পুরভোট যত এগিয়ে আসছে, বিজেপি সমর্থকদের উপরে তৃণমূলের হামলার অভিযোগ পাল্লা দিয়ে বাড়ছে।
শুক্রবার বিজেপি প্রার্থীর স্বামীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে। বৃহস্পতিবার রাতে হুগলির চাঁপদানিতে এক দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া মার খায়। ওই রাতেই হাওড়ার উলুবেড়িয়ায় বিজেপি প্রার্থীর ছেলে এবং এজেন্টকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূল অবশ্য সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।
এ দিন বিকেলে বিষ্ণুপুরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী সুলগ্না সরকারের স্বামী সুমিত সরকারকে রড দিয়ে মারা হয় বলে অভিযোগ। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে বিষ্ণুপুর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সুলগ্নাদেবীর অভিযোগ, “বিজেপি আমায় প্রার্থী করার পর থেকেই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। এ দিন বিকেলে বাড়িতে ঢুকে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা রড দিয়ে আমার স্বামীকে মারধর করে।’’ যদিও বিষ্ণুপুরের বিদায়ী পুরপ্রধান তথা রাজ্যের বস্ত্রমন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘সুলগ্নার প্রার্থী হওয়া নিয়ে ওদের দলে গোলমাল রয়েছে। এটা আসলে তারই প্রতিফলন।”
বৃহস্পতিবার রাতে হুগলির চাঁপদানি পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডে অ্যাঙ্গাস খাঁ পুকুর এলাকায় বিজেপির ব্যানার-পতাকা লাগিয়ে রাস্তার ধারে বসে জিরিয়ে নিচ্ছিল রাহুল পটোয়া নামে দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্র। রাত ১০টা নাগাদ এলাকার ১০-১২ জন তৃণমূল কর্মী-সমর্থক তাকে ধরে ঘুষি-লাথি মারে, এমনকী বাঁশপেটাও করে বলে অভিযোগ। মারের চোটে রাহুল অজ্ঞান হয়ে যায়। পরে বিজেপির লোকজন তাকে তুলে চন্দননগর হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে শুয়ে রাহুল বলে, ‘‘বিজেপি করা যাবে না বলে তৃণমূলের ছেলেরা আমায় হুমকি দেয়। প্রচণ্ড মেরেছে।’’ রাহুলের বাবা ঝিঙ্কুরপ্রসাদ পটোয়ার প্রশ্ন, ‘‘বিরোধী দল করছে বলেই একটা বাচ্চা ছেলেকে এ ভাবে কেউ মারে?’’
জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি স্বপন পালের দাবি, ‘‘গত লোকসভা নির্বাচনে চাঁপদানিতে বিজেপি অনেক ভোটে এগিয়ে ছিল। তাই পুরসভা হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনী।’’ চাঁপদানির তৃণমূল নেতা কমলাকান্ত পাল্টা বলেন, ‘‘ওই রাতে ওদের নিজেদের তর্কবিতর্কের জেরে মারপিট বাধে। তাতেই ওই ঘটনা। আমাদের কেউ ওখানে ছিলই না।’’ পুলিশ জানায়, থানায় মারধরের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তবে শুক্রবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।
বৃহস্পতিবার রাতেই উলুবেড়িয়ার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী রওশন আরা মণ্ডলের ছেলে এবং নির্বাচনী এজেন্টকে মারধর করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। যদিও দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানিয়েছে। এই ঘটনাতেও কেউ গ্রেফতার হয়নি।