ধুন্ধুমার: বনগাঁ পুরভবনের সামনে লড়াই দু’পক্ষের। মঙ্গলবার। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
১০ জন কাউন্সিলরকে হাজির করে তৃণমূলের দাবি, আস্থাভোটে জয়ী তারা। আধঘণ্টা পরে ১১ জনকে নিয়ে বিজেপির পাল্টা দাবি, পুরসভা তাদের হাতেই।
বনগাঁ পুরসভায় আস্থাভোট ঘিরে এমনই ধোঁয়াশা তৈরি হল মঙ্গলবার। প্রশাসনের কাছেও স্পষ্ট উত্তর মেলেনি। পুরসভার এগজিকিউটিভ অফিসার গৌরাঙ্গ বিশ্বাসের বক্তব্য, ‘‘রিপোর্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেব।’’ উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
ভোটাভুটি ঘিরে এ দিন পুরভবনের ৫০০ মিটারের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। র্যাফ, কমব্যাট ফোর্স, পুলিশে ছয়লাপ ছিল পুরভবন চত্বর। তৈরি ছিল জলকামান, কাঁদানে গ্যাস। এক সময়ে বিজেপির সঙ্গে ধস্তাধস্তি বাধে পুলিশ-কমব্যাট ফোর্সের। ইট ছোড়া হয় পুলিশকে লক্ষ্য করে। বোমাও পড়ে। পাল্টা ‘স্টান গ্রেনেড’ চালায় পুলিশ। কিছু দোকানে ভাঙচুর হয়। জখম হন বিজেপির দুই কর্মী।
সম্প্রতি তৃণমূল পরিচালিত ২২ আসনের এই পুরসভায় দু’দফায় ১৪ জন কাউন্সিলর অনাস্থা প্রস্তাব আনেন। পরে ১২ জন দিল্লিতে গিয়ে যোগ দেন বিজেপিতে। বিজেপির তিন কাউন্সিলর ভোটাভুটির জন্য বৈঠক ডাকেন। মঙ্গলবার বেলা ৩টেয় সময় ঠিক করা হয়। ইতিমধ্যে বিজেপিতে যোগ দেওয়া কাউন্সিলর শম্পা মোহান্ত ১২ জুলাই থানায় লিখিত ভাবে জানান, বিজেপিতে যোগ দেওয়া দুই কাউন্সিলর হিমাদ্রি মণ্ডল ও কার্তিক মণ্ডল তাঁকে অপহরণ করেছিলেন। হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেন ওই দু’জন। মঙ্গলবার দুপুরে আদালত জানায়, আগামী সাত দিন তাদের গ্রেফতার করা যাবে না।
এই পরিস্থিতিতেই ছিল ভোটাভুটি। বেলা ২টো ১০ মিনিট নাগাদ কংগ্রেসের একজন-সহ ন’জনকে নিয়ে পুরপ্রধান আসেন। বেলা ৩টে ২৫ মিনিটে তাঁর ঘোষণা, ‘‘১০ জন কাউন্সিলর আস্থা জানিয়েছেন। সিদ্ধান্তে এগজিকিউটিভ অফিসার সই করেছেন। জয়ী আমরা।’’
বেলা ২টো ৪০ নাগাদ কার্তিক-হিমাদ্রি সহ বিজেপিতে যোগ দেওয়া ১১ জন কাউন্সিলর হাজির হন পুরভবনে। (সিপিএমের একমাত্র কাউন্সিলর আসেননি ভোটাভুটিতে) তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ। বিজেপি জানায়, কার্তিক-হিমাদ্রির গ্রেফতারির উপরে স্থগিতাদেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। হোয়াটসঅ্যাপে সেই নির্দেশ দেখানো হয়। বনগাঁ থানায় ই-মেলে পাঠানো হয় নির্দেশের কপিও। বিজেপির অভিযোগ, পুলিশ তাঁদের ১১ জনকে একটি ঘরে তালাবন্দি করে রাখে।
যখন তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়, তখন সাড়ে ৩টে বেজে গিয়েছে। পরে এগজিকিউটিভ অফিসারের ঘরে বৈঠকে বসেন তাঁরা। আধ ঘণ্টা পরে তাঁরা জানান, ভোটাভুটিতে জয়ী বিজেপি। জেলার নেতা দেবদাস মণ্ডল বলেন, ‘‘পুলিশ আমাদের কাউন্সিলরদের আটকে রাখে। তবে ভোটাভুটিতে আমরাই জয়ী হয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy