ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়ায় (এসআইআর) মঙ্গলবার থেকে বাড়ি-বাড়ি ‘এনুমারেশন ফর্ম’ বা গণনাপত্র বিলি শুরু করেছেন বুথ লেভেল অফিসার বা বিএলও-রা। নির্বাচন কমিশন নিযুক্ত এই কর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় রেখেই কাজ করার কথা রাজনৈতিক দলগুলির তরফে নিযুক্ত বুথ লেভেল এজেন্ট বা বিএলএ-দের। বিক্ষিপ্ত ভাবে হলেও যুযুধান দুই রাজনৈতিক দলের বিএলএ-দের সে নিয়ম মেনে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে দেখা গেল ফর্ম বিলির প্রথম দিনে।
পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম— দু’জেলার দু’জায়গায় সমন্বয়ের এই ছবি দেখা গিয়েছে এ দিন। মেদিনীপুর শহরের বার্জটাউনে ২৮৫ নম্বর বুথের বিএলও শিবশঙ্কর দত্ত যখন ভোটারদের বাড়ি-বাড়ি যাচ্ছেন, তখন তাঁর ছায়াসঙ্গী ছিলেন তৃণমূলের বিএলএ কৌশিক কানুনগো ও বিজেপির বিএলএ গীতিকা দাস। তাঁরা এসআইআরের কাজ সেরেছেন মিলেমিশে। কৌশিক বলছিলেন, ‘‘বিজেপির এক জনও ছিলেন। কোনও সমস্যা হয়নি।’’ গীতিকাও বলেন, ‘‘সমস্যা কিছু হয়নি।’’ বিএলও শিবশঙ্কর মানছেন, ‘ওঁরা দু’জনেই খুব সহযোগিতা করেছেন। আশা করি, আগামী দিনেও সহযোগিতা পাব।’’ রাজ্যে শাসক-বিরোধী দুই দলের প্রতিনিধিদের এমন সৌজন্যে খুশি স্থানীয়েরাও। বার্জটাউনের প্রবীণ বাসিন্দা রঞ্জিত রায়ের মতে, ‘‘সর্বত্র এমন সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ থাকলেই ভাল।’’
তৃণমূল ও বিজেপির বিএলএ-দের মিলেমিশে কাজ করতে দেখা গিয়েছে ঝাড়গ্রামেও। বিনপুর-১ ব্লকের কপাটকাটা এলাকায় দুই দলের বিএলএ কাজের ফাঁকে খোশমেজাজে গল্পও করেছেন। বিজেপির বিএলএ-২ প্রেমচাঁদ সরেন বলেন, ‘‘রাজনীতি করলে হবে না। এখানে মানুষের সুবিধা দেখতে হবে।’’ আর তৃণমূলের বিএলএ-২ সত্য মণ্ডলের কথায়, ‘‘আমাদের লক্ষ্য, যাতে কেউ বাদ না পড়েন। এখানে বিজেপি-তৃণমূল কোনও ব্যাপার নেই।’’ তাঁরা কোনও ভাবে অশান্তি চান না, দাবি ঝাড়গ্রাম জেলা বিজেপির সভাপতি তুফান মাহাতোর। আর জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি প্রসূন ষড়ঙ্গীর মতে, ‘‘বাংলার মানুষ এই বাতাবরণই দেখতে চান।’’
তবে উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জের কালীতলা অঞ্চলে এ দিন বিকেলে বিএলএ হিসাবে যাওয়া এক বিজেপি কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের একাংশের বিরুদ্ধে। অভিযোগ মানেননি হিঙ্গলগঞ্জের বিধায়ক দেবেশ মণ্ডল। বসিরহাট পুলিশ-জেলার সুপার হোসেন মেহেদি রহমান জানান, পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)