‘মাত্রাতিরিক্ত কাজের চাপে’র প্রতিবাদে এ বার রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও)-এর দফতরে বিক্ষোভে বিএলও-দের একাংশ। ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর)-পর্বের বুথভিত্তিক কাজের সঙ্গে যুক্ত বুথস্তরের আধিকারিকদের সংগঠনের প্রতিনিধিরা। সোমবার সিইও দফতরে তাঁদের ধর্না-বিক্ষোভ ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল। বিএলও অধিকার রক্ষা সমিতি নামে একটি সংগঠনের সদস্যেরা বিক্ষোভে শামিল হয়েছিলেন বলে সূত্রের খবর। তবে অভিযোগ, বিএলও নন এমনও অনেকে ছিলেন বিক্ষোভকারীদের দলে।
বিক্ষোভকারী বিএলও-রা রাজ্যের সিইও মনোজ আগরওয়ালের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু অ্যাপয়েন্টমেন্ট না থাকায় দেখা করতে রাজি হননি সিইও। তাঁদের সঙ্গে দেখা করেন অতিরিক্ত সিইও। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে দুপুর থেকে সিইও-র ঘরের বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। অশান্তির ইঙ্গিত পেয়ে ঘটনাস্থলে কলকাতা পুলিশের ডিসি (সেন্ট্রাল)-এর নেতৃত্বে বাহিনী পৌঁছোয়। বিএলও অধিকার রক্ষা সমিতির সদস্যেরা বিক্ষোভ তুলতে রাজি না-হওয়ায় টেনেহিঁচড়ে তাঁদের সরানো হয়। প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর-এর কাজ স্থগিত রাখার দাবি জানিয়ে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে সম্প্রতি চিঠি লিখেছেন। তাঁর অভিযোগ, বিএলও-দের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ এবং সহায়তা দেওয়া হয়নি।
যদিও কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিহারের পরে এখন পশ্চিমবঙ্গ-সহ ১২টি রাজ্যে(৩টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল-সহ) এসআইআর-এর কাজ চলছে। ৫ লক্ষ ৩২ হাজারের বেশি বিএলও কাজ করছেন। পশ্চিমবঙ্গে বিএলও-দের উপরে বাড়তি কাজের চাপ নেই বলে কমিশনের দাবি। প্রত্যেক বিএলও-র উপরে গড়পড়তা ২৫০টি পরিবার এবং ৯০০ থেকে ১,০০০ জন ভোটারের দায়িত্ব রয়েছে। এই ভোটারদের ফর্ম বিলি, তা জমা নিয়ে ফর্ম ‘ডিজিটাইজ়ড’ করার জন্য ৪ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত এক মাসের সময় রয়েছে। তবে কোনও বিএলও-র উপরে রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক চাপ তৈরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ এলে জেলা নির্বাচনী আধিকারিক তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। কমিশনের পরিসংখ্যান বলছে, পশ্চিমবঙ্গে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত ৭ কোটি ৬৬ লক্ষ ৩৭ হাজার ৫২৯ জন ভোটার ছিলেন। মোট ৮০,৬৮১ জন বিএলও নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁদের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলির প্রায় দেড় লক্ষ বিএলএ বা এজেন্ট কাজ করছেন। ৭ কোটি ৬৪ লক্ষের বেশি ভোটারকে ফর্ম বিলি করা হয়ে গিয়েছে। প্রায় আড়াই কোটি ফর্ম ‘ডিজিটাইজ়ড’ হয়ে গিয়েছে।