বঙ্গ বিজেপির অন্দরে আবার চর্চায় বনভোজন। প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর জন্মদিনকে সামনে রেখে ২৫ ডিসেম্বর হবে এই বনভোজন। সূত্রের দাবি, আসন্ন বিধানসভা ভোটের আগে ‘নিষ্ক্রিয় আদি নেতা-কর্মীদের’ সক্রিয় করতেই এমন আয়োজন। যদিও বিজেপির এই কর্মসূচিকে কটাক্ষ করেছেতৃণমূল কংগ্রেস।
গত বিধানসভা ভোটে প্রত্যাশিত সাফল্য না-পাওয়ার জেরে এবং নতুন রাজ্য কমিটি গঠনের পরে আদি-নেতাদের অনেকে বাদ পড়েছিলেন। জেলা-স্তরেও কার্যত ‘বসিয়ে’ দেওয়া হয়েছিল প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত নেতাদের একাংশকে। এর পরে, বিক্ষুব্ধ, এমনকি ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর নেতাদেরও অনেকে মূলত নিজেদের ‘দল ভারী’ করতে বনভোজনেরআসর বসাতেন।
কিন্তু বছর চারেক বাদে ফের বনভোজন-আয়োজন সম্পর্কে অন্যতম আয়োজক রাজকমল পাঠক বলছেন, “সামনে ভোট। সব নেতা-কর্মীকে মাঠে নামানো দরকার। সবাইকে ডেকে মান-অভিমান ভুলিয়ে দিয়ে তাঁদের সক্রিয় করতেই এমন উদ্যোগে। তিন হাজারের বেশি নেতা-কর্মীর আসার কথা। সম্ভবত জাতীয় গ্রন্থাগারে এই আয়োজন হবে।”
প্রসঙ্গত, সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠ শমীক ভট্টাচার্য দলের রাজ্য সভাপতি হওয়ার পরে আদি-নেতাদের গুরুত্ব বৃদ্ধি নিয়ে চর্চা রয়েছে। তবে নতুন রাজ্য কমিটি এখনও তৈরি না-হওয়ায় পুরো ছবি এ পর্যন্ত পরিষ্কার হয়নি। এই পরিস্থিতিতে পুরনো নেতাদের সক্রিয় করতেই বনভোজন। ঘটনাচক্রে, বর্তমান পদাধিকারীদের অনেকেই আমন্ত্রিত না-হলেও, সেখানে ডাকা হয়েছে খোদ শমীককে। আয়োজকদের বক্তব্য, “দলের বাইরে গিয়ে কিছু হচ্ছে না। রাজ্য সভাপতির নেতৃত্বেই যা হওয়ার হবে।”
‘পুরনো’ মুখদের অন্যতম প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বনভোজনে ডাক পাচ্ছেন কি না, তা নিয়ে অবশ্য ধন্দ রয়েছে। অন্যতম আয়োজক প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “আগে সব চূড়ান্ত হোক, তার পরে এই নিয়ে কথা বলা যাবে।” যদিও দিলীপের বক্তব্য, “খুবই ভাল উদ্যোগ। দলে অনেক পুরনো নেতা আছেন। এক সঙ্গে এলে, কথা বললে ভাল হবে। যোগাযোগ বাড়বে। আমাকে এখনও কেউ কিছু জানাননি। ডাকলে অবশ্যই যাব।”
বছর চারেক আগে বনভোজনের অন্যতম আয়োজক ছিলেন বিজেপির তৎকালীন বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার। বর্তমানে তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি সেই জয়প্রকাশ অবশ্য বিজেপির কর্মসূচিকে কটাক্ষ করে বলেছেন, “এক দিন কর্মীদের ডেকে মুরগির মাংস খাওয়ালে কিছু হয় না। আচমকা খাতির করলে বরং মধ্যে সন্দেহ তৈরি হয় যে, ধান্দা আছে! দৈনন্দিন যোগাযোগ, কর্মীদের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা ও বিশ্বাসযোগ্যতার প্রয়োজন হয়।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)