Advertisement
২২ মার্চ ২০২৩
Book House

বিকেল হলেই দে ছুট ‘বই বাড়িতে’

টিভি কিংবা স্মার্টফোনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কার্টুন, ভিডিয়ো গেমে ডুবে থাকা ছোটরাই এখন বিকেল হলেই ছুটছে সেই ‘নিত্যানন্দ বই বাড়িতে’। হাতে তুলে নিচ্ছে আবোল তাবোল, ইশপের গল্প কিংবা অঙ্কের জাদু।

বইয়ের জগতে ছোটকা।  ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম

বইয়ের জগতে ছোটকা। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস
ডোমকল শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২২ ০৭:২৩
Share: Save:

চেঁচিয়ে যে তার মুখ ব্যথা, ‘রূপকথা চাই, রূপকথা’— সুনির্মল বসুর গল্পবুড়ো যেন সত্যিই বাসা বেঁধেছে মুর্শিদাবাদের ডোমকলের লক্ষ্মীনাথপুরে বাবুপাড়ার ‘বই বাড়িতে’। তেমনটাই বিশ্বাস এলাকার কচিকাঁচাদের। তাই বিকেল হলেই সেই বই বাড়িই যেন হাতছানি দিয়ে বলে, ‘ঘুম ছেড়ে আজ ওঠ তোরা, আয় রে ছুটে ছোট্টরা—’। তবে শুধু রূপকথাই নয়, সেখানে খোঁজ মেলে অরোরা বোরিয়ালিস থেকে গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের, দেশ-বিদেশের সাহিত্য-সংস্কৃতি থেকে জ্ঞানবিজ্ঞানের অতুলনীয় ভান্ডারের।

Advertisement

টিভি কিংবা স্মার্টফোনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কার্টুন, ভিডিয়ো গেমে ডুবে থাকা ছোটরাই এখন বিকেল হলেই ছুটছে সেই ‘নিত্যানন্দ বই বাড়িতে’। হাতে তুলে নিচ্ছে আবোল তাবোল, ইশপের গল্প কিংবা অঙ্কের জাদু। কেউ ‘হর্ষবর্ধনের’ কাণ্ডকারখানায় হেসেই কুটিপাটি। কেউ আবার শার্লক হোমসের সঙ্গে ডুব দিয়েছে রহস্যের সমাধানে। একদল আবার কাড়াকাড়ি শুরু করে দিয়েছে ভূতের গল্প আর রাক্ষসের গল্পের বই নিয়ে। সন্তানদের বই-প্রীতি দেখে খুশি অভিভাবকেরাও।

বিদ্যাসাগরের জন্মদিন উপলক্ষে ২৬ সেপ্টেম্বর কলকাতার সাহা ইনস্টিটিউট অফ নিউক্লিয়ার ফিজিক্সের অবসরপ্রাপ্ত গবেষক বর্ণনা পালের উদ্যোগে তাঁদের পৈতৃক ভিটেতে তৈরি হয়েছে এই গ্রন্থাগার। পুরনো বাড়ি কিছুটা সংস্কার করে নিজেদের সংগ্রহে থাকা বই ছাড়াও কিছু নতুন বই কিনে শুরু করেছেন তাঁর বাবার নামে নামাঙ্কিত গ্রন্থাগারটি। বর্ণনা দেবীর কথায়, ‘‘২০১৯ সালে কর্মজীবনে অবসর নেওয়ার পর থেকে ভাবছিলাম পৈতৃক ভিটেতে কিছু একটা করার। মা মালঞ্চরানি পালের ইচ্ছে আর আমাদের দুই বোনের বইপ্রেম থেকেই গ্রন্থাগার তৈরির এই ভাবনা।’’ বর্ণনা নিজে ছোটবেলায় যে বইগুলি পড়েছিলেন, পরবর্তী সময়ে সন্তানদের জন্য যে বই কিনেছিলেন সেগুলোও নিয়ে এসেছেন বই বাড়িতে। তাঁর বোন কলকাতার এক কলেজের শিক্ষক। সেই কলেজের গ্রন্থাগারিকের পরামর্শ নিয়ে সাজিয়েছেন বই। আর সেই বইয়ের টানেই বড়দের পাশাপাশি বই বাড়িতে হাজির হচ্ছে ছোট্ট আয়ুশী, ঐশী, পাপাই, সাত্যকেরা। স্থানীয় বাসিন্দা কল্যাণ পাল বলছেন, ‘‘পুজোর ছুটিটা যে এলাকার ছোটদের জন্য এত মজাদার হবে ভাবিনি। পছন্দ মতো বই পেলে ছোটরা এখনও যে সব ভুলে বইয়ের পাতায় মুখ গুঁজবে সেটা বুঝলাম গ্রন্থাগার শুরু হওয়ার পরে।’’

গ্রন্থাগারিক শিপ্রা পাল বলছেন, ‘‘ছোটরা এসে ভূত-প্রেত, রাক্ষস ও গোয়েন্দার গল্পের বই চাইছে বেশি। তা ছাড়া, একেবারে ছোট শিশুরাও আসছে, যারা পড়তে পারে না। তাদের আমরা নানা মজার গল্প পড়ে শোনাচ্ছি।’’ সব মিলিয়ে কার্টুন, ভিডিও গেম ছেড়ে কচিকাঁচাদের বইয়ের দিকে ঝুঁকতে দেখে খুশি লক্ষ্মীনাথপুর।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.