উত্তরবঙ্গের প্রতি ধারাবাহিক ভাবে বিমাতৃসুলভ আচরণ করে চলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার— দীর্ঘদিন ধরে এমন দাবি করে আসছে বিজেপি। ‘বঞ্চনা’র ওই ছবিটি পাল্টাতে আজ কেন্দ্রীয় প্রকল্পের তদ্বির করে দিল্লিতে পাঁচ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দ্বারস্থ হলেন উত্তরবঙ্গের দশ বিজেপি বিধায়ক।
গরুমারা ও মহানন্দা অভয়ারণ্যকে দীর্ঘদিন ধরেই জীববৈচিত্র এলাকা হিসেবে ঘোষণা করার দাবি উঠেছে। এ ব্যাপারে কেন্দ্র এগিয়ে এলেও রাজ্য সরকার কার্যত কোনও সক্রিয় ভূমিকাই নিচ্ছে না বলে অভিযোগ বিজেপির। গেরুয়া শিবিরের দাবি, যার সুযোগ নিয়ে অভয়ারণ্য লাগায়ো এলাকার জমি দখল করে নিচ্ছেন জমি মাফিয়ারা। যা ব্যবহার হচ্ছে বাণিজ্যিক কাজে। ‘উত্তরবঙ্গের জঙ্গলকে বাঁচাতে’ তাই আজ বিধানসভায় বিজেপির মুখ্য সচেতক শঙ্কর ঘোষের নেতৃত্বে বিজেপির বিধায়ক দলটি কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদবের সঙ্গে দেখা করে। বিষয়টি নিয়ে দ্রুত রাজ্যের সঙ্গে কথা বলার আশ্বাস দেন ভূপেন্দ্র। এ ছাড়াও কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী অন্নপূর্ণা দেবীর কাছে গিয়ে আইসিডিএস প্রকল্পে রাজ্যে হওয়া নানাবিধ দুর্নীতির বিষয়গুলি তুলে ধরে বিধায়ক দলটি। বিধায়কেরা কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়ার সঙ্গে দেখা করে উত্তরবঙ্গে একটি ‘খেলো ইন্ডিয়া’ কেন্দ্র গঠনের দাবিও জানিয়েছেন।
পশ্চিমবঙ্গে একশো দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় গত প্রায় আড়াই বছর ধরে এই খাতে রাজ্যের জন্য অর্থ বরাদ্দ বন্ধ রেখেছে কেন্দ্র। তৃণমূল নেতৃত্বের মতে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকেই ওই কাজ করছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। আজ কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের সঙ্গে কৃষি সংক্রান্ত সমস্যার বিষয়ে কথা বলেন শঙ্কর ঘোষেরা। তৃণমূল যে কেন্দ্রীয় বঞ্চনা ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ তুলেছে, তা নস্যাৎ করে দিয়ে শঙ্কর বলেন, ‘‘রাজ্যের বাজেট ৩ লক্ষ কোটি টাকার। যার মধ্যে রাজ্যের আয় হয় ৯০ হাজার কোটি টাকা। ওই আয়ে নিজেদের কর্মীদের বেতন দিতে পারছে না রাজ্য সরকার। ফলে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প ঘুরিয়ে রাজ্যের কাজে লাগাচ্ছে সরকার।’’ তাঁর দাবি, এর ফলে কেন্দ্রীয় অর্থের অপব্যবহার করছে রাজ্য, যা ধরে ফেলেছে মোদী সরকার। এখন রাজ্যবাসীকে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার কথা বলা হচ্ছে বলেও
দাবি তাঁর।
তৃণমূলের তরফে পাল্টা বলা হয়েছে, রাজ্যের বিধায়ক হয়ে রাজ্যকে বঞ্চনার কথা বলছেন না শঙ্কররা, যা রাজ্যের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)