Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
নীল তিমির আতঙ্ক এ বার বসিরহাটে

খপ্পরে পড়ল স্কুল ছাত্রী

ফের নীল তিমির খপ্পরে পড়েছে রাজ্যের আর এক স্কুল পড়ুয়া। ব্লেড দিয়ে নিজের বাঁ হাত চিরে ইংরেজিতে ‘বি ডব্লু’ও লিখেছে সে। শেষমেশ বাবা-মাকে খুনের হুমকিতে ভয় পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ায় শনিবার রাতে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে বসিরহাটের একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বসিরহাট শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:৩৭
Share: Save:

গোপালনগরের পরে এ বার বসিরহাট।

ফের নীল তিমির খপ্পরে পড়েছে রাজ্যের আর এক স্কুল পড়ুয়া। ব্লেড দিয়ে নিজের বাঁ হাত চিরে ইংরেজিতে ‘বি ডব্লু’ও লিখেছে সে। শেষমেশ বাবা-মাকে খুনের হুমকিতে ভয় পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ায় শনিবার রাতে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে বসিরহাটের একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে।

মারণ-খেলা ‘ব্লু হোয়েল’ নিয়ে গোটা বিশ্ব এখন আতঙ্কিত। মূলত কমবয়সীরাই এই অনলাইন গেমের শিকার। প্রথমে তাদের নানা ভাবে কঠিন পরীক্ষায় ফেলা এবং শেষমেশ আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয় এই খেলা। কিছুদিন আগেই উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগরের কচুয়ামোড়ার বাসিন্দা, দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্র ওই খেলার শিকার হয়েছিল। হাত চিরে সে তিমির ছবি এঁকেছিল। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। তার পরে বসিরহাটেরই ছোট জিরাফপুরে অন্য একটি অনলাইন গেম খেলতে গিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিলেন এক যুবক। অনলাইনে প্রাণঘাতী খেলার বিরুদ্ধে জেলার পুলিশ প্রশাসন বেশ কিছুদিন ধরেই সচেতনতা-প্রচার চালাচ্ছে। গ্রামবাসীদের তথ্যচিত্র দেখানো হচ্ছে। তবু, এখনও কেউ কেউ যে মারণ-খেলার নেশায় পড়ছে, বসিরহাটের ঘটনায় তা ফের সামনে এল।

বসিরহাটের ওই স্কুলের অধ্যক্ষ স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ওর হাতে ‘বি ডব্লু’ দেখে শুক্রবারই এক সহপাঠী সন্দেহ করেছিল। স্কুলের পক্ষ থেকে ছাত্রীটিকে ‘ব্লু হোয়েল’ খেলতে কড়া ভাবে নিষেধ করে দেওয়া হয়। শনিবার স্কুলে এসে ও অসুস্থ হয়ে পড়ায় বসিরহাট হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। স্বপনবাবু বলেন, ‘‘মেয়েটি স্বীকার করেছে, আত্মীয়ের দেওয়া ট্যাবে ও গেমটি খেলছিল। দ্বিতীয় পর্যায়ে পৌঁছেছিল। ওর বাবা-মাকে খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছে দেখে ও আতঙ্কে ভুগছিল।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বসিরহাটের ওই ছাত্রীটির পৈতৃক বাড়ি বাদুড়িয়ার মদিনাতলা গ্রামে। তার বাবা-মা কর্মসূত্রে মুম্বইয়ে থাকেন। গত মার্চ মাসে মুম্বই থেকে এসেই বসিরহাটের ওই স্কুলে ভর্তি হয় মেয়েটি। স্কুলেরই হস্টেলে থাকে। এক আত্মীয় তার দেখভাল করেন। ওই স্কুলে এবং হস্টেলে ছাত্রছাত্রীদের মোবাইল বা ট্যাব ব্যবহার নিষিদ্ধ।

তা হলে ছাত্রীটি ট্যাব পেল কী ভাবে?

বসিরহাট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছাত্রীটির দাবি, ‘‘এক আত্মীয়ের দেওয়া ট্যাব লুকিয়ে ব্যবহার করতাম। গেমের প্রথম পর্যায়ে অ্যাডমিনের নির্দেশমতো বন্ধুদের গালিগালাজ করেছি। বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় পর্যায়ে হাত কেটে ‘বি ডব্লু’ লিখেছি। তার পরে আর খেলতে চাইছিলাম না। কিন্তু অ্যাডমিন বাবা-মাকে খুনের হুমকি দিল। ট্যাবটি ভেঙে ফেলে দেই।’’

রবিবার সকালে পুলিশ স্কুলে আসে। খবর দেওয়া হয় মেয়েটির বাবা-মাকে। হাসপাতালে গিয়ে ওই ছাত্রীকে পুলিশকর্তারা আশ্বস্ত করেন। সোমবার স্কুলে ‘ব্লু হোয়েল’ নিয়ে স্কুলে সচেতনতা-শিবিরের আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বপনবাবু। গোটা ঘটনায় আতঙ্কিত ছাত্রীটির আত্মীয়ও। এ নিয়ে আরও সচেতনতা বৃদ্ধির কথা বলছেন তিনিও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE