Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

কোনও বুথে ৩ কোথাও ৫টি ভোট, ক্ষুব্ধ বিজেপি

কোথাও বিরোধীদের প্রাপ্ত ভোট তিন। কোথাও পাঁচ।মঙ্গলবার উপনির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর বুথভিত্তিক কাঁটাছেড়ায় এমনই তথ্য উঠে আসায় বিজেপি সম্পূর্ণ তথ্যের তালিকা তৈরি করে নির্বাচন কমিশনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

কোচবিহারের নব্য সাংসদ পার্থপ্রতিম রায় বুধবার হাসপাতালে গিয়ে দেখা করলে বিধায়ক মিহির গোস্বামীর সঙ্গে। — নিজস্ব চিত্র

কোচবিহারের নব্য সাংসদ পার্থপ্রতিম রায় বুধবার হাসপাতালে গিয়ে দেখা করলে বিধায়ক মিহির গোস্বামীর সঙ্গে। — নিজস্ব চিত্র

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৬ ০২:৫৯
Share: Save:

কোথাও বিরোধীদের প্রাপ্ত ভোট তিন। কোথাও পাঁচ।

মঙ্গলবার উপনির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর বুথভিত্তিক কাঁটাছেড়ায় এমনই তথ্য উঠে আসায় বিজেপি সম্পূর্ণ তথ্যের তালিকা তৈরি করে নির্বাচন কমিশনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিজেপি এই উপনির্বাচনে দ্বিতীয় শক্তি হিসেবে উঠে এসেছে। তাঁদের দাবি, বহু বুথে ‘ভোট হয়নি’। ভোটারদের হাতে কালির চিহ্ন দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে নিজেরাই ভোট দিয়েছে তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা।

তৃণমূলের কোচবিহার আসনের জয়ী প্রার্থী পার্থপ্রতিম রায় যে বুথের ভোটার, সেই জিরানপুরের টুপামারি বুথে মোট ভোটার ৯১৩। এর মধ্যে ভোট পড়েছে ৭৭৬টি। বিজেপির খাতায় ৬টি ভোট পড়েছে। পার্থবাবুই পেয়েছেন ৭৭০টি। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের দাবি, মানুষ তাঁদের সঙ্গে আছেন, তাই দু’হাত ভরে আশীর্বাদ করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিজেপি-র তো কোনও সংগঠনই নেই। তারা এত ভোট পেল কী করে?’’ পার্থপ্রতিমবাবুর পাড়ার কয়েকজন প্রবীণ বাম সমর্খকও জানিয়েছেন, চোখের সামনে তাঁরা তাঁকে ছোট হতে বড় দেখেছেন। পার্থপ্রতিমবাবু তরুণ ও ভাল লোক। তাই তাঁরাও পার্থপ্রতিমবাবুকেই ভোট দিয়েছেন।

বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি নিখিলরঞ্জন দে অবশ্য বলেন, ‘‘তিন বা পাঁচটি করে ভোট তো আমাদের পাওয়ার কথা নয়। প্রতি বুথে আমাদের দলের যে কর্মীরা রয়েছেন, তাঁদের পরিবার পিছুই তো পাঁচ থেকে ছ’জন ভোটার রয়েছেন। তাঁরা কি স্বেচ্ছায় ভোট দিলেন না, নাকি তাঁদের ভোট দিতে দেওয়া হল না, সেটা খতিয়ে দেখা দরকার।’’

বিজেপির দাবি, নাটাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের দেওচড়াইয়ের ২৪৬ নম্বর বুথে মোট ভোটার ৮৪৯। এর মধ্যে ৭৮৫টি ভোট পড়েছে। তৃণমূল পেয়েছে ৭৭১টি ভোট। বিজেপি পেয়েছে ৩টি। অন্য দলগুলিও একটি, দু’টি করে ভোট পেয়েছে। চিলাখানার একটি বুথে ৪২৩টি ভোট পড়েছে। তার মধ্যে বিজেপি পেয়েছে ৫টি। তৃণমূলের বাক্সে গিয়েছে ৪০৪টি ভোট। বাম সহ অন্য দলগুলি হাতে গোণা ভোট পেয়েছে। বিজেপির, দাবি, নাটাবাড়ি থেকে শুরু করে দিনহাটা, সিতাই, কোচবিহার দক্ষিণ, মাথাভাঙা এলাকার বহু বুথেই এমন পরিসংখ্যান উঠে এসেছে। দলের রাজ্য সভাপতি বলেন, ‘‘কিছু কিছু বুথের ভোট শতাংশের হিসেব থেকেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে যে কিভাবে ছাপ্পা, রিগিং চলেছে। তা নির্বাচন কমিশনের নজরে আনা হবে।” ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য প্রাক্তন বিধায়ক অক্ষয় ঠাকুরের দাবি, ‘‘যা ভোট হয়েছে তাতে বিরোধীদের ওই তিন বা পাঁচ ভোটও শাসক দলের সৌজন্যেই পাওয়া। চক্ষু লজ্জায় ওইটুকু ছাড়তে হয়েছে তৃণমূলকে।’’ তৃণমূলের উদয়ন গুহর বক্তব্য, ‘‘সব দলকেই মানুষের চেনা হয়ে গিয়েছে। এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলই কেবল তাঁদের কাছের। বিরোধীরা মিথ্যা অভিযোগ করছে।’’ প্রশাসনও জানিয়েছে, ভোট শান্তিপূর্ণ হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Vote Election commission
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE