Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
BJP

BJP: বামেদের টপকে পুরভোটে দ্বিতীয় হওয়া যাবে তো! কলকাতায় ছন্নছাড়া সংগঠন নিয়ে উদ্বিগ্ন পদ্ম

২০১৫ সালে কলকাতা পুর এলাকার ১৪৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১১৪টিতে জয় পায় তৃণমূল। বামেরা পেয়েছিল ১৫টি ওয়ার্ড আর বিজেপি ৭টি।

দ্বিতীয় হওয়ার লড়াই চালাবে বিজেপি।

দ্বিতীয় হওয়ার লড়াই চালাবে বিজেপি। গ্রাফিক: সৌভিক দেবনাথ

পিনাকপাণি ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২১ ১৭:৪১
Share: Save:

স্বপ্ন যে সত্যি করা সম্ভব নয় সে বাস্তব বুঝেছে বিজেপি। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে কলকাতার ২২টি ওয়ার্ডে এগিয়ে ছিল গেরুয়া শিবির। ঠিক যেমন ভাবে রাজ্যের ১২১টি বিধানসভা আসনেও এগিয়ে ছিল। সেই হিসেব কষেই বিজেপি-র স্বপ্ন ছিল গঙ্গাপারের নীলবাড়ির দখল পাবে দল। তার আগে ছোট লালবাড়ি কলকাতা পুরসভা দখলের স্বপ্নও ছিল বিজেপি-র। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সে স্বপ্ন যে বাস্তাবায়িত করা সম্ভব নয় সেটা বুঝে এখন বিজেপি-র লক্ষ্য, যে কোনও মূল্যে দ্বিতীয় স্থান নিশ্চিত করা। কারণ, বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পরে সংগঠনের যে ছন্নছাড়া দশা তা নিয়েই উদ্বিগ্ন বিজেপি নেতৃত্ব।

২০১৫ সালে কলকাতা পুর এলাকার ১৪৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১১৪টিতে জয় পায় তৃণমূল। বামেরা পেয়েছিল ১৫টি ওয়ার্ড আর বিজেপি ৭টি। কংগ্রেস জয় পায় ৫টি ওয়ার্ডে। বাকি ৩টি ওয়ার্ডে জয়ী হন নির্দল প্রার্থীরা। এর পরে দু’টি নির্বাচন হয়েছে। ২০১৯-এর লোকসভা ও ২০২১-এর বিধানসভা। তারও পরে কলকাতার ভবানীপুর আসনে সেপ্টেম্বরে উপনির্বাচন হয়েছে। আর প্রতিটিতেই মহানগরের ওয়ার্ডভিত্তিক ফল বদলে গিয়েছে।

রাজ্য বিজেপি-র হিসেব মতো ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে ১৩২টি ওয়ার্ড এলাকায় এগিয়ে ছিল তৃণমূল। পিছিয়ে ছিল ৭০, ৭৪, ৮৭, ২২, ২৩, ২৫, ২৭, ৪২, ২১, ২৪, ৩১ এবং ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডে। বিজেপি এগিয়ে ছিল প্রথম ১১টি ওয়ার্ডে। কংগ্রেস এগিয়ে ছিল শুধুই ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডে। বামেরা কোথাওই এগিয়ে থাকতে পারেনি। ভবানীপুর উপনির্বাচনে দেখা যায় ৭০ ও ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডে ফের এগিয়ে গিয়েছে তৃণমূল। ফলে বিজেপি-র অঙ্ক বলছে শহরের ৯টি ওয়ার্ড এলাকায় পদ্মে এগিয়ে। যদিও বিধানসভা নির্বাচন আর পুরনির্বাচনের ভোটের হিসেব যে এক হয় না সেটাও মাথায় রাখছে বিজেপি। আর সেই হিসেব ধরেই গত বছরের মতো এ বারেও কমপক্ষে ৭টি ওয়ার্ডে যাতে জয় পাওয়া যায় সেটাই লক্ষ্য বিজেপি-র। তবে গত বার ৭টি আসন জিতলেও স বক’টি ধরে রাখতে পারেনি গেরুয়া শিবির। ৭, ২২, ২৩, ৪২, ৭০ ৮৬, এবং ৮৭ ওয়ার্ডে জয় পায় বিজেপি। যার মধ্যে ৭ এবং ৭০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাপি ঘোষ ও অসীম বসু পরে তৃণমূলে যোগ দেন। এ বার ওই ওয়ার্ডগুলি না হলেও মোট কমপক্ষে ৭টি ওয়ার্ড পেতে চাইছে বিজেপি। এক রাজ্য নেতার কথায়, ‘‘বিধানসভা নির্বাচনের ফলের উপরে কিছুই নির্ভর করে না। তবে এটাও ঠিক যে কলকাতায় আমাদের সাংগঠনিক শক্তি বরাবরই কম। আর এখন তা বেশ ছন্নছাড়া অবস্থায়। তাই বড় লক্ষ্য নেওয়ার কোনও অর্থই হয় না। দ্বিতীয় স্থান নিশ্চিত করাটাই প্রধান লক্ষ্য।’’

বুধবারই কলকাতা পুরসভার নির্বাচন পরিচালন কমিটি ঘোষণা করেছে বিজেপি। গত ৯ নভেম্বর এই দুই পুর এলাকায় ভোটের প্রচার ও পরিচালনার দায়িত্বে কারা থাকবেন তা নিয়ে বৈঠক হয় গেরুয়া শিবিরের। সেই বৈঠকে হাজির ছিলেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেখানেই ঠিক হয় কমিটিতে কারা থাকবেন। ঘোষণা মতো কমিটির মাথায় রয়েছেন প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী। আর দীনেশের চার সহকারী হয়েছেন তুষারকান্তি ঘোষ, রুদ্রনীল ঘোষ, বিজয় ওঝা এবং বৈশালী ডালমিয়া। কলকাতায় পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে থাকবেন ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহ, রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক তথা পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোতির্ময় মাহাতো এবং রাজ্যের সহ-সভাপতি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়। গত কয়েক দিন কলকাতার পুরভোটের দায়িত্ব পাওয়া নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন সুকান্ত, শুভেন্দু। বিজেপি সূত্রে খবর, নেতৃত্ব চাইছেন ১৪৪ কেন্দ্রেই যেন ভাল প্রার্থী দেওয়া যায়। বিধানসভায় প্রধান বিরোধী দল হওয়ার পরে পুরসভাতেও সেই তকমা পেতে হবে। গতবারের অভিজ্ঞতা এবং গত কয়েক মাসে ৫ বিধায়ক খোয়ানো বিজেপি নেতৃত্ব প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও এই বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। বিজেপি সূত্রে খবর, ভোট-কমিটির বড় কাজ হবে এমন প্রার্থী বাছা যাঁরা কোনও ভাবেই জয়ের পরে দলবদল করবেন না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP TMC CPM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE