Advertisement
০২ মে ২০২৪
BJP

বিনা যুদ্ধে ভারত দখলের পরিকল্পনা চলছে বাংলার সীমান্তে, বড় অভিযোগ তুলে প্রস্তাব রাজ্য বিজেপির

রাজ্য বিজেপির রাজনৈতিক প্রস্তাবে অনুপ্রবেশের বিষয়টিতে সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হলেও পাশাপাশি উল্লেখ করা হয়েছে এই মুহূর্তে আলোচ্য বিভিন্ন দুর্নীতির বিষয়কে।

শনিবার দুর্গাপুরে ছিল বিজেপির রাজ্য কর্মসমিতির বৈঠক।

শনিবার দুর্গাপুরে ছিল বিজেপির রাজ্য কর্মসমিতির বৈঠক। — নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৩ ১৬:৩৪
Share: Save:

বাংলায় অনুপ্রবেশ গেরুয়া শিবিরের অনেক পুরনো অভিযোগ। সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে অনুপ্রবেশের ফলে জনসংখ্যার ধর্মীয় বিন্যাসে বদল আসছে বলে বরাবর দাবি করা হয়। এ নিয়ে বাংলায় এসে সরব হতে দেখা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও। এ বার সেই দাবিকে আরও জোরালো ভাবে রাজনীতির ময়দানে নিয়ে আসতে চায় রাজ্য বিজেপি। দুর্গাপুরে দলের রাজ্য কর্মসমিতির বৈঠকে আনা রাজনৈতিক প্রস্তাবে অনুপ্রবেশের বিষয়টি উল্লেখ করতে এমনটাও বলা হয়েছে যে, বিনা যুদ্ধে ভারত দখলের পরিকল্পনা চলছে বাংলার সীমান্ত এলাকায়।

দুর্গাপুরে গত শুক্রবার রাজ্য বিজেপির পদাধিকারীদের বৈঠক হয়। সেখানে রাজ্যের সব প্রধান নেতার পাশাপাশি বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারাও হাজির ছিলেন। রাজনৈতিক প্রস্তাবে কোন কোন বিষয় রাখা হবে, তা নিয়ে সেখানে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এর পরে শনিবার কর্মসমিতির বর্ধিত বৈঠকে সেই প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে। বর্তমানে গোপনে থাকা সেই প্রস্তাবে অনুপ্রবেশের উপরে বেশি করে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলেই বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে। সেখানে এই রাজ্যে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) কার্যকর করা প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

বিজেপির সংবিধান অনুসারে বছরে চার বার জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক হয়। তার পরে পরেই রাজ্য স্তরের কর্মসমিতির বৈঠক বসে। গত ১৬ ও ১৭ জানুয়ারি দিল্লিতে জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে বাংলার বিষয়ে আলাদা করে জোর দিতে দেখা যায় মোদীকে। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার রাজ্য সম্পর্কে বলার সময়ে বাংলায় বিজেপির লড়াই নিয়ে প্রশংসা করেন মোদী। ‘‘বাংলার নেতাদের জন্য কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয়’’ বলে উল্লেখ করেন তিনি। মোদীর এই সার্টিফিকেটে স্বাভাবিক ভাবেই উজ্জীবিত রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। দুর্গাপুরের বৈঠকেও মোদীর বক্তব্য নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কী ভাবে এই রাজ্য থেকে আগামী লোকসভা নির্বাচনে ২৫টির বেশি আসন জেতা যায়, তা নিয়ে সব স্তরের নেতার মতামতও চান সুকান্ত। একই সঙ্গে দলের আগামী প্রচারাভিযানে কোন কোন বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে, তা নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। তারই প্রতিফলন রয়েছে দলের রাজনৈতিক প্রস্তাবে।

বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজনৈতিক প্রস্তাবে অনুপ্রবেশের বিষয়টিতে সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হলেও পাশাপাশি উল্লেখ করা হয়েছে এই মুহূর্তে আলোচ্য বিভিন্ন দুর্নীতির বিষয়কে। আবাস যোজনায় স্বজনপোষণ, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা যেমন রয়েছে, তেমনই কেন্দ্রীয় বাহিনীর মাধ্যমেই পঞ্চায়েত নির্বাচন করা দরকার বলে প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে বলেই গেরুয়া শিবির সূত্রে দাবি। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আগেই এ নিয়ে সরব হয়েছেন। এ বার তা দলীয় প্রস্তাবেও জায়গা পেল।

রাজ্যের শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলনের কথা বলার পাশাপাশি প্রস্তাবে বিচারব্যবস্থার প্রতি আক্রমণের নিন্দা করা হয়েছে বলে দাবি। এসেছে ধর্মীয় প্রশ্নও। দলীয় সূত্রে খবর, বাংলায় অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির হিন্দুরা কম সুবিধা পাচ্ছেন বলে উল্লেখ রয়েছে প্রস্তাবে। বলা হয়েছে, কোনও রকম সমীক্ষা ছাড়াই ৮১টি অনগ্রসর শ্রেণির মধ্যে ৭৩টি মুসলমান সম্প্রদায়। একই সঙ্গে বিজেপির প্রস্তাবে বলা হয়েছে, রাজ্য সরকার সংখ্যালঘুদের প্রতি অনুরাগ প্রকাশ করলেও গত দশ বছরে রেকর্ড পরিমাণে ওয়াকফ বোর্ডের সম্পত্তি বিক্রি হয়ে গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP infiltration Bangladeshi Infiltration
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE