভিযোগ। শেষে দাদার জন্য প্রাণে বেঁচেছেন বলে জানিয়েছেন যুবতীয় পুলিশের কাছে তিনি আশঙ্কা করেছেন, যে কোনও মুহূর্তে তাঁকে মেরে ফেলতে পারেন স্বামী। মেয়েকেও খুন করে ফেলতেন স্বামী। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে শান্তিপুর থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
আরও পড়ুন:
নাকের ব্যান্ডেজে দেখিয়ে বধূ বলেন, ‘‘আমাকে সব সময় (স্বামী) বলত, ‘তোমার নাক অত সুন্দর কেন? সবাই তোমার নাকের প্রশংসা করে কেন? তোমার জন্য তো পাড়ার ছেলেদের মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। আমি এ সব সহ্য করব না।’’