Advertisement
E-Paper

সিএএ বক্তৃতার পরে আটকে স্বপন দাশগুপ্ত, উপাচার্যও

অভিযোগ ওঠে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বিজেপি সমর্থিত সাংসদকে বিশ্বভারতীতে বক্তৃতা দিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২০ ০১:৩৭
আটকে স্বপন দাশগুপ্ত। নিজস্ব চিত্র।

আটকে স্বপন দাশগুপ্ত। নিজস্ব চিত্র।

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-এর বিরুদ্ধে সারা দেশের সঙ্গে এ রাজ্যেও যখন প্রতিবাদ চলছে, তখন বিজেপি সাংসদ স্বপন দাশগুপ্তকে ওই আইনের সমর্থনে ব্যাখ্যা দিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বভারতীতে। বুধবার তাঁর ওই কর্মসূচি ঘিরে দিনভর ছাত্র-বিক্ষোভে উত্তপ্ত হল শান্তিনিকেতন। বক্তৃতার ঘোষিত স্থান বদলে অন্যত্র সভা হলেও ছাত্র-বিক্ষোভে রাত পর্যন্ত আটকে থাকলেন বক্তা স্বপনবাবু, উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী-সহ অনেকে। অভিযোগ ওঠে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বিজেপি সাংসদকে বিশ্বভারতীতে বক্তৃতা দিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

এ দিন লিপিকা প্রেক্ষাগৃহে বেলা সাড়ে ৩টেয় ওই বক্তৃতা হওয়ার কথা ছিল। আগেই ওই বক্তৃতা বাতিলের দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছিল এসএফআই এবং ডিএসও। বেলা দেড়টা থেকেই ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করেন শ’খানেক ছাত্র-ছাত্রী। ‘বিশ্বভারতী ছাত্র ঐক্যে’র নামে মিছিল করে লিপিকা প্রেক্ষাগৃহে যান তাঁরা। লাল পতাকা নিয়ে চলতে থাকে স্লোগান, বিক্ষোভ। দ্রুত বক্তৃতার স্থান বদলে ফেলেন কর্তৃপক্ষ। বেলা সাড়ে ৩টে নাগাদ খবর আসে, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ শান্তিনিকেতন থেকে সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরে শ্রীনিকেতনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সোশ্যাল ওয়ার্ক বিভাগে ওই বক্তৃতা শুরু করে দিয়েছেন। আন্দোলনকারীরা দলবেঁধে সেখানে পৌঁছন। পথে পড়ে বোলপুরে প্রশাসনিক কাজে আসা জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসুর কনভয়। সেটিকে স্বপনবাবুর কনভয় ভেবে তা আটকেও বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। ওই বিভাগে পৌঁছে তাঁরা দেখেন পাঁচিলের গেটে তালা। তা ভেঙে দলবেঁধে ভিতরে ঢুকে যান বিক্ষোভকারীরা। তখন ভিতরে অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গিয়েছে। ভবনের দুটি গেটই আটকে উপাচার্য ও সাংসদের উদ্দেশে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান চলতে থাকে। ভিতর থেকেই ঘটনার নিন্দা করে টুইট করেন সাংসদ। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, ভিতরে জেলার একাধিক বিজেপি নেতা থাকায় বাইরে থেকে তাঁদের দলের সমর্থকেরা এসে পড়ুয়াদের ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি দেন।

বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ বক্তৃতা শেষ হওয়ার পরে স্বপনবাবু বেরোতে গেলেও তাঁকে বেরোতে দেননি আন্দোলনকারীরা। তাঁদের অভিযোগ, বিজেপি সাংসদকে বক্তৃতা দিতে আমন্ত্রণ জানিয়ে শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যের অবমাননা করা হয়েছে। সে জন্য উপাচার্যকে ক্ষমা চাইতে হবে। স্বপনবাবু বন্ধ গেটের ভিতর থেকেই বলেন, ‘‘উপাচার্যের আমন্ত্রণে আমি বক্তৃতা দিতে এসেছিলাম। এটা কোনও দলের অনুষ্ঠান নয়। যাঁরা সিএএ-র বিরোধী, তাঁরা সভায় এসে তাঁদের কথা বলতে পারতেন। তা না করে যাঁরা এমন করলেন, তাঁরা গণতান্ত্রিক চর্চা চান না।’’

গেট আটকে বিক্ষোভ পড়ুয়াদের। নিজস্ব চিত্র

রাতে উপাচার্য আন্দোলনকারীদের দাবি জানতে চান। পড়ুয়ারা দাবি করেন, উপাচার্যকে তাঁদের সামনে এসে ক্ষমা চাইতে হবে। উপাচার্য বাইরে না আসায় রাত পর্যন্ত ভিতরে আটকে ছিলেন সবাই। বাইরে অবস্থানে ছিলেন পড়ুয়ারাও। রাতে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় টুইট করে জানান, রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্রকে পরিস্থিতির মোকাবিলায় দ্রুত ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছেন তিনি। ধনখড়ের কথায়, ‘‘এই নৈরাজ্য এবং আইন-শৃঙ্খলাগত ব্যর্থতা চিন্তার বিষয়। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির চেহারাটা এই ঘটনা থেকে স্পষ্ট। প্রশাসনের কাজ যে এখন লাটে উঠেছে, তা ভাবনার বিষয়। এ দিকে নজর দেওয়ার সময় এসে গিয়েছে।’’ উপাচার্য অবশ্য সারা দিন এক বারও পুলিশকে ক্যাম্পাসে ডাকেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষীরাই শুধু ছিলেন।

Biswa Bharati University Swapan Dasgupta BJP CAA
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy