Advertisement
E-Paper

অভিষেকের কেন্দ্রে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে ঘিরে বিক্ষোভের আড়ালে ববিই, মনে করছে দল, শোকজ় করল বিজেপি

শোকজ়ের চিঠিতে বলা হয়েছে, সাত দিনের মধ্যে অভিজিৎকে লিখিত ভাবে কারণ দর্শাতে হবে। বঙ্গ বিজেপির তরফ থেকে অভিজিৎকে জানানো হয়েছে যে, পরবর্তী নির্দেশ পর্যন্ত তাঁকে বরখাস্ত করা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০২৪ ১০:৫৯

— গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারের পরাজিত বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ দাস (ববি)-কে শোকজ় করল বিজেপি। সাময়িক ভাবে তাঁকে বরখাস্তও করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতেই অভিজিৎকে শোকজ়ের চিঠি তৈরি হয়ে গিয়েছিল। বিজেপির ‘তথ্যানুসন্ধানী’ দলকে ডায়মন্ড হারবারে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হওয়াতেই অভিজিতের বিরুদ্ধে ওই সিদ্ধান্ত। ভোট পরবর্তী ‘সন্ত্রাস’ পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রাজ্যে এসেছে ওই ‘তথ্যানুসন্ধানী’ দল। যার আহ্বায়ক ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। মঙ্গলবার ডায়মন্ড হারবারে সেই প্রতিনিধি দল বিজেপিরই ঘরছাড়াদের একাংশের বিক্ষোভের মুখে পড়ে। ওই ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়ে রাজ্য বিজেপি।

দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বিজেপির দীর্ঘ দিনের কর্মী হিসাবেই পরিচিত অভিজিৎ। একাধিক বার পদ্ম প্রতীকে ভোটেও লড়েছেন তিনি। এ বার লোকসভা ভোটে ডায়মন্ড হারবারে অভিষেকের বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছিলেন। সেই অভিজিৎকেই কারণ দর্শানোর চিঠি পাঠিয়েছে বিজেপি। করেছে বরখাস্তও। অভিজিৎকে কেন শোকজ়, তার ব্যাখ্যা দিয়ে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের তরফে দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির প্রধান প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, মঙ্গলবারের ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বৈঠকে গরহাজির থাকা, ভোট-পরবর্তী ‘হিংসায় আক্রান্ত’দের সেই বৈঠকে যেতে না দেওয়া এবং কর্মীদের দ্বারা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে ঘেরাও, অনৈতিক মন্তব্য এবং পরবর্তী কালে ডায়মন্ড হারবারের বিজেপির জেলা অফিসে বিশৃঙ্খলায় অভিজিৎকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। সাত দিনের মধ্যে লিখিত ভাবে নিজের বক্তব্য জানাতে বলা হয়েছে তাঁকে। নেতৃত্বের পরবর্তী নির্দেশ পর্যন্ত তাঁকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করার কথাও চিঠিতে লেখা রয়েছে।

বিজেপির অন্দরের একটি অংশের দাবি, সপ্তম দফায় ডায়মন্ড হারবারে ভোটের দিন থেকেই তাল কাটার শুরু। সে দিন ফলতা এলাকায় শ’চারেক বুথে ‘পুনর্নির্বাচন’-এর দাবি জানিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু পরবর্তী কালে সেই দাবি নিয়ে উদ্যোগী হতে দেখা যায়নি রাজ্য বিজেপির নেতাদের। ঘনিষ্ঠমহলে তা নিয়ে ‘অসন্তোষ’ প্রকাশ করেন অভিজিৎ। এ ছাড়াও বিজেপির জেলা সভাপতি অভিজিৎ সর্দারের কর্মকাণ্ড নিয়েও একাধিক বার ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন প্রার্থী অভিজিৎ। টাকাপয়সা নিয়েও ক্ষোভ ছিল অভিজিতের। অনেকেই মনে করছেন, সেই ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ দেখা গিয়েছে মঙ্গলবার। সে দিন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ভোট পরবর্তী হিংসা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গিয়েছিলেন আমতলায়। কিন্তু অভিযোগ, দলীয় কার্যালয়ে বৈঠক করলেও অভিজিতের বাড়িতে আশ্রয়-নেওয়া ঘরছাড়াদের সঙ্গে দেখা করতে যাননি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন ঘরছাড়াদের একাংশ। তাঁরা পথের মধ্যেই ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা ‘তথ্যানুসন্ধানী’ দলের আহ্বায়ক বিপ্লবের গাড়ি আটকে দেন। সরাসরি ক্ষোভের কথা জানান তাঁকে। কিন্তু অভিযোগ, তবুও কেন্দ্রীয় টিমকে তাঁদের আশ্রয়স্থলে নিয়ে যেতে পারেননি ঘরছাড়ারা। এর পরেই স্থানীয় বিজেপি অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেন বিক্ষোভকারী ঘরছাড়াদের একাংশ। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সামনে এ ভাবে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসায় অস্বস্তিতে পড়ে বিজেপি। তার পরেই তড়িঘড়ি অভিজিৎকে শোকজ়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এ নিয়ে আনন্দবাজার অনলাইনকে অভিজিৎ বলেছেন, ‘‘আমি এখনও কোনও চিঠি পাইনি। ইমেলে-ও আসেনি, হাতেও পাইনি। চিঠি পেলে তার পর প্রতিক্রিয়া জানাব।’’ প্রসঙ্গত, সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টরে বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে আলোচনা করতে যে বৈঠক ডাকা হয়েছিল, তাতে যোগ দিয়েছেন অভিজিৎ।

Show cause Notice BJP Sukanta Majumdar Agitation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy