E-Paper

রাজ্য জুড়ে বিজেপির বিক্ষোভ, শুভেন্দুর লক্ষ্য ১৮০ আসন

বিধানসভায় অর্থ সংক্রান্ত বিল নিয়ে এ দিন আলোচনা শুরু হতেই বারুইপুরের ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন বিজেপি বিধায়কেরা।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০২৫ ০৯:০৮
বিধানসভার বাইরে বিজেপি বিধায়কদের প্রতিবাদ।

বিধানসভার বাইরে বিজেপি বিধায়কদের প্রতিবাদ। নিজস্ব চিত্র।

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মিছিলে ‘হামলা’র যে অভিযোগ উঠেছিল বারুইপুরে, তাকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার বিধানসভা-সহ রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদে পথে নামল বিজেপি। বিধানসভার মূল ফটকে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে তীব্র বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বিজেপি বিধায়কেরা। এই সবের মধ্যেই আগামী বিধানসভা ভোটে অন্তত ১৮০টি আসনে জয়ের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন শুভেন্দু। পাল্টা ‘চ্যালেঞ্জ’ জানিয়ে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল কংগ্রেসও। রাজ্যে ‘হিংসা’ নিয়ে এ দিনই ফের সরব হয়েছেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস।

বিধানসভায় অর্থ সংক্রান্ত বিল নিয়ে এ দিন আলোচনা শুরু হতেই বারুইপুরের ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন বিজেপি বিধায়কেরা। প্রথমে ‘ওয়েলে’ নেমে বিক্ষোভ, পরে কক্ষত্যাগ করে বিধানসভার মূল ফটকের সামনে কালো কাপড় হাতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিরোধীরা। তাঁরা অধিবেশনে যোগ দেবেন না জানিয়ে বিজেপির মুখ্য সচেতক শঙ্কর ঘোষ বলেন, “স্পিকার দলদাস, তা আবার প্রমাণিত। ওঁর কেন্দ্রে বিরোধী দলনেতার গাড়িতে হামলা হয়েছে। তাই বিক্ষোভ দেখাচ্ছি।” যদিও চাকদহের বিজেপি বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষের বক্তব্য, “বাজেট অধিবেশনে স্বাস্থ্য দফতর বা শিক্ষা নিয়ে আলোচনা আমরা বয়কট করলাম। এটা আমাদের ভুল হয়েছে।” বিরোধী দলনেতার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে চান বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

বারুইপুরের ঘটনার প্রতিবাদে এ দিন রাজ্য জুড়েই পথে নেমেছিল বিজেপি। ব্যারাকপুর স্টেশনের সামনে পথ অবরোধ করেছিলেন দলের জেলা সভাপতি মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, মহিলা মোর্চার রাজ্য সভাপতি ফাল্গুনী পাত্র, আইনজীবী-নেতা কৌস্তভ বাগচী-সহ অন্যেরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ এলে ধস্তাধস্তি বাধে দু’পক্ষে। কলকাতায় সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ে অবরোধ করেছিলেন দলের উত্তর কলকাতা সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষ, তাপস রায় প্রমুখ। বারুইপুর, সোনারপুরে ধিক্কার মিছিল এবং সোনারপুর থানা ঘেরাও করেছিলেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা।

এই আবহে ফের ধর্ম সংক্রান্ত কথা বলে রাজনীতির সুর বেঁধে দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা স্বয়ং। দোলের দিন গোলমালের ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে এ দিন তমলুকে শুভেন্দুর নেতৃত্বে বিজেপির মিছিল ছিল। সেই কর্মসূচির শেষে শুভেন্দু বলেছেন, “বাংলার সনাতনী সমাজ মুক্তি পাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রাক্তন হলে। শপথ নিন, আমরা দেব ১৬ (পূর্ব মেদিনীপুরে ১৬টি বিধানসভা), রাজ্যে হবে অন্তত ১৮০ এবং মমতাকে প্রাক্তন করব।” তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের পাল্টা চ্যালেঞ্জ, “বিজেপির লক্ষ্য ক্রমশ কমছে। ’২১-এ শুনলাম, ২০০ পার। পেয়েছিল ৭৭, এখন ৬৩। এই বারে ৩০ পেয়ে দেখান!”

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষ্ঠানে এসে বারুইপুরের ঘটনার সূত্রে এ দিন রাজ্যপাল বোস বলেছেন, “সরকার, বেসরকারি সংগঠন, নাগরিক সমাজকে হিংসা রুখতে এগিয়ে আসতে হবে। কারও জীবনের বিনিময়ে এই হিংসা কাম্য নয়।” পাশাপাশি, সবার সহযোগিতায় রামনবমী শান্তিতেই উদ্‌যাপন করা হবে বলে আশাপ্রকাশ করেছেন বোস।

এই প্রেক্ষিতে তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে ফের ‘ধর্ম নিয়ে রাজনীতি’ করার অভিযোগ তুলেছে সিপিএম। ইদ ও রামনবমীর মুখে যে ধরনের পরিস্থিতি ‘তৈরি করা’ হচ্ছে, তাতে ‘উত্তেজনাপ্রবণ’ এলাকা চিহ্নিত করে শান্তি বজায় রাখতে দলের কর্মীরা সক্রিয় থাকবেন বলে জানিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তাঁর সংযোজন, “মানুষকে যাঁরা ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ করছেন, সাম্প্রদায়িক বিষ ছড়াচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে সরকার পদক্ষেপ করছে না। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সাজানো বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেননি। বামেরা বিভিন্ন থানায় শুভেন্দুর সাম্প্রদায়িক ভাষণের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

BJP TMC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy