গণনাপত্রের তথ্য অনলাইনে তোলা নিয়ে রাজ্যের নানা প্রান্তে শনিবার বিক্ষোভ দেখান বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও)-রা। উত্তরবঙ্গে শিলিগুড়ি, দক্ষিণবঙ্গে রানাঘাটে বিএলও-দের প্রশিক্ষণের সময়ে গোলমাল হয়। রাজনৈতিক চাপানউতোরও অব্যাহত।
শিলিগুড়ির দীনবন্ধু মঞ্চে এ দিন অনলাইন পোর্টালে তথ্য তোলার প্রশিক্ষণ শিবিরে যোগ দেননি বহু বিএলও। স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। বিক্ষোভকারীদের দাবি, গণনাপত্র বিলি ও সংগ্রহের পরে অল্প সময়ের মধ্যে অনলাইনে তথ্য তোলা তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাঁদের অভিযোগ, জোর করে কাজ করানো হচ্ছে। অনেকে অসুস্থ হচ্ছেন। নদিয়ার রানাঘাট-২ ব্লক অফিসে বিএলও-দের বিশেষ প্রশিক্ষণের সময়েও সমস্যা হয়। বিএলও-দের একাংশের দাবি, কম সময়ে এসআইআর ফর্ম জমা নেওয়া ও সে তথ্য মোবাইলের মাধ্যমে ‘আপলোড’ করা তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়। অন্য দিকে, বিএলও-দের আর এক অংশের দাবি, বিক্ষুব্ধেরা তাঁদের কাজে বাধা দিচ্ছেন। প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
দিন দুয়েক আগে পূর্ব বর্ধমানের একাধিক জায়গায় প্রশাসনিক বৈঠকে বিএলও-দের একাংশ বাড়তি কাজ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কেউ কেউ কেঁদেও ফেলেন। প্রশাসন সূত্রের খবর, ক্ষোভ সামলাতে পূর্ব বর্ধমানের প্রতি ব্লকে ‘ডেটা এন্ট্রি অপারেটর’ এবং বাংলা সহায়তা কেন্দ্রের কর্মীদের নিয়ে দল গড়া হচ্ছে। তাঁরা বিএলও-দের সাহায্য করবেন। জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কাছে বিএলও-দের কাজের সময়সীমা বাড়ানোর লিখিত আর্জি জানিয়েছে হুগলির নাগরিক সংগঠন ‘অল বেঙ্গল সিটিজেনস ফোরাম’।
চলছে রাজনৈতিক তরজাও। হুগলির পোলবায় রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, ‘‘বিহারে এক হাজার ডেটা-এন্ট্রি অপারেটর নেওয়া হয়েছিল চার মাসের জন্য। আর এখানে অনেক দিন আগে নির্বাচন কমিশন প্রস্তাব পাঠালেও, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে অর্থ দফতর তার অনুমোদন দেয়নি। সে জন্য বিএলও-রা অসুবিধায় পড়ছেন।’’ শিলিগুড়িতে বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের অভিযোগ, ‘‘বিএলও-দের ধমকানো হচ্ছে। তাঁরা প্রাণভয়ে রয়েছেন।’’ তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ পাল্টা বলেন, “২০০২-এ প্রায় আড়াই বছর ধরে এসআইআর হয়। এখন সেটা দু’মাসে করতে হবে বলছে। অথচ, বিএলও-দের জন্য পরিকাঠামো দেয়নি কমিশন। বিজেপি ‘শাস্তি দেব’ বলে বিএলও-দের উপরে চাপ তৈরি করছে।” যদিও কমিশন সূত্রের খবর, এর আগেও এসআইআর কয়েক মাসেই হয়েছিল।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)