ব্লক অফিসে এক সরকারি আধিকারিককে চড় মারার অভিযোগ উঠেছে পঞ্চায়েত সমিতির এক তৃণমূল কর্মাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। ঘটনা ১ সেপ্টেম্বরের। কিন্তু অভিযোগ পেয়েও আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার পথে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত হাঁটেনি প্রশাসন। অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা তথা উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট ২ পঞ্চায়েত সমিতির জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ সৌমেন মণ্ডল অবশ্য মারধরের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।
খাদ্য সুরক্ষা আইনে সাদা ও সবুজ রঙের নতুন রেশন কার্ড তৈরি হচ্ছে রাজ্যে। সে সংক্রান্ত তথ্য জোগাড় করায় সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ নিয়ে বিরোধের জেরে সৌমেনবাবুর নেতৃত্বে তাঁর উপরে তৃণমূলের লোকজন হামলা করেছে বলে অভিযোগ বসিরহাট ২-এর সমবায় পরিদর্শক বারীন বিশ্বাসের। ঘটনার পর থেকে আতঙ্কে কাজে যাচ্ছেন না বারীনবাবু। প্রশাসন সূত্রের খবর, তাঁর অনুপস্থিতিতে তথ্য সংগ্রহের কাজ ব্যাহত হচ্ছে।
সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী, উপভোক্তাদের তথ্য সংগ্রহের কাজ করবেন সিভিক ভলান্টিয়ারেরা। ব্লক প্রশাসন ছাড়া, পুলিশ, সমবায় দফতর এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে কাজটা হওয়ার কথা। বসিরহাট ২ ব্লকে ২৫ হাজার উপভোক্তার সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে ১০১ জন সিভিক ভলান্টিয়ারের তালিকা অগস্টের শেষ দিকে ব্লকে পাঠায় বসিরহাট থানা। প্রশাসন সূত্রের দাবি, সে সময় সৌমেনবাবু থানার অনুমোদন ছাড়াই ভলান্টিয়ারদের একটি নতুন তালিকা ব্লকে জমা দেন। ফলে, ঝামেলা বাধে। ১ সেপ্টেম্বর বৈঠক করে সে সমস্যা মেটান বিডিও। কোন ভলান্টিয়ার কোথায় যাবেন, তা-ও ঠিক করা হয়।
ব্যাপারটার দায়িত্বে ছিলেন বারীনবাবু। জানান, নির্দিষ্ট কিছু ভলান্টিয়ার কোন এলাকায় যাবেন, তা নিয়েও মত প্রকাশ করেন সৌমেনবাবু। বারীনবাবুর কথায়, ‘‘বলেছিলাম, প্রশাসন ছক মেনে কাজ করে। সে ছক ঘেঁটে গেলে সমস্যা হবে। প্রয়োজনে বিডিও-র সঙ্গে ফের আলোচনা করা হোক। উনি তা মানতে চাননি।’’
অভিযোগ, এর পরেই চড়াও হয় তৃণমূল। বারীনবাবুর কথায়, ‘‘সৌমেনবাবু বলেন, ‘আমাদের সরকার, যে ভাবে তালিকা দেব সে ভাবেই কাজ করতে হবে’। ওঁর এবং ওঁর সঙ্গীদের হাতে মার খেয়ে পড়ে যাই।’’ ব্লক অফিস সূত্রের খবর, অন্যরা বারীনবাবুকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে তাঁদেরও গালিগালাজ করা হয়।
হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সৌমেনবাবু। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বামপন্থী ওই অফিসার আমাদের কথা শুনতে চান না। তাই ওঁর সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়েছে, মারধর করা হয়নি।’’ তাঁর দাবি, প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রাখার জন্যই ভলান্টিয়ারদের আলাদা তালিকা তৈরি করেছেন বা তাঁরা কোন এলাকায় তথ্য সংগ্রহে যাবেন, সে ব্যাপারে মত দিয়েছেন।
অফিসে ঢুকে আধিকারিককে মারধরের এই অভিযোগ পুলিশের কাছে এখনও পৌঁছল না কেন? বিডিও বৈদ্যনাথ হেমব্রম জানান, বিষয়টি তিনি উপরমহলে জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy